একটি নাম, একটি কণ্ঠ—যা সাহস ও প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে। সেই শরিফ ওসমান হাদি আর নেই। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আন্দোলনের সম্মুখযোদ্ধা হাদি বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের পাশাপাশি শোবিজ অঙ্গনেও।
হাদির মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন পোস্টে শোক ও প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন দেশের জনপ্রিয় তারকারা।
ওসমান হাদির একটি ছবি শেয়ার করে অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা লেখেন, “শহীদ ওসমান বিন হাদি আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হয়ে থাকবেন।”
হাদি ও তার শিশুপুত্রের একটি ছবি পোস্ট করে চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ লেখেন, “নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।”
হাদির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন প্রতিবেশী-সহপাঠীরাহাদির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন প্রতিবেশী-সহপাঠীরা
নির্মাতা আশফাক নিপুন লেখেন, “ওসমান হাদি, শান্তিতে ঘুমান। আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুন এবং আপনার পরিবার ও নবজাতককে শক্তি দিন। তারা আপনাকে হত্যা করতে পারে, কিন্তু আপনার শুরু করা লড়াই থামাতে পারবে না। খুনিদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
এরপর অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক লেখেন, “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। নামটা মনে রেখো—শহিদ, বীর শরীফ ওসমান হাদি।”
পরে দীর্ঘ এক পোস্টে তিনি বাকস্বাধীনতা, ভিন্নমত ও মানুষের জীবনের মূল্য নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তোলেন। তার লেখায় উঠে আসে এক গভীর অস্বস্তি ও ক্ষোভ। পোস্টের শেষে তিনি উল্লেখ করেন— শরীফ ওসমান হাদি (১৯৯৩–ইনফিনিটি)।
মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল শোক জানিয়ে লেখেন, “এটা সত্যিই খুব কষ্টের এবং মেনে নেওয়ার মতো না। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন এবং তার শোকাহত পরিবারকে, বিশেষ করে ছোট্ট শিশুটিকে ধৈর্য ও শক্তি দেন। এমন ভবিষ্যৎ চাই, যেখানে মানুষের জীবনের মূল্য সবার আগে।”
তরুণ অভিনেতা আরশ খান ক্ষমতা ও মানবজীবনের মূল্য নিয়ে লেখেন, “একটা একটা করে নিভে যাওয়া বাতিগুলো—যে যাই পরিচয় দাও—সবাই দেশের অংশ ছিল, কারও না কারও সন্তান ছিল। ক্ষমতা একদিন জিততে পারে, কিন্তু পৃথিবীটাই থেমে গেলে কী থাকবে?”
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে দ্রুত সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। টানা ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে নিভে যায় প্রতিবাদী কণ্ঠটি।