
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে নারী প্রার্থীর উপস্থিতি খুবই সীমিত। মোট প্রার্থীর মাত্র ২৫ শতাংশই ছাত্রী, ভিপিসহ চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই। অথচ নির্বাচনে মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেকই ছাত্রী।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মোট ভোটার ১১ হাজার ৯শ ১৯ জন, এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১শ ২ এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৮শ ১৭। মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ৭৪০টি, যার মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে ২৭৩টি এবং হল সংসদের ৩১৫টি পদের বিপরীতে ৪৬৭টি মনোনয়নপত্র।
সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই। সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক এবং পরিবহন সম্পাদক—এ চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদেও কোনো ছাত্রী মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি। নাট্য সম্পাদক, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা ও গবেষণা, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পাদক পদে এক বা একাধিক ছাত্রী প্রার্থী রয়েছেন।
হল সংসদে ছাত্রী প্রার্থী তুলনামূলকভাবে কম। মোট ২১টি হলে ৩১৫টি পদের বিপরীতে ছাত্রী প্রার্থী মাত্র ১২৮ জন। অনেক হলে পদের তুলনায় প্রার্থী সংখ্যা কম হওয়ায় কিছু পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এবারের নির্বাচনে কোনো প্যানেলেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নারী প্রার্থী দেখা যায়নি। ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও সাংস্কৃতিক জোটভুক্ত প্যানেলগুলোতেও ছাত্রীদের বেশির ভাগই সংরক্ষিত পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মনে করেন, রাজনৈতিক অনাগ্রহ, নিরাপত্তাহীনতা, সাইবার বুলিং ও হয়রানির কারণে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ কম। নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, ‘ছাত্রীরা প্রতিবাদী হলেও রাজনৈতিক অংশগ্রহণে পিছিয়ে। তাদের মনে হয় রাজনীতি মানে নির্দিষ্ট দলের রাজনীতি, আর নিরাপত্তাহীনতার কারণে দ্বিধা তৈরি হয়।’