
গত ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করা ও শ্রদ্ধা জানানোর কারণে বয়কটের শিকার হয়েছেন দেশের অনেক জনপ্রিয় শিল্পী, গায়ক, সংবাদকর্মী, অভিনেতা, মডেলসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ। তাদেরকে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে আজ (শনিবার) বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে তাদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচির আয়োজন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ আয়োজন সংবলিত একটি পোস্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে লেখা, ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বয়কট করুন’; ‘শহীদের রক্তকে তাচ্ছিল্য করে গণহত্যার পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করে এদের চিনে রাখুন’; ‘ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আজ বিকেল ৫.০০ টায় কালচারাল ফ্যাসিস্টদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি হবে’।
এছাড়া, পোস্টারে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দেওয়া ব্যক্তিদের নামসহ ছবি যুক্ত করা হয়। এতে গায়ক লিঙ্কন (আর্টসেল), রাহুল আনন্দ, সিয়াম (এসপি ক্রিয়েশন), জাহের আলভি, অরুণা বিশ্বাস, সুমন আনোয়ার, নাজিফা তুষি, সাজু খাদেম, মুমতাহিনা টয়া, সুনেরাহ, ফারাবি হাফিজ, পিয়া জান্নাতুল, আরস খান, খাইরুল বাসার, ইরফান সাজ্জাদ, সাকিব খান, স্বাধীন, পারসা মেহেজাবিন, কচি খন্দকার এবং মেহের আফরোজ শাওনের নাম দেখা যায়। এর বাইরেও আরও অনেককে কালচারাল ফ্যাসিস্ট আখ্যায়িত করে বয়কটের ডাক দিচ্ছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
হামিদ আশরাফ নামে একজন ফেসবুকে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচির পোস্টারটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, এগুলোর বাইরেও আরও অনেক কালচারাল ফ্যাসিস্ট আছে, যারা ২৪ সালের আগস্ট ১, ২ তারিখও মুজিববাদ চাটতেছিল। এই মজুগান্ডুগুলা চালাক আছে, এখন ভোল পাল্টিয়েছে। মুজিব নিয়া এরা এখন কোনো ওপেন ইলিজি করে না। আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টেও এক দুইটা আছে। এরা এখন ছাত্র নেতৃত্বের কোন ভুল, দোষ পাইলে, ইন্টেরিমের কোন ভুল পাইলে, পুরো মজুগান্ডু চেতনা নিয়ে এটাকে আসে। এই সালারা ছুপা জুলাই বাটপার।
ফারজিনা মালেক নামে একজন ফেসবুকে লেখেন, এক হাসিনা পালায়, লক্ষ হাসিনা লাফায়। কাউরে কিছু কইতে দিয়েন না। কইলেই লেবেল দিয়া দিবেন- আওয়ামী দোসর, কালচারাল ফ্যাসিস্ট, শাহবাগী, ভারতের দালাল।
অন্যদিকে, এমন আয়োজনের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অভিনেতা খাইরুল বাশার ফেসবুকে লেখেন, আজ নাকি আমার ক্যাম্পাসে আমাদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ হবে? এই চোরের রাষ্ট্রে এই বাটপারের রাষ্ট্রে আমি কোন অপরাধে? আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলেছি যুগ ধরে তাই? শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছি তাই? ওকে, আমার ভাইয়েরা; আমার ক্যাম্পাসের প্রিয় অনুজ, আমার ছবিটা বড় করে প্রিন্ট করো এবং সবচেয়ে পচা জুতাটা নিক্ষেপ করো। আমি হাসি মুখে গ্রহণ করছি। কারণ আমি বুঝেছি তোমরা রাজনৈতিক হয়েছো, তোমরা তোমাদের ইগো এবং তোমাদের আলাদা লক্ষ্যে নেমেছো! সেখানে মানুষ, সেখানে সাধারণের আবেগ অভিভূতি তোমাদের বিবেচনার বিষয় না! তোমরা কেবল ক্ষমতার না এবং ক্ষমতার দাস না, তোমরা নিজের, দেশের এবং দায়িত্বের; এ বিশ্বাস আমার ভাঙতে যাচ্ছে, ভাঙুক! আমি এমন কী আর লোক? ভালোবাসা এবং শুভকামনা তোমাদের জন্য তোমরা এদেশের প্রকৃতি, ঐতিহ্য এবং মানুষের হও এই কামনা