Image description

সর্বশেষ ২০০৯ সালে ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হয়েছিলেন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সাবেক সভাপতি শিশির মনির। এরপর ঢাবির আরেক ছাত্র ইয়াসিন আরাফাত সেক্রেটারি জেনারেল এবং পরপর দুইবার কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বে ছিলেন না তিনি। ফলে শিশির মনিরের সেক্রেটারি মনোনীত হওয়ার পর ১৭ বছর ধরে শিবিরের শীর্ষ পদের বাইরে ছিল ঢাবি শাখা। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বর্তমান দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা নতুন সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে ভেঙেছে এই ‘অচলায়তন’।

জানা গেছে, ছাত্রশিবিরের নবমনোনীত সেক্রেটারি জেনারেল সিবগাতুল্লাহ ইতিপূর্বে কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, প্রকাশনা সম্পাদক, শিক্ষা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে বিএসএস ও এমএসএস সম্পন্ন করে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়ন করছেন।

সিবগাতুল্লাহর গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও। বাবা মাওলানা আব্দুল হাকিম ঠাকুরগাঁও-২ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী। তিনি জেলা জামায়াতের সাবেক আমির।

ছাত্রশিবির সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০৯ সেশনের জন্য সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হয়েছিলেন ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি শিশির মনির। তবে সে বছরের শেষে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে ‘বাদ’ পড়েন তিনি। তার স্থলে নতুন সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হন আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে দায়িত্বগ্রহণের কিছুদিন পরেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন মামুন। একই সঙ্গে কার্যকরী পরিষদের আরও ২৫ সদস্য পদত্যাগ করেন। শিবিরের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ‘বিদ্রোহ’ হিসেবে দেখা হয় এই ঘটনাকে। এরপর সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হন ডা. ফখরুদ্দীন মোহাম্মদ মানিক।

তবে শিশির মনিরের সভাপতি নির্বাচিত না হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা থাকলেও তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। একই সাথে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গেও সব সময় ভাল সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। ছাত্রশিবিরের নেতাদের সঙ্গেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে তাকে।

তবে এর আগে বিভিন্ন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির নেতারা সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্বে এলেও শিশির মনিরের পর দীর্ঘ ১৭ বছর বেশ ব্যতিক্রম দেখা গেছে। মাঝে ২০১৬ সেশনে সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত। পরবর্তী ২ বছর সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। তবে ঢাবি শাখা শিবিরের কোনো দায়িত্বে তিনি ছিলেন না। তিনি বিভিন্ন সময়ে ঢাকা আলিয়া, মতিঝিল থানা ও ঢাকা মহানগরী পূর্ব শাখার বিভিন্ন দায়িত্ব পালন শেষে ২০১১ সালে ঢাকা মহানগরী পূর্ব শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় এইচআরডি সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক ও ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

জানতে চাইলে ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিশির মনিরের পর ঢাবির কেউ শীর্ষ পদে ছিলেন না এটি সঠিক নয়। ইয়াসিন আরাফাত ভাই ঢাবি শিক্ষার্থী। যদিও তিনি মহানগর পূর্বে দায়িত্ব পালন করেছেন।