বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ১০৮তম সিন্ডিকেটে ক্যাম্পাসে সকল ধরনের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু তা সত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে শোডাউন করেছে ছাত্রদল। রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রদল এভাবে প্রকাশ্যে শোডাউন প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মনে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গতকাল রবিবার (৫ জানুয়ারি) ছাত্রদল বেরোবি শাখা প্রকাশ্যে শোডাউন দিয়েছে। আমাদের ভাইদের রক্ত এখনো রাস্তায় লেগে আছে। ক্যাম্পাসে লেজুরবৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও আমরা প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ দেখিনি। প্রকাশ্যে কার্যক্রম চালাচ্ছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন কিন্তু প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে আছে। প্রশাসনের এমন নীরবতা শহিদের রক্তের সাথে বেঈমানী বলে আমরা মনে করি। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব, রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে কোন ছাত্র সংগঠন যেন কার্যক্রম চালাতে না পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ছাত্রসংসদ নির্বাচনের পক্ষে কিন্তু অজানা কারণেই একটি দলের ছাত্র সংগঠন নির্বাচনের বিরোধীতা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষক ও প্রক্টরের পরোক্ষ মদদে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। ছাত্রদলের এক নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস নিয়ে কম্বল বিতরণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, গতকাল রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯তম সিন্ডিকেট সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দেওয়ার কথা থাকলেও অজানা কারণেই সেটা ঘোষণা করেনি প্রশাসন। তবে প্রশাসন জানিয়েছে দ্রুত ছাত্রসংসদ নির্বাচন দেয়া হবে। এর আগে ক্যাম্পাসে কোন নির্বাচন (শিক্ষক, কর্মকর্ত ও কর্মচারি) হবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক আল আমিন ইসলাম বলেন, আমরা শোডাউন দেইনি। উপাচার্য মহোদয়ের সাথে আজকের বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎ শেষে ক্যাম্পাস থেকে বেড় হওয়ার সময়ের ভিডিও এটি। কেউ ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে চাইলে তা প্রতিরোধের জন্য ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রস্তুত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আল্টিমেটামকারীদের সাথে কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী নেই। কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসে সমন্বয়কদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমানের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে এমন কিছু হতে আমি দেখিনি। এ বিষয়ে কিছু জানি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. অধ্যাপক ড. শওকত আলী বলেন, ক্যাম্পাসে যখন আসবে, সকল শিক্ষার্থীই আমাদের। কিন্তু দলীয় কোন ব্যানারে কোন সংগঠন কার্যক্রম করতে পারবেনা এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। আমরা একটা কমিটি করেছ, এব্যাপারে কী করা যায় বা করনীয় কী সেটা তারা জানাবেন। আমরা খতিয়ে দেখেছি যেসকল ছাত্রসংগঠন কাজ করছে তাদের কারো ছাত্রত্ব নেই, এটা আরো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের জন্য। গতকালকের ঘটনাটি আমি শুনেছি, প্রক্টরকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।