Image description

মাসুম খলিলী

 

যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমানভাবে বাণিজ্যকে ভূরাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে- যার প্রভাব বহুমাত্রিক এবং গভীর। শুল্ক আরোপ, রফতানি নিষেধাজ্ঞা, বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রা ব্যবস্থায় প্রভাব বিস্তার, প্রযুক্তি প্রবাহে বাধা- সবই এখন কৌশলগত হাতিয়ার। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র সীমিত পর্যায়ে ইউরোপকে সাথে নিয়ে এই কৌশল প্রয়োগ করলেও সাম্প্রতিক সময়ে এর পরিসর ও তীব্রতা বেড়েছে। ফলস্বরূপ, বিশ্বায়ন বা মুক্তবাজারের ধারণা ক্রমে ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে। প্রশ্ন হলো- এই প্রবণতা কি বর্তমান জাতিসঙ্ঘকেন্দ্রিক বিশ্ব রাজনৈতিক কাঠামো এবং ব্রেটন উডসভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পাল্টে দেবে? এর আঞ্চলিক প্রভাবইবা কী হবে।

 
 

বিশ্ব অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তন
রাজনৈতিক কারণে বাণিজ্য সীমিত করার পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতিকে ‘ব্লকভিত্তিক ’রূপে ফিরিয়ে নিতে পারে, যেমনটি ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময় হয়েছিল। এর ফলে বৈশ্বিক বাণিজ্যে কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।

 

এক. সাপ্লাই চেইনের পুনর্গঠন : নিরাপত্তা উদ্বেগে চীন, রাশিয়া বা প্রতিদ্ব›দ্বী দেশ থেকে উৎপাদন সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীদের মিত্র রাষ্ট্রে স্থানান্তরের ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে এবং সরবরাহে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে এ প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে।

 

দুই. মুদ্রা ব্যবস্থার অস্থিরতা : নিষেধাজ্ঞা বা ডলারভিত্তিক লেনদেন বন্ধ হলে চিপস, রুবল-ইয়ান বাণিজ্যের মতো বিকল্প পেমেন্ট সিস্টেম শক্তি পাবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধির ফলে অনেক দেশই এখন পশ্চিমা লেনদেন পরিষেবা ব্যবস্থা ‘সুইফট’ এবং মার্কিন ডলারের বিকল্পের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।

 

ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য পরিবর্তন
প্রতিপক্ষকে কৌশলগতভাবে চেপে ধরার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ভ‚রাজনৈতিক শক্তির ভারসাম্য পরিবর্তন ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল প্রতিদ্ব›দ্বী জোট গঠন প্রক্রিয়া উৎসাহিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো ব্রিকস (চীন-রাশিয়া-ইরান ব্লক) বা এসসিওর মতো সমান্তরাল অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে চাইছে। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ হারানোর ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু দেশ এশিয়া, আফ্রিকা বা লাতিন আমেরিকার বাজারে প্রভাব বিস্তার করতে চাইবে- ফলে আঞ্চলিক শক্তি কাঠামো তৈরি হবে।

বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার ক্ষয়
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাণিজ্য সীমিত করার ফলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম ভেঙে পড়ছে, যার ফলে নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকাঠামো ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্র মিত্রদের সাথে ‘নিরাপত্তা-প্রথম’ চুক্তি করবে, যেখানে রাজনৈতিক আনুগত্যকে পুরস্কৃত করা হবে। প্রতিপক্ষ ব্লকও একই ধরনের চুক্তি করবে, যা বৈশ্বিক বিভাজনকে গভীর করবে। সঙ্ঘাতকে উসকে দেবে।

 

প্রযুক্তি ও জ্ঞানপ্রবাহে বিভাজন
বাণিজ্যযুদ্ধ প্রযুক্তি-ক্ষেত্রে এক ‘কোল্ড ওয়ার’ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে চিপ, এআই, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা এক ইকোসিস্টেমে, আর চীন-রাশিয়া ও মিত্ররা অন্য ইকোসিস্টেমে থাকবে। এতে আন্তর্জাতিক গবেষণা সহযোগিতা হ্রাস পাবে, উদ্ভাবনের গতি ধীর হবে।

 

ক্ষুদ্র ও উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ
ক্ষুদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলো এর ফলে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়বে। এতে পক্ষ বেছে নেয়ার চাপ বাড়বে; কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন দুর্বল হবে। একপক্ষের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা নিষেধাজ্ঞা বা বাজার হারানোর ঝুঁকি বাড়াবে। খাদ্য, জ্বালানি ও প্রযুক্তি আমদানিতে সাপ্লাই চেইন বিঘ্নিত হলে সঙ্কট সৃষ্টি হবে।

 

দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব
বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্বায়নের ধারা ধীর হবে বা আঞ্চলিকীকরণ ঘটবে। ডলারকেন্দ্রিক বাণিজ্য আংশিকভাবে বহু-মুদ্রাভিত্তিক কাঠামোয় রূপ নিতে পারে। অর্থনৈতিক চাপ, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যযুদ্ধ, এমনকি সামরিক উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে।

 

রাশিয়া-চীন-ভারত ঘনিষ্ঠতার ভূঅর্থনৈতিক প্রভাব
ট্রাম্পের সর্বশেষ ট্যারিফ যুদ্ধের অংশ হিসেবে ৫০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপে ভারত ব্রিকস বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করার বার্তা দিয়েছে। দিল্লি বলেছে চাপের মুখে রাশিয়ান জ্বালানি আমদানি বন্ধ করবে না। নতুন পরিস্থিতিতে রাশিয়া-চীন-ভারত ঘনিষ্ঠতার ভূঅর্থনৈতিক প্রভাব হবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

জ্বালানিপ্রবাহ ও দাম : রাশিয়ান তেল-গ্যাসের এশিয়ামুখী পুনর্বিন্যাস হবে। ভারত রাশিয়ার শীর্ষ জ্বালানি আমদানিকারক (২০২৫ সালে মোট আমদানির ৩৫ শতাংশ)। এতে এশীয় ক্রেতাদের দরকষাকষি ক্ষমতা বাড়বে; যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সত্ত্বেও ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি অব্যাহত রাখবে।

অর্থপ্রবাহ ও নিষেধাজ্ঞা-বাইপাস : বাণিজ্য যুদ্ধের ফল হিসাবে স্থানীয় মুদ্রা ও বিকল্প চ্যানেলের ব্যবহার (রুপি-রুবল, দিরহাম স্যাটলমেন্ট) বাড়ছে। রাশিয়ার ‘শ্যাডো ফ্লিট’ ও শিপিং রিরাউটিং পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণকে সীমিত করছে।

করিডোর ও লজিস্টিক্স : কাস্পিয়ান-ইরান হয়ে পরিবহন রুটে সময় ও খরচ কমছে (২০২৪-এ কার্গো ভলিউম ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি)। চেন্নাই-ভ্লাদিভস্তক করিডোরে সময় ৪০ শতাংশ কমার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও চাবাহার বন্দর ভারত-কাস্পিয়ান সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ হলেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি রয়েছে।

প্রতিবন্ধকতা : বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চীন-রাশিয়া-ভারত অক্ষ তৈরিতে নানা বাধাও রয়েছে। ভারত-চীন নিরাপত্তা দ্ব›দ্ব পূর্ণাঙ্গ ত্রিপক্ষীয় ব্লক গঠনে বাধা দেবে। পাওয়ার অব সাইবেরিয়া-২ পাইপলাইনের মতো কিছু বড় অবকাঠামো প্রকল্প এখনো অনিশ্চিতই রয়ে গেছে।

 

বিসিআইএম করিডোর
আঞ্চলিক পর্যায়ে বিকল্প অর্থনৈতিক অক্ষ তৈরি উদ্যোগের একটি হলো বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) অর্থনৈতিক করিডোর। এই ধারণাটি প্রথম আসে ১৯৯৯ সালে, যখন দক্ষিণ এশিয়ার সাথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক সংযোগের নতুন পথ খোঁজা হচ্ছিল। এর লক্ষ্য ছিল- বাণিজ্য বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীকরণ। চীন এই করিডোরকে তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) একটি উপাদান হিসেবে দেখতে শুরু করে, আর ভারত এটিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করলেও কৌশলগত সন্দেহ পোষণ করে।

চীনের স্বার্থ ও ভূকৌশল : চীনের জন্য বিসিআইএম করিডোর কেবল বাণিজ্যপথ নয়, বরং ভারত মহাসাগরে পৌঁছানোর একটি বিকল্প ও স্বল্পব্যয়ী রুট। করিডোরের মাধ্যমে চীন তার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল- বিশেষত ইউনান প্রদেশ থেকে বাংলাদেশ হয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করতে পারে। এতে করে মালাক্কা প্রণালীর ওপর নির্ভরতা কমবে এবং জ্বালানি ও পণ্য পরিবহন সময় ও খরচ দুটোই হ্রাস পাবে।

ভারতের দোদুল্যমান অবস্থান : ভারত প্রাথমিকভাবে এই করিডোরে অংশগ্রহণ করলেও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত। বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারতে চীনা উপস্থিতি ভারতের নিরাপত্তা নীতিনির্ধারকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এ কারণে ভারত বর্তমানে জাপান ও পশ্চিমা শক্তির সাথে বিকল্প সংযোগ প্রকল্প- যেমন অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি জোরদার করছে।

বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব : করিডোরের ভৌগোলিক কেন্দ্রে অবস্থান করে বাংলাদেশ আঞ্চলিক সংযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পারে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য সুফল হলো রফতানি বাজার সম্প্রসারণ; শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন ও পরিবহন খরচ কমানো। তবে একই সাথে রয়েছে বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিযোগিতায় প্রভাব, স্বাধীনতা সঙ্কুচিত হওয়ার আশঙ্কা ও কৌশলগত ঝুঁকি।

মিয়ানমারের ভূমিকা : করিডোরের প্রারম্ভিক বা সমাপ্তবিন্দু হওয়ায় মিয়ানমার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গৃহযুদ্ধ করিডোর বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ও করিডোরের ভবিষ্যৎ : বিসিআইএম করিডোর বাস্তবায়ন মূলত নির্ভর করছে চীন-ভারত সম্পর্কের ওপর। দুই দেশের সীমান্ত উত্তেজনা ও কৌশলগত অবিশ্বাসের কারণে প্রকল্পটি স্থবির হয়ে আছে। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল চীনের উদ্যোগকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশের করণীয় : বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো- অর্থনৈতিক সুযোগ গ্রহণের পাশাপাশি কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষা করা। এ জন্য প্রয়োজন- বহুপক্ষীয় সমঝোতা, অবকাঠামো প্রস্তুতি ও জাতীয় স্বার্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ চুক্তি।

 

নতুন স্নায়ুযুদ্ধের ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ
বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে ভূরাজনীতিতে ব্যবহারের ফলে যে নতুন স্নায়ুযুদ্ধের সৃষ্টি হচ্ছে তাতে কৌশলগত নানা চ্যালেঞ্জ আসছে। এতে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, অর্থপ্রবাহ ও জোট রাজনীতিতে সর্বত্র প্রতিযোগিতা বাড়ছে।

সরবরাহ শৃঙ্খল কয়েকটি ব্লকে বিভক্ত হয়ে খরচ ও ঝুঁকি উভয়ই বাড়ছে। বিকল্প পেমেন্ট চ্যানেল বাড়লেও কমপ্লায়েন্স জটিলতা ও রিজার্ভ ঝুঁকি বাড়ছে। ইন্দো-প্যাসিফিকে তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগর, মালাক্কা প্রণালী কৌশলগত ‘চোকপয়েন্ট’ হয়ে উঠছে। খাদ্য ও সার নিরাপত্তা ব্ল্যাক সি করিডোরের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় মূল্যশক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সাইবার ও তথ্যযুদ্ধে রাষ্ট্রপৃষ্ঠপোষক হামলা, নির্বাচন-হস্তক্ষেপ বাড়ছে।

 

ছোট ও মাঝারি রাষ্ট্রের চ্যালেঞ্জ
ছোট ও মাঝারি রাষ্ট্রের জন্য হেজিং বনাম অ্যালাইনমেন্টে ভারসাম্য রাখা কঠিন হতে পারে। তাদের জন্য নিষেধাজ্ঞা-কমপ্লায়েন্স ও আইনি ঝুঁকির কারণে শিপিং, বীমা ও ব্যাংকিং খরচ বাড়ছে। এর বাইরে একক রুটে নির্ভরশীলতায় (যেমন- রেড সি বা মালাক্কা) ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ডেটা ও ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব নীতিতে সুষমতা অপরিহার্য। কিন্তু সেটি অর্জন ছোট ও মাঝারি রাষ্ট্রের জন্য সহজ নয়।

করণীয় কী হতে পারে
এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি খাতে টার্ম কন্ট্রাক্ট ও স্পট মার্কেটের মিশ্রণ, স্টোরেজ সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।

খাদ্য/সার খাতের জন্য স্ট্র্যাটেজিক রিজার্ভ, মৌসুমি আমদানির পরিকল্পনা, ইনসিউরেন্স ও ফিউচারস ব্যবহার পরিকল্পনা করা দরকার। প্রযুক্তি খাতে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ সংস্থায় সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। ডিজিটাল সিকিউরিটির ক্ষেত্রে গ্রিড, ফাইন্যান্স, টেলিকমে জিরো-ট্রাস্ট ও রেড-টিমিং; ক্রস-বর্ডার সিইআরটি সমঝোতা দরকার। মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় ইনভয়েসিং কারেন্সি বৈচিত্র্য, হেজিং ও সোয়াপ লাইন এর প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

জনকূটনীতির ক্ষেত্রে প্রো-অ্যাকটিভ স্টোরিটেলিং, ডায়াসপোরা এনগেজমেন্ট, ফ্যাক্ট-চেক অবকাঠামোর প্রতি বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন।

নীতি-বার্তা
বর্তমান সময়ের মূল চ্যালেঞ্জ হলো বিভাজিত কিন্তু আন্তঃনির্ভর বিশ্বের সাথে খাপখাওয়ানো। এক দিকে জোট-রাজনীতি ও নিষেধাজ্ঞার জাল, অন্য দিকে কাঁচামাল, চিপ ও শিপিংয়ের বাস্তব নির্ভরতা। এর উত্তরণ ইস্যুভিত্তিক হেজিং, বহুমুখী করিডোর এবং ‘কমপ্লায়েন্স-স্মার্ট’ অর্থনীতি- যেখানে ঝুঁকি আগেভাগে শনাক্ত করে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়।

বাংলাদেশের মতো অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚রাজনৈতিক অবস্থানে থাকা কিন্তু কাঠামোগতভাবে দুর্বল রাষ্ট্রের জন্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখা বেশি প্রয়োজন। এ জন্য সংস্কার ন্যায়বিচার আর গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে হবে পরিণামদর্শী উপায়ে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা বলয়ের শক্তিগুলোর স্বার্থ সঙ্ঘাত যেমন যথাসম্ভব এড়িয়ে যাওয়া দরকার, তেমনিভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে সংস্কার বাস্তবায়নেও পদক্ষেপ প্রয়োজন।