Image description
আজ ৬ ডিসেম্বর, স্বৈরাচার পতন দিবস। গণ-আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের এই দিনে তৎকালীন স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ পদত্যাগ করেন। এই দিনে তিনি অস্থায়ী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। দিনটি স্মরণ করে বার্তা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দিনের প্রথম প্রহরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গণতন্ত্র-বিরোধী পরাজিত শক্তির যাতে আর পুনরুত্থান না ঘটে, সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই।’
 
৬ ডিসেম্বরকে ‘অবিস্মরণীয় একটি দিন’ উল্লেখ করে তারেক রহমান লিখেছেন, ‘১৯৯০ সালের এ দিনে রক্তাক্ত পিচ্ছিল পথে অবসান হয়েছিল স্বৈরশাসনের। এরশাদ ১২৮২ সালের ২৪ মার্চ পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙে অস্ত্রের মুখে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র হত্যা করে জারি করেছিল অসাংবিধানিক শাসন।’
 
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের সমালোচনা করে তারেক রহমান আরও বলেন, ‘যে সাংবিধানিক রাজনীতি ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা, যার সূচনা করেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। একনায়ক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ ৯ বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আপসহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। গড়ে তোলেন এক দুর্বার গণআন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ‘৯০ এর ৬ ডিসেম্বর এই দিনে ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল গণতন্ত্র।’
 
সেই অর্জিত গণতন্ত্রের চেতনায় আবারও ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক হিংস্র ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ছিল গণতন্ত্রের ভয়ংকর শত্রু। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসানের পর আবারও গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ পুনরুজ্জীবন এবং রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের নিরলস সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।’
 
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুমসহ নানামাত্রিক নিপীড়ন চালানো হয়েছে অভিযোগ করে তারেক রহমান বলেন, ‘অবিরাম নির্যাতনের কষাঘাতে অসুস্থ দেশনেত্রীর জীবন এখন চরম সংকটে। আল্লাহ’র কাছে তাঁর আশু সুস্থতা কামনা করছি। এছাড়াও দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছিল। সারা দেশকে অবরুদ্ধ করা হয়েছিল।’
 
তিনি ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত রক্তস্নাত স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। একইসঙ্গে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, গণতন্ত্রের হেফাজতকারী দেশবাসীকেও শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তারেক রহমান।