কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার উত্তরসহ প্রশ্ন এক ছাত্রীর কাছে ফাঁস করার অভিযোগ উঠেছে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম. আনিছুল ইসলামের (কাজী আনিছ) বিরুদ্ধে।
একটি বেনামী মেইলে আসা তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য ওই শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিভাগের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি বেনামী মেইল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে এই মেইল করা হয়।
মেইলে উল্লেখ করা হয়, ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৫ ব্যাচের সেমিস্টার পরীক্ষা চলছে। এই সেমিস্টারের প্রতিটি কোর্সের প্রশ্নফাঁস হয়েছে। এই কোর্স না শুধু প্রতিটি কোর্সের পরীক্ষারই প্রশ্নফাঁস হয়েছে। বিভাগের শিক্ষক কাজী আনিছ এক ছাত্রী যার আইডি ১২১১৮০২০ তাকে এগুলো দিয়েছেন।’
মেইলের সঙ্গে গত পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর সংবলিত কিছু পিডিএফ সংযোজন করা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি পিডিএফের মেটাডাটা উল্লেখ করা হয়। মেটাডেটা বিশ্লেষণে শিক্ষকের কাছ থেকে সরবরাহ করা পিডিএফ ফাইল তৈরির ডিভাইস, তারিখ উল্লেখ রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’
বিভাগের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছি। তবে এই বিষয়টি যেহেতু বেনামী মেইল থেকে আসা, তাই আমরা সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না যদি শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ না দেয়।’
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও প্রভাষক জাকিয়া জাহান মুক্তা বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব। অভিযোগটি ভিত্তিহীন নাকি সত্য, তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে জাকিয়া জাহান মুক্তা বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর আমরা শিক্ষকরা মিলে এই ব্যাচের পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে এ সংক্রান্ত একটি মেইল পেয়েছি। আমরা ওই বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। আগে বিভাগের একাডেমিক কমিটি বিষয়টি দেখবে। তারপর এই বিষয়ে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। বিভাগ বা শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।’
