Image description
 

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মজলিস মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদীর ওপর সংঘটিত বর্বরোচিত ও প্রাণঘাতী হামলার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশ্যে ‘২৪-এর পরাজিত শক্তি’ প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে নেমেছে। তফসিল ঘোষণার পরও নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন কেন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ও সর্বাত্মক অভিযান শুরু করতে পারেনি—এই প্রশ্ন আমাদেরকে যুগপৎ বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ করেছে।

 

শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের মাসিক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি পরিচালনা করেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।

 

মাওলানা মামুনুল হক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ক্ষমতার মোহে কেউ যেন পরাজিত শক্তির প্রতি বিন্দুমাত্র অনুকম্পা না দেখায়। যে যা করেছে, তার দায় তাকেই নিতে হবে। কাউকে আশ্রয়–প্রশ্রয় দেওয়ার দুষ্টচিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। অন্যথায় পরিণতি শুভ হবে না—এ ব্যাপারে আমরা হুঁশিয়ার করছি। ভোট তো ফ্যাসিস্টদেরও ছিল, কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সব দাবি ও অহংকার ভেঙে পড়ে। হাদীর রক্ত ইনশাআল্লাহ জনতাকে আরও নির্ভীক করে তুলবে।

তিনি বলেন, হাদীর ওপর হামলাকারীরা কারা—আমরা অনুমান করতে পারি। ফ্যাসিবাদের প্রতীকের প্রতি যারা মায়াকান্না দেখায়, ভারতীয় আধিপত্যকে যারা ‘প্রতিবেশী’ নাম দিয়ে বৈধতা দেয়, জরিপের নামে যারা আওয়ামী লীগকে ‘নরমালাইজড’ করতে চায়, জনতার প্রতিরোধকে যারা ‘মব’ আখ্যা দেয় এবং উসকানিদাতাদের ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে রক্ষা করে—তাদের সবাইকে থেমে যেতে হবে।

মামুনুল হক আরো বলেন, আমরা বারবার বলছি—জাতীয় নির্বাচনের আগে আলাদা দিনে গণভোট দিন। এই দাবিতে আমরা সারা দেশ চষে বেড়িয়েছি এবং দেখেছি জনগণ ব্যাপকভাবে এই দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। কিন্তু সরকার একটি দলকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে জনতার ন্যায্য দাবির প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি।

তিনি পুনরায় হুঁশিয়ার করে বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষ ঐক্যবদ্ধভাবে ‘২৪-এর পরাজিত শক্তি’কে প্রতিহত ও প্রতিরোধ না করলে তারা বাংলাদেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। এদের হৃদয়ে বাংলাদেশ নেই; এদের হৃদয়ে রয়েছে আধিপত্যবাদী ভারত। ভারতের আশ্রয়–প্রশ্রয়ে থেকেই তারা আজীবন এই অপকর্ম করে এসেছে।

নির্বাহী বৈঠক শেষে শুক্রবার ইন্তেকাল করা সংগঠনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা হেলালুদ্দীন আহমেদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন— সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ; নায়েবে আমির মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী ও মাওলানা মাহবুবুল। যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আব্দুল আজীজ, মুফতি শরাফত হোসাইন ও মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান প্রমুখ।