কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির প্রতিযোগিতা দিন দিন তীব্র হচ্ছে। সম্প্রতি, চীনের ডিপসিক নামক একটি প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন এআই মডেল ‘ডিপসিক এআই’ প্রকাশ করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের প্রযুক্তি খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। যখন এই মডেলটি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে, ঠিক তখনই চীনের বেইজিংভিত্তিক স্টার্টআপ ‘মুনশট’ নতুন আরেকটি এআই মডেল নিয়ে প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি তাদের ‘কিমি কে১.৫’ নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলটি উন্মোচন করেছে। তারা দাবি করছে যে, ‘কিমি কে১.৫’ ওপেনএআই-এর সর্বশেষ মডেলের সমান ক্ষমতাসম্পন্ন, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে আরও উন্নত।ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস থেকে জানা যায়, মুনশটের তৈরি ‘কিমি কে১.৫’ একটি মাল্টিমোডাল লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল, যা শুধু টেক্সটই নয়, ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করতেও সক্ষম। এটি রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে গঠিত, যা মডেলটিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা করে। মডেলটি ধাপে ধাপে চিন্তা করে জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে, যা একে অন্যান্য এআই মডেলের তুলনায় কার্যকরী করে তুলেছে।
একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, ‘কিমি কে১.৫’ একসঙ্গে ১ লাখ ২৮ হাজার টোকেন পর্যন্ত বিশ্লেষণ করতে পারে, যা একে দীর্ঘ ও জটিল প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখে। এর ফলে মাল্টিমোডাল ক্ষমতার মাধ্যমে এটি দ্রুত এবং কার্যকরভাবে সমস্যার সমাধান দিতে পারে।বিভিন্ন পরীক্ষায় ‘কিমি কে১.৫’ এআই মডেলটি ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি সহ অন্যান্য জনপ্রিয় মডেলের তুলনায় ভালো ফলাফল করেছে। গণিতের সমস্যা সমাধানে এটি চ্যাটজিপিটি ৪ও-এর চেয়েও ভালো স্কোর করেছে। এছাড়া কোডিং দক্ষতার দিক থেকেও এটি ওপেনএআই-এর মডেলকে ছাড়িয়ে গেছে।
মুনশট দাবি করেছে, অন্যান্য বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম খরচে তারা এই শক্তিশালী এআই মডেল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ‘চ্যাটজিপিটি ৪ও’ এবং ‘ক্লড ৩.৫ সনেট’ এর চেয়েও উন্নত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, যা এটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় প্রতিযোগিতার শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ‘কিমি কে১.৫’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে এবং ভবিষ্যতে এটি বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
বিডি প্রতিদিন