Image description

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দীর্ঘ প্রতীক্ষিত চাকসু নির্বাচনে এজিএস পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রদল–সমর্থিত প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক। ২৬টি পদের মধ্যে এটিই একমাত্র পদ যেখানে ছাত্রদল–সমর্থিত কোনো প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তবে এই একটি পদ জেতাকেই ছাত্ররাজনীতিতে ‘প্রতীকী বিজয়’ বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ, প্রায় এক দশকের বেশি সময় নিষ্ক্রিয় থাকার পর ছাত্রদলের পুনরুত্থানের ইঙ্গিত মিলছে এই ফলাফলে।

ভিপি ও জিএসসহ ২৪টি পদে জয় পেয়েছে শিবির–সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। কেবল দুটি পদে এজিএস এবং ক্রীড়া সম্পাদক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল ঘনিষ্ঠ। শেষ পর্যন্ত এজিএস পদে জয় পান ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র আইয়ুবুর রহমান তৌফিক। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন শিবির সমর্থিত সম্প্রীতির সাজ্জাদ হোসেন মুন্না।

চবি ছাত্রদল ২০১৩ সালের পর থেকে প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। একের পর এক সংঘর্ষ, মামলা, এবং সংগঠনের ওপর প্রশাসনিক নজরদারি ছাত্রদলকে কার্যত ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে দেয়। ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য এবং পরে শিবিরের ছায়া–সংগঠনের উত্থানেও তারা ছিলেন আড়ালে। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে কিছু প্রাক্তন ও বর্তমান নেতা ‘পুনর্গঠন কমিটি’ নামে সাংগঠনিক কাজ শুরু করেন। তারা ছোট ছোট সভা, অনলাইন প্রচারণা এবং গোপন বৈঠকের মাধ্যমে ধীরে ধীরে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে থাকেন। এই নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণই ছিল সেই পুনঃপ্রবেশের বাস্তব রূপ।

একটি পদ, কিন্তু অনেক সাহসের প্রতীক

এজিএস তৌফিক নির্বাচিত হওয়ার পর তার সমর্থকরা বলেন, আমরা জানতাম জেতা কঠিন। কিন্তু মাঠে দাঁড়ানোই ছিল চ্যালেঞ্জ। ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নাম উচ্চারণ করাটাই একসময় কঠিন ছিল। একটিতে এজিএস নির্বাচিত এটা শুধু চবির নয়, পুরো বাংলাদেশের সাহসের প্রতীক। কারণ ডাকসু ও জাকসুতে ছাত্রদল ভরাডুবি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি বিশ্লেষকরা জানান চবি রাজনীতিতে ছাত্রদলের একক বিজয় সংখ্যা দিয়ে মাপা যাবে না। এটা হচ্ছে প্রতীকী পুনরাগমন। দীর্ঘদিনের অবরুদ্ধ রাজনীতিতে এই একটি জয় দেখিয়েছে—ক্যাম্পাসে তাদের প্রভাব এখনো পুরোপুরি হারায়নি।

তারা আরও বলেন, এই ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে-চবি রাজনীতিতে আগামী বছরগুলোতে শিবির ও ছাত্রদলের দ্বৈরথ নতুন আকারে ফিরে আসবে।