
১৫ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে পরের ৩০ মিনিটের মধ্যে চার গোল হজম। মাঠের দুই প্রান্তে রেয়াল মাদ্রিদের পারফরম্যান্স ফুটে উঠছে এতেই। আক্রমণে ক্ষুরধার হলেও রক্ষণে যাচ্ছেতাই। বার্সেলোনার কাছে পরাজয়ের পর কার্লো আনচেলত্তি দায় দিলেন নড়বড়ে রক্ষণভাগকেই। রেয়াল মাদ্রিদ কোচ তুলে ধরলেন রক্ষণভাগে চোটজর্জর অবস্থার কথাও।
লা লিগায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াইয়ে রোববার রেয়াল মাদ্রিদকে ৪-৩ গোলে হারায় বার্সেলোনা। কিলিয়ান এমবাপের জোড়া গোলে রেয়াল ১৫ মিনিটের মধ্যে এগিয়ে যায় দুই দফায়। তবে প্রথমার্ধেই প্রবল প্রতাপে ফিরে চার গোল করে বার্সেলোনা।
দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপে পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক। তবে রেয়াল পারেনি বাকি আরেকটি গোল বের করে সমতা ফেরাতে।
ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি কাঠগড়ায় তুললেন দলের রক্ষণভাগকেই।
“আমরা কিছু পরিষ্কার ভুল করেছি, যেগুলোর খেসারত হিসেবে গোল হজম করতে হয়েছে। শীর্ষ মানের দলের বিপক্ষে এমন ম্যাচে খেলার চূড়ায় থাকতে হয়। রক্ষণ ও আক্রমণে ভালো করতে হয়। আমরা আক্রমণভাবে ভালো করেছি, কিন্তু ওই ৩০ মিনিটে (চার গোল হজম করার) আমরা রক্ষণে ভুল করেছি অনেক।”
“ওপরে আমরা যতগুলো সুযোগ তৈরি করেছি, সবগুলোই ছিল পরিষ্কার কারণ আমরা আক্রমণ ভালো করেছি। তিনটি গোল করেছি, আরও দুটি ছিল অফসাইড। আক্রমণে আমাদের পরিকল্পনার ছাপ ছিল স্পষ্ট। তবে রক্ষণে আমরা ভালো করতে পারিনি। ভুলে যাবেন না, পাঁচজন ডিফেন্ডারকে পাইনি আমরা, এটা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।”
রেয়ালের প্রথম পছন্দের ডিফেন্ডার দানি কার্ভাহাল, আন্টোনিও রুডিগার, এদের মিলিতাও, ফেরলদ মঁদি, ডাভিড আলাবা, সবাই চোটের কারণে মাঠের বাইরে। মৌসুমজুড়েই তাদের রক্ষণবাজ চালাতে হয়েছে জোড়াতালি দিয়ে। নানা সময়ে ঠেকার কাজ চালাতে রক্ষণভাগে খেলা এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাও চোটের কারণে আপাতত বাইরে।
এই মৌসুমে বিভিন্ন আসরে বার্সেলোনার সঙ্গে চার দেখায় প্রতিবারই হেরেছে রেয়াল। চার ম্যাচে গোল হজম করেছে রেকর্ড ১৬টি। কোচ আনচেলত্তি এখানেও বললেন রক্ষণভাগের ঘাটতির কথা।
“আমাদেরকে রক্ষণে আরও ভালো করতে হতো। আজকের পারফরম্যান্সেও তা আরও ফুটে উঠেছে। আমরা রক্ষণ ভালোভাবে সামলাতে পারিনি। এটা লো-ব্লক রক্ষণ কৌশলের কারণে নয়। মূল ব্যাপার হলো, আমরা রক্ষণে বাজে করেছি। ওপরে উঠে রক্ষণ সামলানো বরং আরও সহজ।”
রেয়াল মাদ্রিদে দ্বিতীয় দফায় কোচের দায়িত্বে দুটি করে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ মোট ১১টি ট্রফি জয় করেছেন আনচেলত্তি। তবে এই মৌসুমের পারফরম্যান্সে, বিশেষ করে গত কয়েক মাসে তার ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছে কি না, এই প্রশ্নে কোচ বললেন, “যে কেউ তার মতো করে মূল্যায়ন করতে পারে…।”
এই মৌসুম শেষে রেয়ালের দায়িত্ব থেকে তার সরে যাওয়া এবং শাবি আলোন্সোর দায়িত্ব পাওয়া এখন বলা যায় কেবল সময়ের ব্যাপার। আনুষ্ঠানিক কিছু অবশ্য এখনও জানানো হয়নি। আনচেলত্তিকে জিজ্ঞেস করা হলো, এটিই তার শেষ এল ক্লাসিকো কি না। তিনি এড়িয়ে গেলেন প্রসঙ্গ।
“এটা মৌসুমের শেষ ক্লাসিকো। মৌসুমটা ভালোভাবে শেষ করতে হবে আমাদের এবং বাকি তিনটি ম্যাচ জিততে হবে।”
রেয়ালের পরের ম্যাচ মায়োর্কার সঙ্গে বুধবার।