Image description
 

গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালানোর কিছুদিন পর থেকেই  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবর বার বার প্রচার হচ্ছে। দলের প্রায় সকল সিনিয়র পর্যায়ের নেতারা তারেক রহমান খুব দ্রুতই দেশে ফিরছেন এরকম বক্তব্য গণমাধ্যমে বারবার দিয়ে আসছেন, তবে এখনো দেশে ফেরার বিষয়টি পরিষ্কার হয়নি বলেই জানা গেছে। 

তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে ইদানিং দেশে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে একপ্রকার ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে- কেন তিনি দেশে আসছেন না, নাকি দেশে আসতে পারছেন না, নাকি দেশে আসতে দেওয়া হচ্ছে না- এরকম নানা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ জনগণ থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে। 

তারেক রহমানের মা তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ থাকার পরও তিনি দেশে ফিরতে না পারার কারণ সত্যিই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষের মনে এক প্রকার বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। তারেক রহমানও অনেকটা পরিষ্কার করেই বটে জানিয়ে দিয়েছেন দেশে ফেরা তার একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, তাহলে এখন প্রশ্ন- দেশে ফেরা কি এমন বড় সমস্যার কারণে আটকে আছে? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ কিছু প্লাটফর্মে উঠে এসেছে শেখ হাসিনার ভাতিজি টিউলিপ সিদ্দিকীর নাম, তিনি নাকি তারেক রহমানের দেশে আসতে বাধার সৃষ্টি করছেন, আসলে কি সেই ঘটনা?  ঘটনা কি আসলেই সত্য নাকি গুজব ?

তবে তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিকীর বাধাগ্রস্থ করার এমন  প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে যে, ব্রিটিশ সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের প্রভাব বা রাজনৈতিক কারণে তারেক রহমানকে দেশে ফেরা থেকে বিরত রাখা হচ্ছে। টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে অনেকে এই ধরনের গুজব ছড়িয়েছেন।

তবে এই দাবির পক্ষে কোনো সরকারি নথি, অফিসিয়াল বিবৃতি বা আদালতের নির্দেশ পাওয়া যায়নি যা দেখায় টিউলিপ সিদ্দিকের প্রভাবের কারণে তারেক রহমানের দেশে আসা রোধ করা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ থাকলেও এটি তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়নি। বরং সরকার জানিয়েছে, কোনো সমস্যা বা জটিলতা থাকলে পূর্ণ সহযোগিতা দেওয়া হবে, এবং দেশে ফেরা সম্পূর্ণরূপে তারেক রহমানের উপর নির্ভর করবে।

বাংলাদেশের সরকার জানিয়েছে, যদি তারেক রহমান দেশে আসতে চান, তার জন্য আইনগত বা প্রশাসনিক কোনো বাধা নেই। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, এক দিনের মধ্যেই ‘ওয়ান-টাইম ট্রাভেল পাস’ দেওয়া যাবে যদি তারেক আবেদন করেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, সরকারের কোনো নিষেধাজ্ঞা বা আটকা নেই।

সারমর্ম অনুযায়ী- টিউলিপ সিদ্দিকের কারণে তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথে কোনো বাধা নেই, সরকারের পক্ষ থেকে দেশে আসার জন্য আইনগত কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই, এবং ‘ওয়ান-টাইম’ ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে ফেরার ব্যবস্থা করা সম্ভব।

বর্তমানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, “টিউলিপ সিদ্দিকের কারণে তারেক রহমান দেশে আসতে পারছেন না” এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। এটি গুজব বা অনুমান হিসেবে বিবেচিত। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, তারেক রহমান চাইলে দেশে ফিরতে পারবেন এবং কোনো আইনগত বা প্রশাসনিক বাধা নেই।