নানা বিতর্কিত ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার লিওনেল মেসির ভারত সফর। শেষদিকে বড় ধরনের কোনো অঘটন না ঘটলে মেসির সফরের শুরুটা হয়েছিল বিশৃঙ্খলা, বিতর্ক ও গন্ডগোল দিয়ে। আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তিকে ঠিকভাবে দেখতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেডিয়াম ভাঙচুর ও লুটপাট চালান সমর্থকরা। এমন ঘটনার জন্য মেসিকেই দায়ী মনে করছেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার।
মেসির ভারত সফর নিয়ে দেশটির ক্রীড়া সাময়িকী স্পোর্টস্টার এ কলাম লেখেন গাভাস্কার। সেখানে তিনি দাবি করেন, মেসি নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। তার ভাষ্য, চুক্তির শর্ত প্রকাশ্যে না থাকলেও যদি মেসির এক ঘণ্টা স্টেডিয়ামে থাকার কথা থাকে এবং তিনি মাত্র ২০–২২ মিনিট অবস্থান করে চলে যান। তবে উচ্চমূল্যের টিকিট কাটা দর্শকদের হতাশ হওয়াই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে দায়িত্ব মেসি ও তার সহযোগীদের ওপরও বর্তায়।
কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের মতে, মেসির যতক্ষণ মাঠে থাকার কথা ছিল ততক্ষণ তিনি থাকেননি। আর এ কারণেই স্টেডিয়াম ভাঙচুর ও লুটপাটের জন্য মেসিকে দায়ী করেন গাভাস্কার।
গাভাস্কার কলামে আরও লেখেন, 'হ্যাঁ, এটা সত্য যে মেসি রাজনীতিবিদ ও তথাকথিত ভিআইপিদের দ্বারা ঘিরে ছিলেন। তার তার কোনো নিরাপত্তা হুমকি ছিল না। তার কি শুধু স্টেডিয়ামে ঘুরে বেড়ানোর কথা ছিল, নাকি কার্যকর কিছু পেনাল্টি কিকও নিতে পারতেন? যদি সেটি হতো তাহলে চারপাশের সবাইকে সরতে হতো এবং উপস্থিত দর্শকরাও তাদের নায়ককে দেখতে পারেন যেটির জন্য তারা এসেছিলেন।'
১৩ ডিসেম্বর কলকাতায় মেসির ভারত সফরের সূচনা হয়। সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে সাদা অডি গাড়ি থেকে নেমে যুবভারতী স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতেই গ্যালারিতে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে। তার সঙ্গে ছিলেন লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পল। অল্প সময়ের মধ্যেই রাজনীতিবিদ, ভিআইপি, পুলিশ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীদের ভিড়ে মেসি আড়াল হয়ে যান। সাধারণ দর্শকরা তাকে স্পষ্টভাবে দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে চেয়ার ও বোতল ছোড়া এবং স্টেডিয়ামের সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
মেসিকে তখন বিভ্রান্ত ও বিস্মিত দেখাচ্ছিল। এরপর পরিস্থিতি ক্রমশ আরও খারাপ হতে থাকে। অনুষ্ঠানের আয়োজক শতদ্রু দত্ত বারবার মাইকে ভিড় সরানোর অনুরোধ জানালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সৌরভ গাঙ্গুলীর আগমনের খবরে জটিলতা আরও বাড়ে। এ অবস্থায় বাইরে অপেক্ষমাণ শাহরুখ খান স্টেডিয়ামে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেন, আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মাঝপথ থেকে ফিরে যান।