
রাজনৈতিক অস্থিরতা-বন্যা এবং চরম শ্রমিক অসন্তোষের পরেও চলতি অর্থ বছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সাড়ে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ, যা গত অর্থ বছরের এই সময়ের তুলনায় আড়াই বিলিয়ন বেশি। আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা সত্ত্বেও বিদেশি বায়ারদের কোনো অফার ফিরিয়ে না দিয়ে তৈরি পোশাক খাতের অগ্রগতি ধরে রেখেছেন দেশের গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের সাত মাস অর্থাৎ জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ২৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে অন্তত ১২ শতাংশ। এর মধ্যে অর্থ বছরের শুরুর প্রথম দুমাস রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরের এক মাস ভয়ংকর বন্যা এবং পরবর্তীকালে চরম শ্রমিক অসন্তোষ রফতানির পরিমাণ তুলনামূলক কমে গিয়েছিল।
আরডিএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা সারোয়ার রিয়াদ বলেন, নানা অসুবিধা সত্ত্বেও তারা এটা করতে পেলেছিলেন। হয়তো অনেকের দেরি হয়েছে। কিন্তু তারপরও আমরা রফতানি ধরে রেখেছি। মন্দা পরিস্থিতি কাটিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার পোশাক বাজার আগের অবস্থায় ফিরতে শুরু করায় সব ধরনের সংকট কাটিয়ে ডিসেম্বর থেকে রফতানির পরিমাণ বাড়ছে বাংলাদেশের। বিশ্ব বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এই সময়ে তৈরি পোশাকের রফতানির পরিমাণ ছিল ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের অনেক নতুন মার্কেট সৃষ্টি হয়েছে। এসব মার্কেটে আমরা হেভি আইটেমগুলো রফতানি করতে পারছি। এগুলোর ভ্যালুও অনেক বেশি।
এক্ষেত্রে চীনের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করার ফলে বাংলাদেশে বেড়েছে ফ্রি অব কস্টের অর্ডার। তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোর মতোই এবারও এগিয়ে রয়েছে নিট ওয়ার পণ্য। গত সাত মাসে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ১২ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিট ওয়ার এবং ১০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওভেন পণ্য রফতানি করেছে।
বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি চাই আমার জায়গাটা দখল রাখতে। অন্যজন চাইবে, তার জায়গায়টা আগামী কয়েক মাসের জন্য নিরাপদ করে রাখতে। এজন্য আমরা মার্কেটিংয়ের জায়গায় কখনও অর্ডার প্রত্যাখ্যান করি না। বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৩৮ দশমিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হলেও ২০২৩-২৪ বছরে অন্তত ৫ শতাংশ কমে ৩৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছিল।