গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে তিনি ট্রাক মার্কা নিয়ে আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
নুরুল হক নুর বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণ যে স্বপ্ন দেখেছে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে জাতীয় সরকার গঠন ছাড়া বিকল্প নেই। দেশে রাজনৈতিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে জাতীয় ঐক্য ও সমঝোতা প্রয়োজন।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করে নুর বলেন, গত এক বছরে আমরা যে পরিস্থিতি দেখেছি, তা উদ্বেগজনক। দেশে আবারও ফ্যাসিবাদের আলামত দেখা দিচ্ছে। অতীতে যাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন, গুম-খুন ও দখলবাজির অভিযোগ ছিল—তারা আবারও বিভিন্ন এলাকায় দখলবাজি, চাঁদাবাজি আর জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে সামনে চলে এসেছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যত বড় নেতা হোক না কেন, দখলবাজি-জুলুম করলে জনগণের কাছে কেউ পাত্তা পাবে না। জনগণকে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার পরদিন নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনসভায় বক্তব্য দিতে এসে নুর বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষা গ্রহণ করবে—এটাই প্রত্যাশা।
নুর আরও বলেন, দেশকে নতুন সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে না। আঞ্চলিক পর্যায়ের কিছু নেতার অতি উৎসাহী আচরণের কারণে জাতীয় ঐক্য বিঘ্নিত হচ্ছে—যা দেশের জন্য অশনিসংকেত।
সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক সমঝোতায় আসন ভাগাভাগি করে নির্বাচন হলে দেশে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
পটুয়াখালী-৩ আসনকে জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা উল্লেখ করে নুর বলেন, বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমার যে পরিচিতি রয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে এ জনপদকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়াই হবে আমার মূল লক্ষ্য। চরাঞ্চলের দীর্ঘদিনের অবহেলায় যোগাযোগব্যবস্থা ও জীবনমান পিছিয়ে পড়েছে। নির্বাচিত হতে পারলে জামায়াত, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলনসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে বসে সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দশমিনা উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক লিয়ার হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মিলন মিয়া।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মিজান হাওলাদার,পটুয়াখালী জেলা আহ্বায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটু,যুগ্ম আহ্বায়ক আবু কালাম পঞ্চায়েত,জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।