আমদানির খবরে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি কমেছে ৩৫ টাকা। দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন ও বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসায় দাম কমেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃহস্পতি ও শনিবার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকায়, আজ রবিবার সে পেঁয়াজ খানতুগঞ্জে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। আর বাজারে আসা নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭৫ টাকায়।
আজ রবিবার খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই এলাকায় আড়তগুলোতে দেশি পুরনো পেঁয়াজ দেখা গেছে। সেই সঙ্গে কিছু আড়তে নতুন পেঁয়াজ দেখা গেছে। শনিবারের তুলনায় গতকাল রবিবার বাজারে ক্রেতা ছিল বেশি।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। গত বৃহস্পতি ও শনিবার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। যা খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে কেজি ১৪০ টাকা পর্যন্ত। এ অবস্থায় সরকার পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়।
খাতুনগঞ্জের মেসার্স আলীম ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমদানির খবরে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে। আজ রবিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। বৃহস্পতি ও শনিবার পুরনো পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। বাজারে নতুন পেঁয়াজও এসেছে।
খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের বৃহত্তর পাইকারি মার্কেট হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এত দিন বাজারে দেশীয় পুরনো পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। গেল বৃহস্পতি ও শনিবার খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। কিছু কিছু আড়তে মেহেরপুরের আগাম ফলনের কিছু পেঁয়াজের সরবরাহ দেখা গেছে। এগুলো এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আমদানির খবরেই পেঁয়াজের দাম কমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম আরো কমবে।’
খাতুনগঞ্জের মোহাম্মদিয়া বাণিজ্যালয়ের মোহাম্মদ ফোরকান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমদানির খবর আসার পরপরই পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে। পুরনো পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। আর নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।’
চলতি বছর বাজারে প্রায় পুরো চাহিদাই মিটিয়েছে দেশি পেঁয়াজ। তবে এবার মৌসুমের শেষ সময়ে এসে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এরপরই পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। বাজারে আসা ভোক্তারা বলছেন, মূলত সিন্ডিকেট করেই ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। দেশের বাজারে আমদানির পেঁয়াজ আসেনি। তার আগেই দাম কেজিপ্রতি কমে গেছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সরকারের এই বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা বলছেন সাধারণ মানুষ।
চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমদানি ঘোষণার খবরে দাম কমে গেছে। এতে বোঝা যায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়েছিলেন। শনিবার পেঁয়াজ নিয়েছি ১৪০ টাকা করে। আজ খাতুনগঞ্জে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। যদিও খুচরা দোকানে এখনো দাম কমেনি। সরকারের উচিত বাজার মনিটরিং করা।’