দেশে নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো ধরনের সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে মিলব্যারাক জিরো পয়েন্টে নবনির্মিত ফোয়ারার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশে কোনো কার্যকর সংস্কার প্রক্রিয়া পরিচালনা করা যায় না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া হতে পারে, তবে নির্বাচনকে থামিয়ে রাখা যায় না। তাঁর মতে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, আর সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। গত ১৭ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভক্ত করা হয়েছে। ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ’ হিসেবে জাতিকে ভাগ করে শোষণের রাজনীতি চালানো হয়েছে। এই বিভাজনের বিরুদ্ধে জনগণ এখন প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক মাসে বহু ছাত্র-জনতা জীবন উৎসর্গ করেছেন, এবং এই আত্মত্যাগ যেন বিফলে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইশরাক হোসেন বলেন, নির্বাচন পেছানোর নানা প্রচেষ্টা চলছে, তবে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ থাকলে জনগণ তাদের সঙ্গেই থাকবে। প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন করার দাবির সমালোচনা করে তিনি জানান, এই পদ্ধতি বাস্তবসম্মত নয়, কারণ এতে স্থানীয় জনগণ নিজেদের এলাকার প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ হারাবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অতীতের গুম, হত্যা ও নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ইলিয়াস আলীসহ সব নিখোঁজ ও নিহত ব্যক্তির বিচার তারা চান, তবে সেটি অবশ্যই নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়ায় হতে হবে, প্রতিহিংসার ভিত্তিতে নয়।
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে ইশরাক জানান, তিনি গুরুতর অবস্থায় সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তার দ্রুত সুস্থতার জন্য তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তার অটল নেতৃত্বই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতনকে সম্ভব করেছে।
এলাকাবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, তাদের সন্তান হিসেবে তিনি আসন্ন নির্বাচনে একটি সুযোগ চান। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে পরবর্তী নির্বাচনে জনগণই তার বিচার করবে। জনগণের আস্থা ও সমর্থনকেই তিনি নিজের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।