টানা দুই বছরের প্রেম। বাধা হয়নি ৬ হাজার কিলোমিটারের পথ। বাধা হয়নি ধর্ম। মেসেঞ্জারে পরিচয়। ধীরে ধীরে প্রেম। শেষ পরিণয় বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছেন তারা। ইউক্রেনের নাগরিক অ্যান্দ্রো প্রকিপ। নাম বদলে এখন মোহাম্মদ। বিয়ে করেছেন বাংলাদেশের বৃষ্টি আক্তারকে। স্বামীর সঙ্গে নাম মিলিয়ে বৃষ্টির নাম এখন বৃষ্টি প্রকিপ।
আজ সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কালাছড়া গ্রামে দেখা মিলে বৃষ্টি ও প্রকিপের। কথা বলেন তাদের ভালোবাসা নিয়ে। জানালেন বিয়ে করতে পেরে তারা খুশি। সবার দোয়া চান তারা।
কালাছড়া গ্রামের কামাল মিয়ার মেয়ে বৃষ্টি। এসএসসি পাস। টুকটাক ইংরেজি জানেন। বছর দুয়েক আগে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠান প্রকিপকে। সেই থেকে প্রেমের শুরু। গত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন প্রকিপ। সে দিনই বিয়ে করেন বৃষ্টিকে।
বৃষ্টি বলেন, ‘এন্ড্রি নিজে থেকে বিয়ে করবেন এবং ধর্ম পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেন। ওকে আমি বিশ্বাস করি। কারণ একটি আংটি কেনার জন্য ও আমার কাছে টাকা পাঠায়। আংটিটি এখনো আমার হাতে আছে। ১৯ ডিসেম্বর দেশে এসে আমাকে বিয়ে করার কথা জানিয়েছে। ওর ওই কথায় আমার ন্যূনতম সংশয় হয়নি এবং সে আসবে আমি নিশ্চিত ছিলাম। আমাদের বিয়েতে পরিবারের সম্মতি ছিল। এর আগে, আমি আমার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করে নিজের নাম ‘‘বৃষ্টি প্রকিপ’’ রেখেছি।’
এন্ড্রি প্রকিপ ওরফে মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। নিজের নতুন নাম রেখেছি মোহাম্মদ। আমি আনন্দিত। ফেসবুকে দুই বছর আগে বৃষ্টির সঙ্গে পরিচয়। বৃষ্টি মুসলিম মেয়ে, অনেক ভালো এবং আমার দেশে তো মেয়েদের তুলনায় অনেক ভিন্ন ও ব্যতিক্রমধর্মী। তাই ১৯ বেলজিয়াম থেকে এখানে এসে তাকে বিয়ে করেছি। এক মাস পর চলে যাব। সকল প্রক্রিয়া শেষের তাকে সঙ্গে নিয়ে যাব।’
বৃষ্টির দাদি জোহেরা বেগম বলেন, ‘আমরা খুশি। নাতিন জামাই অনেক সুন্দর। দুই মনের মিলন হওয়ায় হাজার মাইলের দূরত্ব পেরিয়ে প্রেমের টানে এখানে এসেছে।’
বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেম্বার মো. ফরহাদ আলী বলেন, ‘ইউক্রেনের নাগরিক এক যুবক বাংলাদেশে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আমার গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছে। এটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।’