Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের তিন শিক্ষার্থীর এম.এস.এস ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল দীর্ঘ ১৭ বছর পর ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান পরীক্ষার ফল প্রকাশের অনুমোদন দেওয়ায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর চিঠি দেন। সে প্রেক্ষিতে গত ১১ ডিসেম্বর স্থগিত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। 

প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব ২য়, মো. মুসাব্বির ফাহদ রিয়াজী ৮ম ও লিটন রায় ১৮তম স্থান অধিকার করেছেন।

এর আগে, গত ৪ ডিসেম্বর 'বিধিমোতাবেক ফল প্রকাশে আইনগত কোনো বাধা নেই' উল্লেখ করে উপাচার্য বরাবর একটি চিঠি পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরী।   

সেখানে বলা হয়, '২০০৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এম.এস.এস ফাইনাল-২০০৬ পরীক্ষায় এই তিন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তবে তাদের উপস্থিতি ৬০ শতাংশের নিচে ছিল। নন-কলেজিয়েট ফি জমা দেওয়ার শর্তে পরীক্ষার ফরম পূরণ করে, বিশেষ বিবেচনায় এই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ার জন্য বিভাগের চেয়ারম্যান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে একটি পত্র পাঠান। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করে। তবে ৬০ শতাংশের নীচে উপস্থিতি থাকার কারণে বিষয়টি ডিন'স কমিটিতে অনুমোদনের প্রয়োজন উল্লেখ করে বিভাগের চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের ফল স্থগিত রাখা হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।' 

চিঠিতে আরও বলা হয়, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব নজির অনুযায়ী, 'যদি কোনো শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ৬০ শতাংশের নিচে থাকে, তবে ডিন'স কমিটি ৩ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান সাপেক্ষে তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়। সে মোতাবেক, ২০০৯ সালের ১৮ তারিখ ডিন'স কমিটির ৫৫ নম্বর ক্রমিকে এই বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। সভায় ওই তিন শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা আলোচনা করা হয়।

তবে অভিযোগ রয়েছে, ডিন'স কমিটি আলোচ্য বিষয়টির কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে, অস্বাভাবিকভাবে কম উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন, তা খতিয়ে দেখতে তৎকালীন প্রো-উপাচার্য (আহ্বায়ক), আইন উপদেষ্টা, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (সদস্য সচিব) নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

পরবর্তীতে, তদন্ত কমিটি ২০০৯ সালের ২ এপ্রিল পরীক্ষার নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে প্রো-উপাচার্য বরাবর সভা আয়োজনের জন্য অনুমতি চেয়ে একটি চিঠি পাঠায়। তবে, তৎকালীন প্রো-উপাচার্য (অধ্যাপক হারুন) ৭ মাস পর, ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর সভার জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করেন। তবে সভায় এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি । পরবর্তীতে সভার তারিখ বারবার পিছিয়ে দেওয়া হয় এবং তদন্তের ফলাফল নিয়ে পরবর্তী কোনো রিপোর্ট অফিসে জমা হয়নি।'

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, 'এই শিক্ষার্থীরা বিগত ১৭ বছর ধরে ফল প্রকাশের জন্য বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকেও কয়েকবার ফল প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং তদন্ত কমিটির নামে কালক্ষেপণ করে ফল প্রকাশে পদে পদে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে।'