বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক মন্তব্যে বলেছেন, ‘একজন ভালো আর সবাই খারাপ—আওয়ামী লীগ আমলের এ প্রচার এখনো চলছে।’ এটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটার পরিবর্তন হতে হবে।’
গতকাল রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজয়ের মাস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি। এতে ছাত্রদলের সারা দেশের ৭৫টি ইউনিটের বিভিন্ন পর্যায়ের এক হাজারের বেশি নেতা অংশ নেন।
কারো নাম উল্লেখ না করে জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে। দুঃখজনকভাবে হলেও ৫ তারিখের (গত বছরের ৫ আগস্ট) পরে কেন জানি মনে হচ্ছে সেটির বোধ হয় পরিবর্তন হয়নি। এটির পরিবর্তন হওয়া বাঞ্ছনীয়। এটির পরিবর্তন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে মানুষ বিভিন্ন মতামত দেবে। এ অধিকার তার আছে। বক্তব্য রাখার অধিকার তার আছে। কিন্তু অবশ্যই একজন ভালো আর বাকি সবাই খারাপ, এটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এ ধারণার পরিবর্তন হতে হবে। এটি গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ডেঞ্জারাস (বিপজ্জনক) একটা ব্যাপার।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা দেশকে সৎ মানুষের শাসন দেব, আমরা দেশে ন্যায়বিচার স্থাপন করব, আমরা দেশে এই করব—এসব ভেগ টার্মে অনেকের অনেক বক্তব্য আছে। কিন্তু আজ সারা দিন একদম স্পেসিফিক প্রিসাইসলি (সুনির্দিষ্টভাবে) মানুষকে টাচ করে, মানুষের জীবনকে স্পর্শ করে, মানুষের জীবনকে গড়ে তোলে—এ রকম প্রিসাইজ আলোচনা আর কোনো রাজনৈতিক দল করেছে?’
দেশের বিভিন্ন আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থীদের জন্য কাজ করতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘হয়তো তুমি একজনকে পছন্দ করতে, সে হয়তো (মনোনয়ন) পায়নি। যে পেয়েছে তার সঙ্গে হয়তো তোমার সম্পর্ক অতটা নয়, একটু কম সম্পর্ক। ভাইরে, তুমি তো প্রার্থীর জন্য কাজ করছ না, তুমি তো তোমার ধানের শীষের জন্য কাজ করছ।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির যেসব পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলো জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘বিএনপির পরিকল্পনাগুলোর সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আগামী দুই মাসের কাজ হলো জনগণকে বিএনপির পরিকল্পনাগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে তাদের সমর্থন জোগাড় করা।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বিএনপির চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী সাইমুম পারভেজ, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনা করেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।