Image description

সম্প্রতি আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতে অবস্থানকারী তার এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির সঙ্গে ফোনালাপে জানান, সেখানে অবস্থান করা আর নিরাপদ নয়। সম্প্রতি তিনি ওই ব্যক্তির (নিরাপত্তার জন্য নাম ও পরিচয় প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক) সঙ্গে টেলিফোনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার মৃত্যুদণ্ডের রায়, ভারত সরকারের আশ্রয় দেওয়া এবং প্রত্যর্পণের বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিন মিনিটের ওই কথোপকথনের অডিও রেকর্ড আমার দেশ-এর হাতে এসেছে।

পূর্ব পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতার সূত্র টেনে ওই ব্যক্তি টেলিফোনে কামালের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ চান। কামাল আপাতত দেখা করতে অসম্মতি জানিয়ে বলেন, আপাতত দেখা করতে চাচ্ছি না। কয়েকদিন পরে প্রয়োজনে আমিই ডেকে কথা বলব। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি তো আপনার বাসার সামনে চলে এসেছি। যেহেতু এসেই পড়েছি, একটু দেখা করে দু-একটি কথা বলেই চলে যাব’। এ পর্যায়ে কামাল বলেন, ‘আমি এখন ওই ঠিকানায় থাকি না। ওইখান থেকে অন্যত্র চলে এসেছি। আর ভারত তাদের দেশে আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। আমাদেরও এমন কোনো কাজ করা ঠিক নয়, যাতে তাদের সমস্যা হয়।’

নতুন ঠিকানার কথা গোপন রেখে ওই ব্যক্তিকে কামাল আরো বলেন, ‘আমি তো এখানেও নিরাপদ মনে করছি না। নতুন কোনো চিন্তা করতে হচ্ছে।’ নতুন চিন্তার বিষয়ে পরে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।

এর আগে জুলাই বিপ্লবে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালও পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার রায় দেন।

ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের পর শেখ হাসিনা ও কামালকে ফেরত চেয়ে ভারত সরকারের কাছে কূটনৈতিক চিঠি দেয় বাংলাদেশ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখার দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের সূত্র ধরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালকে ফেরত চেয়ে ঢাকার তরফ থেকে দিল্লিকে চিঠি দেওয়ার পর বিচলিত হয়ে পড়েন তিনি। ইতোমধ্যেই তিনি তার এক বছরের পুরোনো ঠিকানা পরিবর্তন করে সে দেশেরই অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।