
ঢাকাই সিনেমার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলটির নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়েও তার নাম শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র— অপুকে দেখা গেল বিএনপির আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে!
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শোডাউন, ভোজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন চিত্রনায়ক নিরব হোসেন।
জানা যায়, নিরব ও অপু সেখানে যাচ্ছেন খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিপুল জনতা ভিড় জমায়। তাদের আমন্ত্রণ জানান খোকসা পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেন।
অনুষ্ঠানে মঞ্চে বক্তব্য রাখেন অপু বিশ্বাস। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে সাত ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমি শিল্পী, এটাই আমার পরিচয়। সেই পরিচয়েই আপনাদের ভালোবাসা পেয়েছি। আপনাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা আসলে সেই ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ।
বগুড়ার মেয়ে অপু বিশ্বাস আরও বলেন, এর আগে রাজবাড়ী এসেছিলাম, তবে খোকসায় প্রথম আসা। আমাকে এখানে আনার জন্য রিপন ভাইকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আপনাদের সেবা করতে চান, আমি চাইবো আপনারা সেই সুযোগ দেবেন।বিএনপির সমাবেশে অপু বিশ্বাসের অংশগ্রহণের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী দোসর অপু বিশ্বাস কিভাবে বিএনপির সমাবেশে যোগ দেয়-সেই প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবার্ষিকীর আয়োজক বিএনপি নেতাকর্মীদের বহিষ্কার দাবি জানিয়েছেন।
আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজিব নামের একজন লিখেছেন, অপু বিশ্বাসও এখন বিএনপির সমাবেশে! দুঃখজনক।এগুলো দেখলে খুব খারাপ লাগে।তারা কি আর লোক পায় নাই।অপু বিশ্বাসের মতো আওয়ামী সরকারের তেলবাজি করা এই নারীকে ডাকতে হবে।যারা তাকে ডাকছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। জোবায়ের হাসান সুমন লেখেন, আওয়ামী লীগের নমিনেশন চাওয়া অপু বিশ্বাসকে বিএনপির সমাবেশে যারা দাওয়াত করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করা হোক।
নাজমুল হাসান বলেন, বিএনপির লোকজন অপু বিশ্বাসকে দিয়ে সমাবেশ করায়, যে অপু বিশ্বাস হাসিনারে আইডল মানতো এবং আম্মা ডাকতো।
তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিবির চৌধুরী নামে এক নেটিজেন বলেন, আওয়ামী লীগের নমিনেশন চাওয়া এবং আওয়ামী সমর্থক অপু বিশ্বাস বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অতিথি হয় কিভাবে? বিএনপির সমাবেশে কি লোকজন কমে গেছে? সেজন্যই কি চলচ্চিত্রের নায়িকা নিয়ে সমাবেশ চাঙ্গা করেছেন?যদি চলচ্চিত্রের শিল্পী নিতেই হয় তাহলে বিএনপি সমর্থক শিল্পী কি ছিল না? বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
আলিয়া নিশাত নামে এক নারী লেখেন, শেখ হাসিনা সরকার বারবার দরকার’ বলা অপু বিশ্বাস এখন কুষ্টিয়ার বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে।এসব আওয়ামী দালালদের দাওয়াত দিয়ে যারা প্রোগ্রামে নিয়েছে, সেসব বিএনপির হাইব্রিড নেতাকে আজীবন দল থেকে বহিষ্কার করা হোক।
সাইয়্যেদা সাথী লিখেছেন, বিএনপিকে ডোবাতে এ ধরনের সস্তা বিনোদন খুবই কাজে দেবে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনী মাঠে তারকা হিসেবে নিয়মিত উপস্থিত ছিলেন অপু বিশ্বাস। সেই অপুই এবার বিএনপির অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিলেন।