Image description
মির্জা গালিব
ভারতে নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের ইন্টারভিউ নিয়েছে ভারতীয় মিডিয়া WION। প্রায় ৬ মিনিটের এই ইন্টারভিউর শেষে উপস্থাপক প্রশ্ন করেছেন, ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনার ভূমিকা আছে কি না তা নিয়ে। রাষ্ট্রদূত স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিয়েছেন যে আমরা (আমেরিকা এবং ভারত উভয়ই) একটা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া দেখতে চাই। আমরা উভয়েই বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থার এস্টাব্লিশ্মেন্ট দেখতে চাই। ভদ্রলোক যেহেতু ভারতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, ভদ্রতা করে আমেরিকা এবং ভারত উভয়কে মিলায়ে "আমরা" বলেছেন।
 
তো ভারতীয় মিডিয়ায় ভারতে নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের এই ইন্টারভিউ দেখে UNB নিউজ করছে "Both US and India want democracy, elections in bangladesh"। আর UNB কে রেফারেন্স করে পিআলো নিউজ করেছে "বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন দেখতে চায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্র"। বাংলাদেশের আরো অনেকগুলো পত্রিকা (আমি অনলাইন ভার্সান দেখলাম) একই নিউজ করছে।
এই নিউজগুলো পড়লে মনে হইব, ভারত আর আমেরিকা হইল আমাদের লর্ড, আর ভারতে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত হইল ভাইসরয়। ভাইসরয় সাহেব ভারতীয় সাংবাদিকের সাথে সাধারণ আলাপচারিতায় বাংলাদেশ বিষয়ক নীতি ঠিক করেন!
 
এইসব নিউজ উৎপাদন মূলত সেই পুরাতন খেলা। আমাদের ঔপনিবেশিক মনে আমেরিকা-ভারতকে একসাথে দেখলে হয়ত মনে হইব তারা বিশাল কুতুব, সহীহ কথাই বলছেন!
প্রিয় ভাই বোনেরা, এইসব সাংবাদিকতা না কইরা, বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের ইন্টারভিউ নেন। আর তারে জিজ্ঞেস করেন, আমেরিকা তো সব সময় বাংলাদেশে গণতন্ত্র চেয়েছিল; কিন্তু গত তিন তিনটা ইলেকশান যে ফ্রি এন্ড ফেয়ার হইল না, ২০১৪ এর ইলেকশানের আগে তৎকালীন রাষ্ট্রদূত যে দৌড় দিয়া ভারত গেছিল কথা বলতে, এর প্রেক্ষিতে আপনি কি মনে করেন দক্ষিন এশিয়ায় সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভারত আসলে একটা বড় বাধা?