Image description

ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, হাসিনাকে আমরা একটি লাল কার্ড দেখিয়েছি। তবে নতুন করে কেউ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে ছাত্র সমাজ তাদেরকে ডাবল লালকার্ড দেখাবে।

তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নিজেদের ফ্যাসিস্ট হিসেবে প্রমাণ করেছে। তারা নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে জুলাই সনদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দেড় বছরেও জুলাই গণহত্যার একটিরও বিচার না করে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ ভাস্কর্যের সামনে মহানগর শিবিরের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নাশকতার প্রতিবাদে সকাল ৭টায় ঢাকা কলেজের সামনে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগাহ, ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েম, জিএস এস এম ফরহাদ, শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সেক্রেটারি  আবু তাহের, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি জাহিদুর রহমান।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, পিলখানা ও শাপলাসহ বিগত সরকারের আমলের সব গণহত্যার বিচার করতে হবে।বাংলাদেশে নতুন সূর্যের উদয় হয়েছে। জুলাই শহিদদের কথা আমরা ভুলিনি। আওয়ামী লীগ মানুষ নয়, পশু।

বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, খুনিদের মামলা প্রত্যাহারের অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে?

তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে সারা দেশে অরাজকতা করেছে আওয়ামী লীগ। ময়মনসিংহসহ বাসে আগুন দিয়ে একজনকে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকায় বাসে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে।

শিবির সভাপতি বলেন, ছাত্রসংসদ নির্বাচন পরাজিত শক্তি নানা ষড়যন্ত্র করতে চায়। আমরা মাদকমুক্ত দেশ গড়তে চাই। তাই মাদকের পক্ষাবলম্বনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে লেভে প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রয়োজনে সবাই আবারও আবু সাঈদ ও মুগ্ধ হবো। তারপরও বাংলাদেশকে পথ হারাতে দিবো না।

শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, আওয়ামী লীগের ৪০ হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হলেও ৩৫ হাজারকে জামিন দেওয়া হয়েছে। জেলখানায় তাদের জামাই আদর করা হচ্ছে। বিএনপি আওয়ামী লীগের মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের আশঙ্কা তারা ক্ষমতায় গেলে জুলাই সনদ কার্যকর করবে কিনা? গণভোটের রায়কে মানবে কী না? 

যে টাকা লুটপাট ও পাচার হয়েছে, তা দিয়ে গণভোট করা সম্ভব। ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে জনগণ আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে।” তিনি আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করতে সবাইকে আহ্বান জানান। তিনি গণভোট নিয়ে তারেক রহমানের বক্তব্যের সমালোচনা করেন।

ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, “খুনি হাসিনা ও তার দোসররা দেশকে নরকে পরিণত করেছিল। জুলাই আন্দোলনে ২ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে ও ৪০ হাজার  মানুষকে আহত করেছে। তারা আবারও কীভাবে আস্ফালন দেখায়, তার জবাব দিতে হবে সরকারকে। হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি দিতে হবে। আওয়ামী লীগকে যেখানেই পাওয়া যাবে,প্রতিহত করতে হবে।”

তিনি বলেন, বিএনপি মেজর ইস্যুতে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। আপনারা সাবধান হয়ে যান। কারণ ছাত্র জনতা এখনও মাঠে আছে।

তিনি অভিযোগ করেন, কিছু মিডিয়া এখনও প্রোপাগাণ্ডা করছে। সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলতে তিনি গণমাধ্যমকে আহ্বান জানান।

গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি জানান ডাকসু ভিপি।

ডাকসুর জি এস এস এম ফরহাদ বলেন, যে দলের নেত্রী পালিয়ে যায়, তারা কীভাবে হুংকার দেয় তা আমরা দেখতে চাই। আমরা শুধু পুলিশের ওপর নির্ভর থাকতে চাই না, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা খুনিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে।