Image description

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের আন্দোলনে বেশ সরব ছিলেন শোবিজ ইন্ডাস্ট্রির আলোচিত অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। প্রত্যাশা করিছলেন, এই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে বিশাল পরিবর্তন আসবে। কিন্তু সমসামকিয় কিছু ব্যাপারে এবং একদল সমালোচকদের সমালোচনায় বেশ হতাশ এ অভিনেত্রী।

 

বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, নিজ দেশের কাছে আর কোনো প্রত্যাশা রাখেন না তিনি। একইসঙ্গে ডলারের কাছে কখনো নৈতিকতা বিসর্জন দেবেন বলেও জানিয়েছেন এ তারকা।

শবনম ফারিয়া ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একটা গল্প আছে না, শীতের সকালে একজন ইমাম আর একজন চোরের? ইমাম ভাবে, কী ভালো একটা মানুষ এই ঠান্ডায় ফজরের নামাজ পড়তে এসেছে। চোর ভাবে, কী ভদ্রলোক দেখতে, দাড়ি দুড়ি রেখে আবার চুরি করে! এই গল্প থেকে আমরা কী শিখেছিলাম? যে যেমন, যার চিন্তাধারা যেমন, অন্যদেরও তাদের সেইম মনে হয়।’

তিনি লিখেছেন, ‘কিন্তু বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর সব মানুষ টাকার (ডলারও পড়তে পারেন) কাছে তাদের “এথিক্স” বিক্রি করে না। দুনিয়ার “সব মানুষের” কাছে টাকাই “সব” না। কিন্তু মানুষ নিজেস্বতায় বিশ্বাস করে। স্রোতের বিপরীতেও যায়। রিস্ক নেয়।’

জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি লিখেছেন, ‘জুন মাসে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, ইন্টারনেট চলে যাওয়ার পরপর যেসব সেলিব্রিটিদের কাছে মেট্ররেল বা বিটিভিতে আগুন দেয়ার প্রতিবাদ করার জন্য ভিডিও বানাতে বলা হয়, আমিও তাদের মধ্যে একজন। আমি প্রথমে সময় চাই, বলি ভেবে জানাব। স্বাভাবিক, সে সময় ডিরেক্ট না করার মতো সাহস যোগার করতে পারিনি। তারাও বলে সময় নেন, আপাতত এমনেই ইন্টারনেট নাই। যেহেতু হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ, তাও সিয়ামকে মেসেজ দেই- “তুমি কি কল পেয়েছ ভাই?”। সে আমাকে জানায়, পেয়েছে এবং না করেছে। আমিও তখন সাহস পাই এবং না বলে দেই।’

শবনম ফারিয়া লিখেছেন, ‘এসব কথা অযথা বলে বেড়ানোর কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। সেসময় এটাই করার কথা, না বলেছি বলে আমি বিশেষ কোনো ক্রেডিট নিতে চাইনি। যেহেতু আমি ব্যাক্তিগতভাবে রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনোভাবেই জড়িত না, অদূর ভবিষ্যতেও কোনো ইচ্ছা কিংবা পরিকল্পনা নেই। তাও যখন দেখি কেউ লেখে “এরা তো ডলার খাইছে” মার্কা কল্পনিক গল্প, হাসা ছাড়া কিছু করার থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা মন থেকে আওয়ামী লীগ ভালোবাসে। কিন্তু জুলাইতে লাল ডিপি দিয়েছিল। হয়তো জুলাইকে আমাদের সাধারণ মানুষের কাছে যেভাবে সে সময় পোট্রে করা হয়েছে, এখন বিষয়টা তেমন নেই। কিন্তু সেসময় আপনি যদি মানুষ হয়ে থাকেন, অমানুষ না হোন তাহলে আপনি কোনো মানুষকে হত‍্যা করার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারতেন না, আপনার রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা মতাদর্শ যাইহোক।’

এ অভিনেত্রী নিজ দেশের কাছে কোনো প্রত্যাশা রাখেন না জানিয়ে লিখেছেন,এই স্ট্যাটাসের মধ‍্য দিয়ে বাংলাদেশের পলিটিক্স নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়া বন্ধ করলাম। কারণ, ফাইনালি আমি বুঝে গেছি, জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত বেহায়া এবং নির্লজ্জ, আমরা কক্ষনো ভালো হব না। যত আন্দোলন হোক, সরকার পরিবর্তন হোক, যতই শান্তিতে নোবেল পাওয়া মানুষ আসুক, আমাদের কেউ দুর্নীতি এবং চুরি করা থেকে আটকাতে পারবে না। শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ যেই ক্ষমতা পাবে সেই তার অসৎ ব্যবহার করবে। আমি আর আমার নিজ দেশের কাছে আর কোনো প্রত্যাশা রাখি না।’

সবশেষ তিনি লিখেছেন, ‘পরিশেষে বলতে চাই , সত্যি সত্যি ডলার পেলে আসলে ভালোই লাগতো। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ২৫ হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার পাসপোর্টে এন্ডোরর্স করতে খুবই কষ্ট হয়েছে।’