Image description
 

২৯ বছর আগে চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ২১ অক্টোবর রমনা থানায় হত্যা মামলা হয়। মামলায় সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হকসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। এই আসামিদের দেশত্যাগ ঠেকাতে ইতিমধ্যে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে তথ্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

হত্যা মামলায় প্রধান আসামি নায়কের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য ১০ আসামির মধ্যে প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইও রয়েছেন। কিন্তু কে এই আজিজ মোহাম্মদ ভাই? নামের শেষে ‘ভাই’ থাকায় অনেকেই ধরে নেন তিনি কোনো গডফাদার বা মাফিয়া ডনের সঙ্গে যুক্ত। সত্যিটা একটু ভিন্ন। আসলে ‘ভাই’ শব্দটি তার পরিবারের বংশপদবি। তার বাবার নাম মোহাম্মদ ভাই, মায়ের নাম খাদিজা মোহাম্মদ ভাই। এমনকি নারীদের নামেও ‘ভাই’ আছে।

আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পরিবার ১৯৪৭ সালে ভারতের গুজরাট থেকে পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) আসে। পরিবার পারস্য বংশোদ্ভূত এবং ‘বাহাইয়ান’ সম্প্রদায়ের। উপমহাদেশের উচ্চারণে ‘বাহাই’ পরবর্তীতে ‘ভাই’ হয়ে গেছে।

 

পরিবারের আর্থিক অবস্থান সমৃদ্ধ। পুরান ঢাকায় বসবাস শুরু করা এই পরিবার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। আজিজ মোহাম্মদ ভাই ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন, আরমানিটোলায়। তিনি নিজে ব্যবসা শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে সম্পদ বৃদ্ধি পায়। তার ব্যবসা বিস্তৃত ঢাকা, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং ও সিঙ্গাপুরে হোটেল ও রিসোর্ট পর্যন্ত। তবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণও আছে।

 

ব্যবসার পাশাপাশি ৯০-এর দশকে আজিজ মোহাম্মদ ভাই এমবি ফিল্মসের ব্যানারে চলচ্চিত্র প্রযোজনায় আসেন। তার অধীনে ৫০টির মতো চলচ্চিত্র প্রযোজিত হয়েছে। দেশের বিজ্ঞাপন জগতে গ্ল্যামার আনতেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য।

তার জীবন কিছু বিতর্কিত ঘটনার সঙ্গেও যুক্ত। এরশাদের আমলে গ্রেপ্তার হন এবং চলচ্চিত্র নায়িকাসহ বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নানা কল্পকাহিনী ছড়ায়। ১৯৯৭ সালে আলোচিত হন সালমান শাহ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে। বলা হয়, সালমান শাহ মারা যাওয়ার আগে পার্টিতে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে চুমু দেন তার স্ত্রী সামিরা হক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সালমান শাহ চড় মারেন আজিজকে। এই ঘটনা অনেকের মতে হত্যার প্রাথমিক মোটিভ।

এর দুই বছর পর চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করার ঘটনাতেও তার পরিবারের নাম আসে।

বর্তমানে আজিজ মোহাম্মদ ভাই সপরিবারে থাইল্যান্ডে বসবাস করেন এবং সেখানে থেকেই ব্যবসা পরিচালনা করেন। স্ত্রী নওরিন মোহাম্মদ ভাই দেশে এসে ব্যবসা দেখেন।