
ভারতের পর্যটন খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে আসাম পর্যন্ত চালু হতে যাচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম বিলাসবহুল নৌবিহার 'গঙ্গা বিলাস'। ১৩ জানুয়ারি বিশ্বের দীর্ঘতম রিভার ক্রুজ ‘গঙ্গা বিলাস’এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি কেন্দ্র বারাণসী থেকে গঙ্গাবক্ষে যাত্রা আরম্ভ করে, বাংলাদেশ হয়ে তা পৌঁছানোর কথা ডিব্রুগড়ে। ভারত ও বাংলাদেশের সম্মিলিত ২৭টি নদীপথ দিয়ে ৩,২০০ কিলোমিটার এই পথ পাড়ি দিতে ‘গঙ্গা বিলাস’এর সময় লাগবে প্রায় ৫০দিন।
এই সময়ে ক্রুজের যাত্রীদের ৫০টি ঐতিহাসিক পুরাতাত্ত্বিক-নৃতাত্ত্বিক তথা হেরিটেজ তকমা পাওয়া স্থান পরিভ্রমণ করানো হবে বলেও জানানো হয়েছে। অত্যাধুনিক এই ক্রুজে থাকবে নানা বিলাসবহুল আয়োজন। মজার বিষয়, এই লাক্সারি ক্রুজের ভাড়া নিয়ে এখনও কোনও বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়েনি। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের ধনী এবং বিত্তশালীদের কথা মাথায় রেখে এই রিভার ক্রুজটির টিকিটের দাম ধার্য করা হয়েছে, যা সাধারণের ধরা ছোঁয়ার বাইরেই হবে তা সহজেই অনুমেয়।
সম্প্রতি, কলকাতায় ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’-এর ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ক্রুজের যাত্রা শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। সেদিনই তিনি জানান, বহুদিন ধরে ভারত ও বাংলাদেশ সরকার নিজেদের ওয়াটার-ওয়েজ লিঙ্কগুলি চালু করার জন্য কাজ করছে। আগামী ১৩ জানুয়ারি কাশী থেকে এই পথে যাত্রা শুরু করবে অত্যাধুনিক রিভার ক্রুজ। কলকাতা হয়ে এটি বাংলাদেশে প্রবেশ করবে।
এরপর আবার অসমে ঢুকে ডিব্রুগড়ে যাত্রা শেষ করবে। মোদির সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলেছে ১৩ জানুয়ারি। কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাণসী থেকে শুরু করে গঙ্গাবক্ষে বক্সার, রামনগর, গাজীপুর পেরিয়ে আটদিনের সময় এটি পৌঁছোবে পাটনায়। সেখান থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হবে ক্রুজটি। ২০ দিনের মাথায় কলকাতায় পৌঁছোনোর কথা। এরপর সুন্দরবনের মাঝখান দিয়ে ঢুকবে বাংলাদেশে।
বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল ক্রুজ উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পশ্চিমবঙ্গের হেমনগর পার করে বাংলাদেশে ঢুকে একে একে মোংলা, বাগেরহাট, কটকা, হাড়বাড়িয়া, মোড়েলগঞ্জ পার করে পৌঁছোবে বরিশালে। তারপর মেঘনাঘাট, সোনারগাঁও, আরিচা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, বাহাদুরবাদ, চিলমারি হয়ে অসমের ধূবড়িতে প্রবেশ করবে। কেন্দ্রীয় সূত্র অনুযায়ী, ওপার বাংলার মধ্য দিয়ে যে রুটে রিভার ক্রুজটি যাবে সেটি ‘ইন্দো-বাংলা প্রোটোকল রুট’ নামে পরিচিত। ইতিমধ্যে দুই দেশের সম্মতিতে ‘ট্রেড অ্যান্ড ট্রানজিট’ শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন তা যুক্ত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের বিলাসবহুল রিভার ক্রুজের সঙ্গেও। জানা গিয়েছে, প্রমোদতরিটি ওপার বাংলায় কাটাবে মোট ১৫ দিন।
এরপর অসমের ধূবড়ি, গোয়ালপাড়া, গৌহাটি, বিশ্বনাথ পেরিয়ে ব্রহ্মপুত্রের তীরে ডিব্রুগড়ের কাছে বগিবিলে যাত্রা শেষ করবে ক্রুজটি। সুন্দরবনের মতো ইউনেস্কো স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট থেকে শুরু করে আরও নানা জায়গা দেখা যাবে।