
মিনার রশীদ
দেশবাসী এতদিনে ড. ইউনূস সরকারের মধ্যে অতিমাত্রায় গরম এক শিশুপীরকে খুঁজে পেয়েছে। কিছুদিন আগে ঘটা করে ২০২৪-এর আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তাকে ঘোষণা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেহাত নাবালক এই শিশুটির মধ্যে এমন কোনো প্রতিভা এযাবৎ পরিলক্ষিত হয়নি।
বিশ্বমোড়ল আমেরিকা তাদের জিগিরদোস্ত ইসরাইল এবং ইন্ডিয়াকে উদ্ধারের জন্য কোন মোমেন্টে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আসে এবং তা বলবৎ হয় সেই বিষয়টি বিশ্ববাসী মালুম করে ফেলেছে। ইন্ডিয়া-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিকে পাকিস্তান সংগত কারণেই তাদের বিজয় বলে অভিহিত করছে! এমতাবস্থায় পাকিস্তান-চীন-বাংলাদেশের মধ্যে একটা সামরিক বোঝাপড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পাকিস্তানের কাছে হঠাৎ পররাষ্ট্র সচিব জসীমের ক্ষতিপূরণ চাওয়া এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজের পাকিস্তানপন্থা রাজনীতি বন্ধের বয়ান ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বাচীপা (বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান ঐক্য) ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই তাতে কোনো সন্দেহ নেই! এখানে যে প্রশ্নটি দেখা দেয়, পাকিস্তানের কাছ থেকে আমাদের পৃথক্করণ যদি নেগোসিয়েটেড ডিল হতো, তবে আমরা এই সম্পদ ভাগাভাগি দাবি করতে পারতাম। আমাদের এই যুদ্ধ পাকিস্তানের অর্থনৈতিক কাঠামোকেও বিরাট ধাক্কা দিয়েছিল। এখন এই আব্দার তোলার মানেই হলো, সম্ভাব্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কাজটিকে কঠিন করে তোলা। প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়নকর্মী এবং চেতনার ঢিসুম নায়ক জসীম সেই কাজটিই আঞ্জাম দিয়েছেন।
দুনিয়ায় এখন পর্যন্ত এটম বোমা খাওয়া জাতি হলো জাপান। তাও একটি না, এক জোড়া খেয়েছিল। মেরেছিল যুক্তরাষ্ট্র, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। সেই কথা বেমালুম ভুলে জাপান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই। আফসোস লাগে জাপানিজদের জন্য, ওদের দেশে একটা জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবির বা মুনতাসীর মামুনদের জন্ম হলো না। কিংবা জাতির শিশুপীর কিংবা মাস্টারমাইন্ড মাহফুজের মতো কেউ এলো না। মাহফুজ তার এই ঘৃণাটিকে সর্বজনীন বানানোর জন্য একই কণ্ঠে আবার বামপন্থি বান্দরদেরও সমালোচনা করেছে। বাচ্চা ছেলেটির বহুত বুদ্ধি আছে বৈকি!
নিন্দুকরা বলছে, ইন্ডিয়ার মিডিয়া থেকে তাকে হিযবুত তাহরীর বলে প্রচার করা হয়েছে। এটাকে মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য পাকিস্তানবিদ্বেষী হিসেবে নিজেকে জাহির করার তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে। এই মুহূর্তে মাহফুজের বিরুদ্ধে বলা মানেই নিজেকে জামায়াত-শিবির হিসেবে নিজের ঘাড়টি এগিয়ে দেওয়া। তারপরও জাতির সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থেই কিছু কথা বলা জরুরি হয়ে পড়েছে!
আপনাদের হয়তোবা স্মরণে আছে যে বেগম খালেদা জিয়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা নির্বাচনের’ আগে একাধিক জনসভায় ভারতের হস্তক্ষেপ এবং শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছিলেন। তিনি সতর্ক করেছিলেন, যদি আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসে এবং ভারতের দালালি চলতে থাকে, তাহলে একসময় ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে একদিন ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে, আর বাংলাদেশের মসজিদে উলুধ্বনি শোনা যাবে।’
তার এই বক্তব্য নিয়ে আওয়ামী মহলে ট্রল শুরু হয়ে যায় এবং প্রথম আলো গং হাওয়া দিতে শুরু করে। এতে জাতীয়তাবাদী ব্লকও ম্যাডামের এই মন্তব্য নিয়ে শরমিন্দা বা কুণ্ঠিত হয়ে পড়ে। অথচ জাতির জন্য কত বড় একটা সতর্কবার্তা ছিল, এখন তা আমরা বুঝতে পারছি! বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ান মিডিয়া যে প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে, তার মধ্যে তাদের এই ভয়াবহ পরিকল্পনা বা খায়েশের কথাও ফুটে উঠেছে। হিন্দুত্ববাদী কিছু নেতা এবং তাদের থিংক ট্যাংক জানাচ্ছে কীভাবে তারা ফেনীর কিছু অংশ দখল করে চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন করে দেবে। একইভাবে খোয়াব দেখছে আমাদের মানচিত্রের উত্তরের চূড়াটা ছেঁটে দিয়ে তাদের চিকেন নেককে প্রশস্ত করে চিকেন ব্রেস্ট বানিয়ে ফেলবে। এমতাবস্থায় যেখানে আমাদের জিও-পলিটিক্যাল সমস্ত সুযোগ কাজে লাগানোর কথা ভাবা দরকার, সেখানে এই শিশুপীরের নতুন বয়ান পর্যবেক্ষক মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে! আর এ কারণেই কি তাকে জাতির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে সামনে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ?
যারা শুধু ইউনূসকে দেখেই বাদবাকি সবকিছু ভুলে যাচ্ছি, তাদের দৃষ্টিটিও এদিকে প্রসারিত করা দরকার! ড. ইউনূস পলিটিক্যাল পার্সোনালিটি নন। কাজেই পেছন থেকে মতলববাজ গোষ্ঠী তাকে ব্যবহার করে নিজেদের ফায়দা হাসিল করে ফেলতে পারে, সে ব্যাপারেও সজাগ থাকা জরুরি।
পাকিস্তানকে নিয়ে বিএনপির একটা অংশের মধ্যেও একটা ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। যারা নিজের গরজেই ইন্ডিয়ার দালাল হয়েছেন বা কোনো কারণে আটকে গেছেন, তাদের কথা ভিন্ন। অনেকে নিজেদের ইতিহাস না জানার কারণেও এই গোলক ধাঁধায় পড়ে গেছেন বা পড়ে যাচ্ছেন ।
বিএনপি বা ছাত্রদলের অনেকেই জানেন না যে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি দুটি রাষ্ট্র থেকে তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদক পেয়েছেন।
১৯৬৫ সালের যুদ্ধ চলাকালে তার সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকায় পাকিস্তান সরকার তাকে ‘হিলাল-ই-জুরআত’ (Hilal-i-Jurat) খেতাবে ভূষিত করে। এটি পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব, যা শুধু বীরত্বপূর্ণ ও আত্মোৎসর্গমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রদান করা হয়। তখন তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একজন ক্যাপ্টেন পদবির কর্মকর্তা ছিলেন।
সেই একই জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের যুদ্ধে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেন এবং এখানেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদক বীরউত্তম পান।
আবার দেখেন তার ওপর দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা অর্পিত হলে তিনি যে ১৯ দফা ঘোষণা করেছিলেন, তার ১৬তম দফা ছিল, সব বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা এবং মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা। এখানে কিন্তু ব্র্যাকেট লাগিয়ে বলা হয়নি পাকিস্তান ছাড়া সব মুসলিম দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা যাবে। বর্তমান অনেক বিএনপি নেতার কথাবার্তা শুনে মনে হয় তারা তখন উপস্থিত থাকলে এই ব্র্যাকেটটি তারা লাগিয়ে নিতেন।
এখন প্রশ্ন, ১৯৬৫ সালে যে পাকিস্তানকে রক্ষার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে চেয়েছিলেন, ১৯৭১ সালে সেই পাকিস্তানকে ভাঙার জন্য এ রকম মারমুখো কেন হয়েছিলেন? আবার ১৯৭৬-১৯৮১-তে জাতির জন্য চিরন্তন একটা ফরেন ও ডিফেন্স পলিসি রচনা করে গেছেন! মাহফুজদের মতো তথাকথিত মাস্টারমাইন্ড মগজে এসব বিষয় ঢুকবে না! কাজেই এই মাহফুজরা দুদিনের বুদবুদের পর মিলিয়ে যাবেন এবং জাফর ইকবালদের সারিতেই জায়গা পাবেন।
ইদানীং বিএনপির কিছু বয়োবৃদ্ধ টপ নেতাদের মধ্যে এক ধরনের বিশ্বাসের সংকট বা আদর্শিক দোদুল্যমনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এই সুযোগটি মতলববাজ গোষ্ঠী গ্রহণ করছে! ফলে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে, বিএনপি কি আসলেই মধ্য ডান অবস্থান থেকে সরে যাচ্ছে?
বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, বিএনপির অবস্থান ডানের বামে এবং বামের ডানে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অতি বাম কিংবা অতি ডান ঘরানার গুটিকয় ব্যক্তি হঠাৎ বিএনপিতে ঢুকে কি বিএনপিকে তার এই অবস্থান থেকে সরাতে পারবে? আমার স্পষ্ট জবাবটি হলো, না, কেউ এটা পারবে না। যারা এই চেষ্টাটি করবেন, তাদেরই সরে যেতে হবে!
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির কিছু কর্মসূচিতে ও গণআন্দোলনে সমাজতান্ত্রিক, প্রগতিশীল বা বাম ঘরানার কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা দেখা গেছে। তবে ইদানীং যে বিষয়টি নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে শক্ত সমালোচনা চলছে, তা হলো সিপিবি নেতা এম এম আকাশের একটি মন্তব্য ঘিরে। গত ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি ও বামজোট উভয়ই বর্তমান দক্ষিণপন্থি প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মীয় শক্তিগুলো আরো সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিতে নারাজ।’
বামপন্থি এই নেতার এ মন্তব্য বিএনপি সম্পর্কে একটা ভুল মেসেজ ছড়াবে। বিএনপির পক্ষ থেকে মিডিয়া সেল একটা ব্যাখ্যা দিলে ভালো হতো। বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ বা ব্যাখ্যা না আসায় অনেকেই মৌনতা সম্মতির লক্ষ্মণ বলে ধরে নিয়েছেন।
ধর্মীয় উগ্রতা বা জঙ্গিবাদ নিয়ে বিএনপি এবং এম এম আকাশদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং তা মোকাবিলার কৌশলে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। এই জঙ্গিবাদকে এম এম আকাশের দলগুলো একটা মওকা বা রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের কৌশল হিসেবে গ্রহণ করে। নাইন-ইলেভেন-পরবর্তী বিশ্বে যখন মুসলিমজাহানের পুড়ছিল ঘর, তখন এই এম এম আকাশরা শুকিয়ে নিচ্ছিল তাদের ভেজা কাপড়!
কোনো ঘটনায় বেনিফিশিয়ারি দেখেই পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের চেহারা স্পষ্ট হয়! এসব ঘটনার পেছনে কারা ছিল তাদের চেহারাও জাতির সামনে স্পষ্ট হয়ে পড়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত প্রতিটি জঙ্গি হামলার পেছনে মূল টার্গেট ছিল বিএনপি এবং তার নেতৃত্বের ইমেজ ভূলুণ্ঠিত করা।
বিএনপি ও বামপন্থিদের অবস্থান—একই পেজে আসা কি সম্ভব?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জঙ্গিবাদ ইস্যুটি একটি সংবেদনশীল, জটিল ও বহুমাত্রিক বিষয়। বিশেষ করে বিএনপি ও বামপন্থিদের মধ্যে এই ইস্যুকে ঘিরে ভিন্নমুখী দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান বিদ্যমান। রাজনৈতিক ফায়দা, আদর্শিক পার্থক্য এবং ঐতিহাসিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়—এই দুই রাজনৈতিক শক্তির একই পেজে আসা কঠিন ও দুরূহ।
চারদলীয় জোট সরকার (২০০১–২০০৬) বাংলাদেশের ইতিহাসে ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছিল। জেএমবি এবং বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে সংঘটিত দেশব্যাপী বোমা হামলা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পর সরকার দ্রুত গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে। প্রধান নেতাদের—শায়েখ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, সানী প্রমুখ—গ্রেপ্তার করে অল্প সময়ের মধ্যে বিশেষ আদালতের মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করে, পরবর্তী জরুরি সরকার এসে শুধু সেই ফাঁসি কার্যকর করে। এতে দেশজুড়ে সন্ত্রাসবিরোধী একটি স্পষ্ট বার্তা যায় এবং জনমনে নিরাপত্তা ফিরে আসে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন এ সরকার ধর্মীয় মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে একদিকে যেমন ইসলামের নামে সহিংসতা বন্ধ করে, অন্যদিকে রাজনৈতিক দৃঢ়তার মাধ্যমে দেখিয়েছে, ধর্মীয় উগ্রবাদ কখনোই রাষ্ট্রের নীতির সঙ্গে আপস করতে পারে না। আন্তর্জাতিক মহলে এই পদক্ষেপ প্রশংসিত হয় এবং বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ধর্মের অপব্যবহার রুখতে বিএনপির নেওয়া এই পদক্ষেপ আজও একটি সফল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত।
এমন একটা অর্জন যে বিএনপির ঝুলিতে রয়েছে, সেই বিএনপি কেন এম এম আকাশদের ফাঁদে পা দিচ্ছে- তা বোধগম্য হচ্ছে না!
সর্বমোট ২০ হাজার নেতাকর্মী রয়েছেন, যারা পদ-পদবির আশায় রাজনীতি করে। তারা পার্টি ডানদিকে না বামদিকে এটা নিয়ে টেনশন নেই। পদ-পদবির কারণেই নেতৃত্ব যেদিকে যাবে, ওনারা সেদিকেই যাবেন। কেউ কেউ মনেপ্রাণে কোনো সিদ্ধান্ত পছন্দ না করলেও আনইজি এক্সেপ্ট করবেন!
পার্টিপ্রধানের মনের মতিগতি বুঝেই অনেকে পরামর্শ দেবেন। ফলে অনেক সময় জেনুইন পরামর্শ বা ফিডব্যাক পার্টিপ্রধান বরাবর পৌঁছায় না। সবার মধ্যেই ভয় কাজ করে, যদি রাগে-ক্ষোভে ‘শুট দ্য মেসেঞ্জার মানে খারাপ সংবাদ বহনকারীকে গুলি করে’ বসেন।
তারেক রহমান এবং বিএনপির পলিসি মেকারদের প্রতি একটি নিবেদন, শুধু যেসব কথা আপনাদের শুনতে ভালো লাগে, শুধু সেসব প্লিজেন্ট কথাই নহে, যেসব কথা ভালো লাগে না, সেসব কথাও একটু শুনতে চেষ্টা করুন।
পার্টির পদ-পদবি-সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাশার বাইরে কোটি মানুষ রয়েছেন, যারা শহীদ জিয়াকে ভালোবাসেন, বেগম জিয়াকে ভালোবাসেন। তারেক রহমানকে ঘিরেও তাদের একটা আবেগ ও উচ্ছ্বাস রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে কিছু সংশয়ও তৈরি হয়েছে।
এদের মধ্যে শতকরা ৯৯ ভাগ সাধারণ কৃষকের সন্তান-শ্রমিক, মজুর, ছোট দোকানদার বা ছোট চাকরি করেন। বাপ-দাদার ধর্মকে, কৃষ্টি-কালচারকে মন থেকেই ভালোবাসেন! নামাজ-কালাম যতটুকু পারেন, করেন। যতটুকু পারেন না, তার জন্য গিলটি ফিল করেন, নিজেকে পাপী মুসলমান জ্ঞান করেন। মনে করেন, আধিপত্যবাদী শক্তির হাত থেকে দেশটিকে রক্ষার জন্য জিয়া এবং বেগম জিয়ার বিএনপিই একমাত্র ভরসা। কিন্তু গুটিকয় নেতা তাদের আচার-আচরণে এবং উচ্চারণে সেই বিশ্বাসে কিছুটা চিড় ধরিয়েছে। বিশ্বাসের এই দেয়ালটি এখনই মেরামত না করলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।