Image description

‘হুর’ নিয়ে নানান ধরণের সন্দেহ সংশয় প্রকাশ করা হয়। অশালীন তর্কেরও প্রচলন রয়েছে সমাজে। কেউ প্রশ্ন তোলেন, পুরুষদের জন্য ৭২ হুরের ব্যবস্থা থাকলেও নারীদের জন্য কোনো সংখ্যা উল্লেখ না করার অর্থ দাঁড়ায় নারীদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে। 

সত্যিই কি নারীদের প্রতি বৈষম্য  করা হয়েছে? আসুন জেনে নেওয়া যাক, পবিত্র কুরআনুল কারিম ‘হুর’ সম্পর্কে কী বলে।

পবিত্র কুরআনুল কারিমে সূরা দুখান-৫৪, সূরা তূর-২০, সূরা আর রহমান-৭২ এবং সূরা ওয়াকেয়া-২২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ‘সুন্দর চোখবিশিষ্ট হুরদের সঙ্গে তাদের (জান্নাতীদের) বিয়ে দেয়া হবে’। 

এই চারটি আয়াতের অনুবাদের অর্থ প্রায় একইরকম, কাছাকাছি। পবিত্র কুরআনে হুরের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি যে, পুরুষকে কতটি এবং নারীকে কতটি হুর দেওয়া হতে পারে এবং শুধু পুরুষদের জন্যও নির্দিষ্ট করা হয়নি কোনো সংখ্যা। 

বলা হয়েছে, জান্নাতবাসীদের জন্য আরো নানান ধরণের পুরস্কারের ব্যবস্থা রয়েছে, তন্মধ্যে বিশেষ পুরস্কার হিসেবে ‘হুর’ও রয়েছে।

এবার আসুন কুরআন কারিমের আয়াতে ‘হুর’ শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যাক। হুর শব্দটি আরবি ভাষার শব্দ। এই শব্দটি বহুবচন। শব্দটির পুংবাচক রূপ হচ্ছে ‘আহর’ এবং স্ত্রীবাচক রূপ হচ্ছে ‘হাউর’। পুরুষ এবং স্ত্রীবাচক উভয় শব্দের বহুবচন রূপ হচ্ছে ‘হুর’।অর্থ- উজ্জ্বল সাদাকালো চোখধারী। 

তাহলে বোঝা যাচ্ছে, হুরদের মধ্যে স্ত্রী-পুরুষ উভয় রয়েছে। যেমন- বোঝা যায় ‘ইনসান’ শব্দ  দ্বারা। ইনসান শব্দের অর্থ মানুষ। মানুষ বলতে আমরা নারী-পুরুষ উভয়ই বুঝি। হুরদের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয় রয়েছে, বিধায় উল্লেখ করা হয়েছে জান্নাতবাসীদের জন্য হুর রয়েছে।। 

তবে নারী কিংবা পুরুষকে কতটি হুর দেওয়া হবে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। 

কিন্তু শহিদদের পুরস্কারের বিষয়ে রাসূল সা. এর একটি হাদিস রয়েছে- তিনি বলেছেন, শহিদদের জন্য ৭০ এর অধিক হুরের ব্যবস্থা রয়েছে। 

অন্য একটি হাদিসে বলা হয়েছে, জান্নাতিরা দুজন করে আয়ত নয়না স্ত্রী পাবে। শহিদ ব্যতীত সাধারণ জান্নাতিরাও হুরদের সংস্পর্শে আসবেন কিন্তু সেটির কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা থাকবে না।

এজন্য থাকবে না যে, জান্নাত এমন একটি জায়গা যেখানে অন্যায় আবদার বলতে কিছু থাকবে না। থাকবে না কোনো অপূর্ণতা। যে যার মতো ইচ্ছা পূরুণ করে নিতে পারবে। জান্নাতীরা যদি মনে করে তাদের অসংখ্য হুরের দরকার তবে সেটাই তারা পাবে। 

জান্নাতীদের জন্য কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না। কাজেই কে কতটি হুর পাবে বা পাবে না এ প্রশ্ন উত্থাপন অবান্তর। জান্নাতের পুরস্কার অবারিত,অসীম। সেখানে নারী-পুরুষ উভয়ই সীমাহীন সুখ আস্বাদন করতে থাকবে এবং কারো প্রতি বিন্দু পরিমাণ জুলুম করা হবে না।