আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে কৌশলে পরিবর্তন এনেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। মিত্র দলগুলোকে আগে যতটা সংসদীয় আসন ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিল, সেই অবস্থান থেকে দুই দলই সরে এসেছে। বিএনপি আগে ৫০ আসনের কথা বললেও এখন প্রাথমিকভাবে মিত্র দলগুলোকে ১৩টি আসন নিশ্চিত করেছে। আর জামায়াত ১০০ আসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও, এখন বলছে আগের ঘোষণাটি আনুষ্ঠানিক নয়।
আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে পারে এমন আভাস পেয়ে বিএনপি ও জামায়াতে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে বলে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগ মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আসন নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। এরই মধ্যে বিএনপির কয়েকটি মিত্র দল ক্ষুব্ধ হয়ে জোট ছেড়েছে। আরও কয়েকটি দল সম্পর্ক ত্যাগ করতে পারে বলে আভাস দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখন এই দলগুলোর গন্তব্য হতে পারে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোট। তবে জামায়াতও অবস্থান পরিবর্তন করায় ছোট দলগুলোর জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে গেছে।
অন্যদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকা তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কোন জোটে যাবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিএনপি গত বছরের ডিসেম্বরের আলোচনায় অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বকে ৩০টি আসন ছাড়ার কথা বললেও এখন এনসিপিকে আটটির বেশির দিতে রাজি হচ্ছে না। জামায়াত অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আগে এনসিপিকে ৬০-৭০ আসন দেওয়ার কথা বললেও এখন তা ৩০-৩৫ আসনে নেমেছে।
কাঙ্ক্ষিত আসন না পেয়ে গতকাল শুক্রবার বিএনপির সঙ্গ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে দলটির ১৮ বছরের পুরোনো মিত্র লেবার পার্টি। প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছে নাগরিক ঐক্য ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। এ ছাড়া আসন না পেয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বিএনপির মিত্রজোট গণতন্ত্র মঞ্চ ছেড়েছে আগেই।
গত জানুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে ২৯৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে জামায়াত। পরে তারা ইসলামী আন্দোলনসহ আটটি দলের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতার ঘোষণা দেয়। আরও দুই-তিনটি দল এই সমঝোতায় যোগ দিতে পারে। তবে ইসলামী আন্দোলন ইতোমধ্যে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এদের সঙ্গী বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসও শখানেক আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
বিএনপি গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৭২ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। দলের একাধিক নেতা প্রার্থিতার তীব্র লড়াইয়ে থাকায় ১৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। বাকি ১৩টি মিত্রদের জন্য রাখা হয়েছে। বাকি দুটি নিয়ে মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ভোটে লড়াইয়ের আভাস
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ধারণা করা হচ্ছিল, আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচনে বিএনপি একতরফা জয় পাবে। দলটির ঘোষণা ছিল, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের নিয়ে জোটবদ্ধ নির্বাচন এবং সরকার গঠন করা হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম গত ২৭ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিলেন, মিত্র দলগুলোকে ৫০ আসন ছাড় দেওয়া হবে।
এখন বিএনপির নেতারা বলছেন, সেই সময়ে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে সংস্কারের প্রস্তাবে মিত্রদের পাশে পাওয়াসহ নানা কারণে এই অবস্থান ছিল। কিন্তু নির্বাচন ঘনিয়ে আসার পর ভোটের মাঠে সেই পরিস্থিতি নেই। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, বিএনপির একতরফা জয় আর নিশ্চিত নয়। তাই নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।
বিএনপির কাছ থেকে প্রত্যাশিতসংখ্যক আসন ছাড় না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বৃহস্পতিবার বলেন, ‘আগে যেমন বলত আমরা (বিএনপি) দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করব। এখন দুই-তৃতীয়াংশ বলেই না, অর্ধেক আসনে জিতবে কিনা চিন্তা করে।’ প্রার্থিতা নিয়ে বিএনপির কোন্দলে জনগণের আস্থা নষ্ট হয়ে দলটির এই অবস্থা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মান্না।
জোট ত্যাগ করা লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান গতকাল সমকালকে বলেন, গত ১৫ মাসে বিএনপির যে কাজকর্ম, তাতে তাদের জয় আর নিশ্চিত নয়। একা ১৫১ আসন পাবে কিনা, সংশয় তৈরি হয়েছে।
শরিক দলের অন্য নেতারা বলছেন, নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, প্রার্থিতা নিয়ে কোন্দল, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না থাকার সুবাদে একসময়ের ‘জুনিয়র পার্টনার’ থেকে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে চেষ্টা করছে জামায়াত। আগামী নির্বাচন নিয়ে যেসব জরিপ আসছে, তাতেও এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) জরিপে বলা হয়েছে, ৩৩ শতাংশ ভোটার বিএনপিকে এবং ২৯ শতাংশ জামায়াতকে ভোট দিতে পারে। যদিও জামায়াতের দাবি, তাদের সমর্থন আরও বেশি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অবশ্য কয়েক মাস আগে থেকে নেতাকর্মীদের সাবধান করছেন, আগামী নির্বাচন কঠিন হবে। এখন একই কথা বলছেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। তারা সমকালকে বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের কারণে মিত্রদের আসন ছেড়ে দেওয়া আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। নতুন নিয়মের ফলে মিত্র দলের নেতারা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবেন না। তারা নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করে জিততে পারবেন, এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হলে প্রতিটি আসন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ফলে ‘উদার হাতে আসন বিলানো’ সম্ভব নয়।
এই নেতারা জানান, শরিকদের ছেড়ে আসন হারানোর ঝুঁকি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে বিএনপি তাদের মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাও ঘোষণা হয়নি।
জামায়াত দলীয়ভাবে তিনটি জরিপ করেছে। সর্বশেষ জরিপ করেছে নভেম্বরে। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের তত্ত্বাবধায়নে ২০১টি আসনে বিশদ জরিপ করানো হয়েছে। ৬০০ পৃষ্ঠার ফলাফল প্রতিবেদন রয়েছে। এর বরাত দিয়ে দলটির একজন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সমকালকে বলেন, যেসব আসনে অতীতে জামায়াত পাঁচ হাজার ভোটও পায়নি, সেগুলোতে এখন জয় বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। তাই যাকে তাকে আসন দিয়ে, সম্ভাবনা নষ্ট করার সুযোগ নেই। আসন ছাড়া হবে, জরিপ প্রতিবেদন এবং মাঠের বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী।
বিএনপির কাছে ২২২টি চেয়ে পাচ্ছে ১৩ আসন
শরিক দলগুলো অন্তত ২২২টি আসনের প্রার্থী তালিকা দিয়েছিল বিএনপিকে। দলটির সূত্রে জানা গেছে, মিত্র দলগুলোর জন্য প্রাথমিকভাবে ১৩টি আসন রাখা হয়েছে। এগুলো হলো গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা-১৭, জাতীয় পার্টির (জাপা) মোস্তফা জামাল হায়দার পিরোজপুর-১, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ ঢাকা-১৩, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর পটুয়াখালী-৩ এবং রাশেদ খান ঝিনাইদহ-২, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম লক্ষ্মীপুর-১, জেএসডির আ স ম আবদুর রব অসুস্থ হওয়ায় তাঁর স্ত্রী তানিয়া রব লক্ষ্মীপুর-৪, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক চট্টগ্রাম-১৪ এবং দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ কুমিল্লা-৭, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের উবায়দুল্লাহ ফারুক সিলেট-৫ এবং মনির হোসেন কাসেমী নারায়ণগঞ্জ-৪।
জাপা ও বিএলডিপির নিবন্ধন নেই। এই দুই দলের নেতাদের বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে হবে। ফলে বিএনপি প্রকৃতপক্ষে আসন ছাড়ছে ১১টি। তবে লক্ষ্মীপুর-৪ আসন শেষ পর্যন্ত বিএনপি নাও ছাড়তে পারে বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে।
জমিয়ত মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর জন্য নীলফামারী-১ এবং নায়েবে আমির জুনায়েদ আল হাবিবের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। এই দুটি আসন নিয়ে আলোচনা চলছে।
জমিয়ত এক সময়ে ইসলামী দলগুলোর সমঝোতায় ছিল। জামায়াত বিরোধিতায় বিএনপির সঙ্গে গেছে। ১২টি আসন চেয়েছিল জমিয়ত। পাঁচ আসন পাওয়া নিশ্চিত বলে শোনা যাচ্ছিল। সম্মানজনক আসন না পেলে জোট ছাড়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল দলটি। জুনায়েদ আল হাবিব সমকালকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। আলোচনার পরই বলা যাবে, জমিয়ত কত আসন পাবে। ২০১৮ সালেই চারটি আসন পেয়েছিল।
নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকারে পরিষদ ২৫ আসনের তালিকা দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। শেষ পর্যন্ত দুটি আসন নিয়ে জোটে থাকবেন কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেছেন, আসন সমঝোতার আলোচনার আগে তা বলতে পারছি না। ২০২২ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে রয়েছে গণ অধিকার। আগামী নির্বাচনেও একসঙ্গে থাকতে চায়।
বিএনপির মিত্র হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চ জোট, ১২ দলীয় জোট, ১১ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, বিজেপি, গণঅধিকার পরিষদ, এনডিএম, চারদলীয় বাম জোট, লেবার পার্টিসহ প্রায় ৫৭টি দল ও জোট রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ দলেরই নিবন্ধন নেই।
গত অক্টোবরে এসব দলকে প্রার্থী তালিকা দিতে বলেছিল বিএনপি। এলডিপি ৪০, ১২-দলীয় ২১, গণফোরাম ১৫, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ৯, বিজেপি ৫, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ৬, এনডিএম ১০টি আসন চেয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মিত্র যারা আছেন তাদেরগুলো এবং দু-একটি দলীয় প্রার্থীর সিদ্ধান্ত আসতে পারে। বাকি ২৮ আসনের তালিকা যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
মিত্র দলের নেতারা জানান, বিএনপির ঘোষিত তালিকায় তাদের আসন রয়েছে। যেসব আসনে এর আগে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। সেগুলোতেও বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করায় তারা বিস্মিত। কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে ১২-দলীয় জোটের শরিক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাকে সহায়তার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার এ আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে জাতীয় দল আগামী সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে পরিকল্পনা তুলে ধরার কথা বলেছে।
১২-দলীয় জোট নেতারা সমকালকে বলেন, তারেক রহমানের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে বিএনপি। বিএনপির একটি ‘সিন্ডিকেট’ প্রভাবিত হয়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। বেইমানির অভিযোগ করে জোট ছেড়েছেন ঝালকাঠি-১ আসন না পাওয়া লেবার পার্টির ইরান।
১১-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নড়াইল-২ আসনে ২০১৮ সালে বিএনপি জোটের প্রার্থী ছিলেন। এবার এ আসনে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে।
ছয়দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ ১২০ আসনে নিজেদের প্রার্থীর ঘোষণা করেছিল। এই জোটকে তিনটি আসনের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনার কথা দিয়েছিল বিএনপি; কিন্তু তারা তা করেনি। এতে সহযোগী দলগুলো ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হয়েছে।
বেশি দিতে নারাজ জামায়াত চুপ
গত ৩ অক্টোবর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এমনও হতে পারে, সমঝোতা করতে করতে শেষ পর্যন্ত ১০০ আসনও আমাদের ছেড়ে দিতে হতে পারে। কমপক্ষে ২০০ আসনে আমরা ইনশাআল্লাহ নির্বাচন করব।’
ইসলামী আন্দোলন ইতোমধ্যে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এ দলটি আভাস দিয়েছে ১২০টি আসনে লড়তে চায়। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসও শ-খানেক আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এ দলটি ২৫-৩০টি আসনে নির্বাচন করতে চায় সমঝোতা করে। আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিসও সমান সংখ্যক আসন চায়। অন্য পাঁচ দলও চারটি-পাঁচটি করে আসন চায়।
এনসিপি, এবি পার্টি এবং বিএনপির জোট থেকে বেরিয়ে আসা কয়েকটি দলকেও নির্বাচনী সমঝোতায় টানার চেষ্টা করছে জামায়াত। দলটির নেতারা বলছেন, সবাইকে মিলিয়েও ৬০-৭০টির বেশি আসন ছাড়া সম্ভব নয়।
জামায়াতের এক নেতা হবিগঞ্জ-৪ আসনের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, খেলাফত মজলিস আমির আবদুল কাদের ২০১৮ সালে ওই আসনে বিএনপি জোটের প্রার্থী ছিলেন। ওই আসনে তাঁরই এবার জামায়াত জোটের প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল। তবে বিশেষ কারণে জামায়াত দলীয় প্রার্থীকে সরিয়ে দিয়ে একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে প্রার্থী করেছে। বিদেশ থেকে ডেকে এনে প্রার্থী করার পর তাঁকে পরিবর্তন করা ঠিক হবে না। কিছু আসনে জামায়াতের জয়ের সম্ভাবনা বেশি, সেগুলোও নির্বিচারে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
গোলাম পরওয়ারের ১০০ আসন ছাড়ার ঘোষণাকে অনানুষ্ঠানিক বলছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং আট দলের সমন্বয়ক হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি সমকালকে বলেছেন, আসন কীভাবে সমঝোতা হবে– এই আলোচনা ৮ ডিসেম্বর শুরু হবে। জরিপের তথ্য, মাঠের পরিস্থিতিসহ প্রতি আসন ধরেই আলোচনা হবে। এরপর ঠিক হবে, কোন দল কত আসনে লড়বে। আসন না পেয়ে যেসব দল বিএনপিকে ছাড়ছে, তাদের জন্য জামায়াতের দরজা বন্ধ নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।