Image description

বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে অবস্থিত পর্যটন নগরী কুয়াকাটা ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত হয়েছে। সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছরই ঈদের ছুটিতে দেশ-বিদেশের হাজারও পর্যটক এখানে ভিড় জমান। তাদের জন্য আবাসন, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

এবার ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটিকে কাজে লাগাতে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসবেন কুয়াকাটায়। তাই তাদের বরণে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছেন পর্যটকদের সেবা দেওয়া ১৬টি পেশার ব্যবসায়ীরা। এই লম্বা ছুটিকে সামনে রেখে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায় ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে অগ্রিম হোটেল বুকিং। শুধু হোটেলই নয়, নিজেদের সার্বিকভাবে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

এদিকে রমজান মাসে পর্যটক কম থাকায় সৈকতজুড়ে তৈরি হয়েছে ভিন্নতা। শীত মৌসুমের শেষে বর্ষার শুরুতে সৈকতে উঁচু ঢেউ, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, বর্ষার একটি আমেজ উপভোগে অনেকেই ছুটে আসবেন কুয়াকাটায়।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০০টি হোটেল ও রিসোর্ট এবার ঈদ উপলক্ষে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে। হোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ৮০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। আর বাকিগুলো ঈদের ছুটির প্রথম দিনেই পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ বলেন, ‘রমজান মাসজুড়ে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা মন্দাভাবের মধ্যে থাকলেও এবার ঈদে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। পাশাপাশি পর্যটকদের বরণ করতে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।’

হোটেল ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ সাগর বলেন, ‘রমজান মাসে আমাদের হোটেলগুলো প্রায় পর্যটকশূন্য থাকে। মাঝে মাঝে পর্যটক এলেও তা দিয়ে স্টাফদের বেতনও হয় না। তবে এবার ঈদে অগ্রিম বুকিং ভালো হয়েছে। ঈদের দুই-এক দিন আগেই সব কক্ষ পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’

পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করেছে। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, সৈকত এলাকায় নিয়মিত টহল ব্যবস্থা থাকবে। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ ছাড়া লাইফগার্ড ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম বাচ্চু বলেন, ‘পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা এবং যেকোনো হয়রানি বন্ধে আমরা প্রস্তুত। প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের ট্যুর গাইডের সদস্যরা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও ভ্রমণ সহযোগিতায় কাজ করবেন।’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।’

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছি। সন্দেহজনক কিছু দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’