Image description

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে লড়বেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ নির্বাচন সামনে রেখে নিজের এলাকার মানুষের জন্য কবিতা আবৃতি করেছেন তিনি। আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে কবি আহসান হাবীবের ‘আমি কোন আগন্তুক নই’ কবিতা আবৃতি করে ভিডিও পোস্ট করেন তিনি।

পোস্টে ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, ‘গত রাতে আমার ঠাকুরগাঁও এর বাসার বারান্দায় আবৃত্তি করলাম।’ আহসান হাবীবের ‘আমি কোনও আগন্তুক নই’ কবিতাটি নিচে দেওয়া হলো-

আসমানের তারা সাক্ষী
সাক্ষী এই জমিনের ফুল,  এই 
নিশিরাইত বাঁশবাগান বিস্তর জোনাকি সাক্ষী
সাক্ষী এই জারুল জামরুল, সাক্ষী
পুবের পুকুর, তার ঝাঁকড়া ডুমুরের ডালে স্থিরদৃষ্টি
মাছরাঙা আমাকে চেনে
            আমি কোনো অভ্যাগত নই
খোদার কসম আমি কোনো ভিনদেশী পথিক নই
আমি কোনো আগন্তুক নই।
আমি কোনো আগন্তুক নই, আমি
ছিলাম এখানে, আমি স্বাপ্নিক নিয়মে
এখানেই থাকি আর
          এখানে থাকার নাম সর্বত্রই থাকা-
                        সারা দেশে। 

আমি কোনো আগন্তুক নই। এই
খররৌদ্র জলজ বাতাস মেঘ ক্লান্ত বিকেলের
পাখিরা আমাকে চেনে
           তারা জানে আমি কোনো অনাত্মীয় নই।
কার্তিকের ধানের মঞ্জরী সাক্ষী
           সাক্ষী তার চিরোল পাতার
টলমল শিশির, সাক্ষী জ্যোৎস্নার চাদরে ঢাকা         
              নিশিন্দার ছায়া
অকাল বার্ধক্যে নত কদম আলী
                তার ক্লান্ত চোখের আঁধার
আমি চিনি, আমি তার চিরচেনা স্বজন একজন। আমি
জমিলার মা’র
শূন্য খা খা রান্নাঘর শুকনো থালা সব চিনি
               সে আমাকে চেনে।

হাত রাখো বৈঠায় লাঙলে, দেখো
আমার হাতের স্পর্শ লেগে আছে কেমন গভীর। দেখো
মাটিতে আমার গন্ধ, আমার শরীরে
             লেগে আছে এই স্নিগ্ধ মাটির সুবাস।

আমাকে বিশ্বাস করো, আমি কোনো আগন্তুক নই।
দু’পাশে ধানের ক্ষেত
          সরু পথ
              সামনে ধু ধু নদীর কিনার
আমার অস্তিত্বে গাঁথা। আমি এই উধাও নদীর
               মুগ্ধ এক অবোধ বালক।

 

ভিডিওতে মফিজ উদ্দিন কাজল মন্তব্য করেছেন, গত রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়ির বারান্দায় আহসান হাবীবের ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার আবৃত্তি—নিশ্চয়ই ছিল এক অন্যরকম অনুভূতি। নিজের মাটি, নিজের আকাশ আর চারপাশের পরিচিত বাতাসে দাঁড়িয়ে এই কবিতার প্রতিটি লাইন যেন আরও গভীর হয়ে ওঠে।

তিনি বলেন, কবির ভাষায় ‘খর রৌদ্র, জলজ বাতাস, মেঘ’—সবই যে আপন, সেই সত্যটা বারান্দার নীরবতায় আরও জীবন্ত মনে হয়। সত্যিই, এমন আবৃত্তি মানুষকে নিজের শিকড়ের সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়।

জিএম ফারুক বাবলু কমেন্ট করেছেন, ‘আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি কবিতা। যখনই এই কবিতাটি পড়ি বা ৯ম-১০ম শ্রেণিতে পড়াই, আমি খুব আবেগ আপ্লূত হয়ে যাই।’  ভিডিওটিতে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মন্তব্য এবং ১ হাজার ১০০ জন শেয়ার করেছেন। রিঅ্যাকশন দিয়েছেন প্রায় ২৪ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী।