Image description

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘ (ভোটের আগে) লটারির মাধ্যমে ডিসি-এসপি বদলি করা উচিত। আর প্রতি কেন্দ্রে পাঁচজন করে সেনা সদস্য মোতায়েন করা উচিত।’

 

বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাতটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সাথে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে জামায়াতের পক্ষে তিনি এ কথা বলেন।

 

সংলাপের উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হলে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা ও আচরণবিধি কঠোরভাবে মেনে চলা উচিত। আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এক। নির্বাচন কমিশন (ইসি) একা নয়, রাজনৈতিক দলগুলোও ওয়াদাবদ্ধ জাতিকে সুন্দর নির্বাচন দিতে।

 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব ছিলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। অপর দুজন হলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শিশির মনির।

 

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা একটি আইনের অধীনে গত ২০২৪ সালে দায়িত্ব নিয়েছি। তারপরও আপনাদের সাথে একবার আলোচনায় বসেছিলাম। নির্বাচনী আচরণবিধিতে অনেক সুপারিশ রাখা হয়েছে। আচরণবিধি প্রস্তুত বড় কাজ নয়, পরিপালনই বড় বিষয়। আমাদের প্রত্যাশা আপনরা রাজনৈতিক দলগুলো এই আচরণ বিধি পালনে সহযোগিতা করবেন।’

 

নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কমিশনের প্রত্যাশা, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনী আচরণবিধি পরিপালনে তাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি, যার প্রধান শর্ত আচরণবিধি মেনে চলা। দেশের মানুষ গত ১৫ বছরে ভোটকেন্দ্র ও ভোট বিমুখ হয়েছে। আপনারা জনগণকে ভোটারদেকে উদ্বুদ্ধ করবেন তারা যেন ভোট দিতে আসেন।’

 

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন আলাদা দিনে করা। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা এক দিনে করার ঘোষণা দিয়েছেন।’

 

তিনি বলেন, ‘ভোটার তালিকায় যে ছবি দেয়া হয় তা স্পষ্ট না। তাদেরকে চেনা যায় না। তাই আমাদের প্রস্তাব, এই ছবিগুলো স্পষ্ট করে দেয়া, তাহলে তাদেরকে চেনা যাবে।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্র পাঁচজন করে সেনা সদস্য মোতায়েন করা দরকার। এতে করে ভোটাররা কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে সাহস পাবে। আর সন্ত্রাসীরা নির্বাচন বানচাল ও ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনে সাহস পাবে না।’

 

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু আয়োজনে ইসির মুখের কথার বাস্তবায়ন হলে, ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে নাসির উদ্দিন কমিশনের নাম।’

 

স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

 

শিশির মনির বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি প্রতিপালনে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। এখানে অনেক শাস্তির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই সব শাস্তির বিধান কে বাস্তবায়ন করবে, তা আচরণ বিধিতে উল্লেখ করা নেই।’

 

সংলাপে চার কমিশনার, ইসির সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আর আমন্ত্রিত দলগুলোর মধ্যে এনডিএম, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনপিসি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ইনশানিয়ার বিপ্লব, গণসংহতি পরিষদ, মাইনরিটি জনতা পার্টির প্রতিনিধিরাও বক্তব্য রাখেন।