Image description

কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার পরও তা বাতিল করা হয়েছে। আবার একই আসনে বিএনপিতে নতুন যোগদান করা আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সৈয়দ এহসানুল হুদাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এসব নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মাঠের পরিস্থিতি।

সৈয়দ এহসানুল হুদার মনোনয়ন বাতিল করে পূর্বে ঘোষিত দলীয় প্রার্থী শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে মনোনয়ন ফিরিয়ে দেওয়ায় দাবিতে এবং মনোনয়ন পরিবর্তনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে নির্বাচনী এলাকা।

প্রায় প্রতিদিনই বিএনপির নেতাকর্মীরা মিটিং-মিছিল ও রেলপথ অবরোধ করছেন।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে বাজিতপুর উপজেলার সরারচরে ঢাকা-কিশোরগঞ্জ ও চট্টগ্রাম-ভৈরব-জামালপুর রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। একই সময় বিএনপির শত শত নেতাকর্মী সরারচরে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।

অবরোধের কারণে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ‘কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি মানিকখালী রেলস্টেশনে আটকা পড়ে।

বিকাল ৫টায় অবরোধ তোলার পর প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটি সরারচর স্টেশনে আসে।

এর আগে গত বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) একই দাবিতে বাজিতপুরের সরারচর স্টেশন এলাকায় কয়েক ঘণ্টাব্যাপী রেলপথ অবরোধ করে শেখ মজিবুর রহমান ইকবালের সমর্থক বিএনপির নেতাকর্মীরা। অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম-ভৈরব-জামালপুর রেলপথের ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি কুলিয়ারচর রেলস্টেশনে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকা পড়ে। ওইদিন ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রেলপথে চলাচলকারী আন্তঃনগর কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে ঢাকা উদ্দেশে ছেড়ে যায়।


প্রসঙ্গত, গত ২২ ডিসেম্বর নিজের বাবার গড়া দল ‘বাংলাদেশ জাতীয় দল’ বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা। এরপর এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে আগে ঘোষিত শেখ মজিবুর রহমান ইকবালের পরিবর্তে সৈয়দ এহসানুল হুদাকে বিএনপির মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করেন ইকবাল সমর্থকরা। উত্তপ্ত হয়ে উঠে আসনভুক্ত রাজনৈতিক মাঠ।

এদিকে আজ শুক্রবার বিকালে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন কিশোরগঞ্জ-৫ আসনভুক্ত বাজিতপুর ও নিকলী উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী।

এতে বক্তব্য দেন বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফজল হোসেন, ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহরিয়ার শামীম প্রমুখ।

বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশে বলেন, ‘বিএনপি প্রথম দফায় শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু জনসাধারণের আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে মনোনয়ন পরিবর্তন করে সৈয়দ এহসানুল হুদার মতো গণবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিকে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া এই সিদ্ধান্তে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ নির্যাতিতদের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে’।

বক্তারা আরো বলেন, ‘বাজিতপুর-নিকলীর তৃণমূল নেতাকর্মীরা কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া এই সিদ্ধান্ত কখনোই মানবে না। রাজপথেই তারা মনোনয়নের ফয়সালা করবে। ইকবালকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে পেতে নেতাকর্মীরা প্রয়োজনে রক্ত দিবে, এরপরও রাজপথ ছাড়বে না’।

বক্তাদের দাবি, এসব কারণে দলের স্বার্থেই মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে মনোনয়ন ফিরিয়ে দিতে হবে। নয়তো এ আসনে বেহাত হবে বিএনপির নিশ্চিত বিজয়।