Image description

মিনার রশীদ

এক রাজা টের পেলেন যে তাকে যে দুধ দেওয়া হচ্ছে, সেটি দিনে দিনে পাতলা হয়ে যাচ্ছে। তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বললেন—‘আমার মনে হচ্ছে, আমার দুধে পানি মেশানো হচ্ছে’।

এটুকু শুনেই খাদ্যমন্ত্রী চেয়ার থেকে লাফ দিয়ে উঠে গলা ফাটিয়ে বললেন—‘অভূতপূর্ব ষড়যন্ত্র! দেশের রাজাকে ভেজাল দুধ খাওয়ানো হচ্ছে? এখনই গোয়ালাকে রিমান্ডে পাঠাই! দুধ মনিটরিং অথরিটি বানাই!’

রাজা শান্তভাবে বললেন—‘না না, এত উত্তেজিত হয়ো না। শুধু চেষ্টা কর খাঁটি দুধটা যেন আসে।’

মন্ত্রী দ্রুত টিভি ক্যামেরা ডেকে আনলেন, সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে গর্জে উঠলেন—‘আমরা ভেজাল দুধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছি!’ গোয়ালাকে মঞ্চে দাঁড় করিয়ে ধমকালেনও বটে।

কিন্তু এক সপ্তাহ পর রাজা বললেন—‘না, দুধ এখনো পাতলা।’

এবার খাদ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন—‘চিন্তা নেই। দুধ মনিটরিং টাস্কফোর্স গঠন করেছি। সচিব এর চেয়ারম্যান।’

কিছুদিন পরেও দুধ পাতলা-ই রইল।

এবার অ্যাডিশনাল সচিব, জয়েন্ট সচিব, ডেপুটি সচিব—সবাই মিলে নতুন কমিটি গঠন করলেন। নাম দিলেন—‘জাতীয় খাঁটি দুধ নিশ্চয়তা পরিষদ’।

যুগের আলো স্বপ্রণোদিত হয়ে বড় বিজ্ঞাপন দিল : ‘রাজা মহাশয়কে খাঁটি দুধ দেব—এটাই আমাদের অঙ্গীকার।’ কিন্তু আশ্চর্য! দুধ আরো বেশি পাতলা হয়ে গেল। শেষমেশ রাজামশায় নিজে সরাসরি গোয়ালাকে ডাকলেন, ‘বলো, আমার দুধ কেন প্রতিদিন পাতলা হচ্ছে?’ গোয়ালা কাঁপতে কাঁপতে বলল—‘মহারাজ, শুরুতে নিজের একটু লাভের জন্য অল্প পানি মেশাতাম। কিন্তু মন্ত্রী সাহেব দায়িত্ব নিলেন, তার ভাগ দিতে হলো। তারপর সচিব এলেন, অ্যাডিশনাল এলেন, জয়েন্ট এলেন, ডেপুটি এলেন—প্রত্যেকের জন্য ভাগ রাখতে গিয়ে আমাকে বাধ্য হয়ে আরো বেশি পানি মেশাতে হয়েছে। এখন দুধ নয়, পুরো সাপ্লাই-চেইনটাই পানির ওপর দাঁড়িয়ে আছে মহারাজ!’

মাফিয়া রানির আমলেও আমাদের অর্থনীতি স্ফীত হচ্ছিল। সে সময় পৃথিবীর মধ্যে ধনী মানুষদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে আমরা হয়েছিলাম তৃতীয় এবং অতি ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে আমরা ছিলাম প্রথম। অর্থাৎ এটা ছিল একটা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি! সমাজের ১ শতাংশ মানুষের হাতে ছিল ৯৯ শতাংশ সম্পদ, আর বাদবাকি ৯৯ শতাংশ মানুষের হাতে ছিল ১ শতাংশ সম্পদ! মাফিয়া রানি তার শাসন সুসংহত করতে এই ১ শতাংশকে যা ইচ্ছে তাই করার লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছিল। সেই দস্যু রানির আমলে শুধু একটা কাজই অপরাধ বলে গণ্য হতোÑসেটা হলো তার সরকারের বিরোধিতা করা।

২০০৪/২০০৫ সালে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক দেখে দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ার ইমার্জিং টাইগার হিসেবে তুলে ধরা হয় বিভিন্ন বিশ্বমাধ্যমে । কারণ তৃতীয় বিশ্ব এবং মুসলিম বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে নির্বাচনের মাধ্যমে পরপর তিনবার সরকারের পরিবর্তন হয়েছে এবং পূর্ববর্তী সরকার নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সব সূচক ছিল ঊর্ধ্বগামী! কাজেই এটা নিশ্চিত বলা যায় যে, এক-এগারো নামক খাল কেটে এই কুমিরটিকে ক্ষমতায় না আনলে ইতোমধ্যেই আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছে যেতাম।

সেই ভয়ংকর কুমিরটি যে আমাদের সবকিছু সাবাড় করে গেছে, তাকে শেষ পর্যন্ত বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হয়েছে! তার রায় শুনে এদেশের ৯৯ শতাংশ মানুষ অন্তর থেকেই বলছেÑআলহামদুলিল্লাহ!

এখন এই রায় কার্যকর করার জন্য জাতিকে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে! ইন্ডিয়া যদি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর না করে, তবে ইন্ডিয়ার সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল করার হুমকি দিতে হবে। প্রয়োজনে সম্ভাব্য সব জিও-পলিটিক্যাল সুযোগগুলো ব্যবহার করতে হবে! কারণ ইন্ডিয়া যদি শেখ হাসিনাকে প্রটেকশন দেওয়া অব্যাহত রাখে, তবে ইন্ডিয়ার চির বৈরী পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক চুক্তির প্রয়োজনীয়তা আরো শক্তভাবে অনুভূত হবে! প্রয়োজনে সৌদি আরব ও পাকিস্তান যে ধরনের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে, চায়নাকে সামনে রেখে আমাদেরও এই দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশের সঙ্গে তা করতে হবে! প্রয়োজনে কংগ্রেস ও বিজেপির বাইরে ইন্ডিয়ার যে দলগুলো রয়েছে এবং ইন্ডিয়ার অভ্যন্তরে যে বিরাট মুসলিম কমিউনিটি রয়েছে, তাদের লিভারেজ ব্যবহার করে এই জঘন্য খুনিদের ফেরত এনে রায় কার্যকর করতে হবে! ইন্ডিয়া বর্তমানে গ্লোবাল পরিসরে যে অবস্থায় রয়েছে, তাতে ইন্টারনাল এবং এক্সটার্নাল এই চাপ সহ্য করা দিল্লির জন্য কঠিন হয়ে পড়বে!

ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালাম বলেছিলেন—‘স্বপ্ন সেটা নয়, যা তুমি ঘুমিয়ে দেখো; স্বপ্ন হলো সেটাই, যা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না।’

এই কথার গভীরতা বিশাল। স্বপ্ন আসলে শুধু কল্পনা নয়—এটা মানুষের অন্তরের আগুন, যা তাকে জাগিয়ে রাখে, অস্থির রাখে, সামনে এগোতে প্রেরণা দেয়। জীবনের প্রতিটি বড় পরিবর্তন, প্রতিটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন—এসবই জন্ম নেয় এমনই এক জেগে থাকা স্বপ্নের ভেতর থেকে।

এই সত্যটি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি জানতেন, একটি জাতিকে বদলাতে হলে আগে বদলাতে হয় তরুণদের মন, চিন্তা আর দৃষ্টিভঙ্গিকে। সে কারণেই তিনি নিজের স্বপ্ন, নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ও উন্নয়নমুখী ভাবনা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন কিছু স্বপ্নবাজ, মেধাবী, দেশগড়ার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তরুণদের মধ্যে।

আর সেই স্বপ্নবীজ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি বেছে নিয়েছিলেন নীল সাগরের বুকচিরে ছুটে চলা হিজবুল বাহার নামক জাহাজটিকে! এ নিয়ে আমি আগে আলোচনা করেছি এবং বিষয়টি আমাকে আজও গভীরভাবে আলোড়িত করে। কল্পনাবিলাসী মানুষের মতো তিনি শুধু স্বপ্নই ছড়াননি। দেখা গেল আগের দিন তিনি হিজবুল বাহারে করে সমুদ্রে গিয়েছেন। পরের দিনই তিনি হয়তো কোনো নদীর চরে কোদাল দিয়ে নিজ হাতে মাটি কাটছেন।

১৯৭১-এর পর আমরা যখন কৃতজ্ঞতামিশ্রিত চেতনার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম, তখন প্রতিবেশী তড়িঘড়ি করে ফারাক্কা বাঁধের কাজ শেষ করে ১৯৭৪ সালে একটু ঠেক দেওয়ার (পরীক্ষামূলক চালু করার) অনুমতি প্রার্থনা করে! আসলে তখনই মনে হয় স্বামী-স্ত্রীর এশকের সম্পর্কটি স্থাপিত হয়ে যায়।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে দুটি কাজ করেন। এক, ফারাক্কা ইস্যুটিকে বিশ্ব সংস্থায় তুলে ধরেন । দুই, তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে ইন্ডিয়ার ইতরামো এখানেই থেমে থাকবে না। সবগুলো কমন নদীতে বাঁধ দিয়ে সারা দেশটিকেই মরুভূমি বানিয়ে ফেলবে। তাই নদীগুলো খনন করে নাব্য উদ্ধার ও তা ধরে রাখার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন! সে জন্য কালবিলম্ব না করে ম্যানুয়াল লেবার দিয়ে নিজেই হাতে কোদাল তুলে নিয়েছিলেন! তাঁর সেই কোদালে হয়তো হাতেগোনা কয়েক মুঠ মাটিই উঠেছিল, কিন্তু ঠিক সেই মাটি থেকেই জাতির হৃদয়ে জেগেছে এক বিশাল প্রেরণার সমুদ্র, যা আজও মানুষকে উদ্দীপ্ত করে, সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়।

খুশির কথা, তাঁরই বায়োলজিক্যাল সন্তান তারেক রহমান জাতিকে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন! আবারও বলছি, এটা মোটেই অসম্ভব নহে! শুধু মেরিটাইম সেক্টর, শিপিং, নদী শাসন ও বন্দর থেকেই ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হতে পারে। এদেশের দুটি টাকার গাছ, গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি এবং বিদেশে শ্রমিক প্রেরণÑদুটোই রোপণ করে গেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এছাড়া আরো একটি পথের দিশা দেখিয়ে গেছেন, যার মাধ্যমে দেশের চেহারা আমূল পরিবর্তন করে ফেলা সম্ভব। সেটি হলোÑখাল কাটা এবং নদী খনন কর্মসূচি!

তাঁর সেই দেখানো পথেই নদীপথের নাব্য ফিরিয়ে আনতে পারলে চাষের জমি নষ্ট করে রাস্তা বানানোর প্রয়োজন পড়বে না। এটা সম্ভব হলে ঢাকা থেকে যেকোনো প্রধান শহরে যাত্রীবাহী ছোট ছোট জাহাজের কেবিনে চড়ে ঘুমিয়ে চলে যাবেন। দিনের বেলা কাজ শেষ করে পরের রাতে জাহাজের কেবিনে ঘুমিয়ে ফেরত আসবেন! তজ্জন্যে নদীপথের নাব্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন পড়বে অসংখ্য ড্রেজারের। সেই ড্রেজারগুলো আমাদের দেশেই বানানো হবে! এ রকম হাজার হাজার ড্রেজার এবং অসংখ্য যাত্রী ও কারগো জাহাজ এদেশে নির্মাণ করলে জাহাজ তৈরিতে এদেশে বিপ্লব ঘটে যেতে পারে!

নদীর বুক থেকে তোলা মাটি দিয়ে দুই পাড় উঁচু করে সেখানে পরিকল্পিত গৃহায়ন ও বনায়ন করলে সারা দেশে কয়েক কোটি মানুষ নদীর তীরে থাকার অবকাশ পাবে! এতে বন্যার প্রকোপ কমে যাবে এবং সেচব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটে কৃষি উৎপাদনও অনেক বেড়ে যাবে। মাছের উৎপাদনও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে!

একবার কল্পনায় ভাবুন, দেশের ছোট-বড় সব নদীতীরে পরিকল্পিত আবাসনব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তরুণ স্বপ্নবাজ আর্কিটেকচাররা স্বল্প টাকায় দেশীয় প্রযুক্তিতে চমৎকার বাড়ি তৈরি করেছেন। প্রতিটা বাড়ির সামনে ফুল ও ফলারির গাছ। একটু দূরে দূরেই ফুড কোর্ট। সেখানে মফস্বলের মহিলারাও স্বামী-সন্তান নিয়ে সপ্তাহের অর্ধেক খাবার ফুড কোর্টে বসেই খাচ্ছেন । কারণ প্রচুর পরিমাণে রেস্টুরেন্ট হওয়ায় ঘরে রান্না করা খাবার আর হোটেলের খাবারের মান আর দাম কাছাকাছি হয়ে এসে গেছে! এদেশের মেয়েরা যদি অর্ধেক সময় খাবার রান্না করা থেকে মুক্ত হতে পারতেন, তবে নারী সমাজের দুর্ভোগ অর্ধেক কমে যেত!

আমাদের উপকূল অঞ্চল বরাবরই অবহেলিত ও বসবাসের জন্য ভয়ংকর বলে গণ্য করা হয়! অথচ একটা সুসমন্বিত পরিকল্পনার আওতায় চট্টগ্রাম থেকে খুলনা বরাবর ১০০ মেরিন সিটি করার উদ্যোগ নিলে সবাই সেখানে থাকার জন্য উতলা হয়ে পড়বে। তজ্জন্যে প্রথমপর্যায়ে ১০টি মেরিন সিটির পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে। পরিবেশবিদরা যে আশঙ্কা করছেন যে আগামী ৫০ বছরের মধ্যেই আমাদের দেশের দক্ষিণাংশের অনেক এলাকা সমুদ্রের পানিতে ডুবে যাবে! এখন এই ৫০ বছর বসে বসে নিজের আঙুল কিংবা এনজিওদের লজেন্স না চুষে কিছু কাজ করা উচিত! এই কাজটির নাম রিক্লেমেশন অব ল্যান্ড। মানে সমুদ্রের উপকূল কিংবা নদীগুলোর মোহনা ড্রেজ করে সেই মাটি দিয়ে পরিকল্পিত বনায়ন এবং গৃহায়ন শুরু করলে বাংলাদেশের আয়তনও বাড়িয়ে ফেলা হবে! কয়েকজন স্বপ্নবাজ মানুষ এ ধরনের কিছু প্রজেক্ট নিয়ে সিরিয়াসলি চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন! এভাবে পুরো উপকূল বরাবর কোটি কোটি গাছ লাগিয়ে দিলে সেসব অঞ্চলে ঝড়ের তীব্রতা কমে যাবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য ফিরে আসবে! সমুদ্রের স্রোত কিংবা উপকূলীয় এলাকার বায়ুপ্রবাহকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ (গ্রিন এনার্জি) উৎপাদনের মাধ্যমে পুরো কোস্টাল বেল্টকে ব্লু ইকোনমির এক মহাযজ্ঞ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব!

আমাদের জন্য ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হওয়া অলীক কল্পনা নহে! রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক লুটপাট বন্ধ করতে পারলেই এই লক্ষ্য অর্জন সহজেই সম্ভব। এই সহজ কাজটিই আমাদের জন্য কঠিন করে ফেলেছে! দক্ষতা আমাদের সমস্যা নহে, শিক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের ঘাটতি নেই। আমাদের মূল ঘাটতি নৈতিকতায়!

আমাদের এক কলিগের বন্ধু! তিনি একটা ৬৬ কোটি টাকার ড্রেজিং বা নদী খননের কাজ পেয়েছিলেন মাফিয়া রানির জমানায়। ৬৬ কোটি টাকার কাজে তার লাভ হয়েছে ৬৪ কোটি টাকা! শুধু সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের ঘুস বাবদ দিয়েছেন ২ কোটি টাকা, এটাই তার একমাত্র বিনিয়োগ! এক ছটাক মাটিও কাটেননি বা ড্রেজ করেননি। ফলে ৬৪ কোটি টাকা নিজের পকেটে উঠেছে!

কাজেই যত পরিকল্পনাই করি না কেন, আমরা এখানে এসেই ধরা খাব! গত দুই দশকে জিডিপি বেড়েছে; বাড়েনি ন্যায্য বণ্টন। ব্যাংক লুট, প্রকল্প ফোলানো, অর্থপাচার, কমিশন সিন্ডিকেট—একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী অর্থনীতির ওপরে পুরো সময় চেপে বসেছিল।

পরবর্তী সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটি হবে এই সুযোগ-সন্ধানীদের পুনরুত্থান ঠেকানো! ইতিহাস বলে, দুর্নীতিবাজ ও দালাল চক্র কখনো বিলুপ্ত হয় না। তারা শুধু রঙ বদলায়।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া এই মানুষগুলোকে ভালোভাবে চিনতে পেরেছিলেন এবং তাদের নিজের কাছ থেকে দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন! তারেক রহমান যদি তার ৩১ দফায় উল্লিখিত ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ এবং তা নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে পারেনÑতবেই ইতিহাসে নিজের বাবার পাশে জায়গা করে নিতে পারবেন। সেটি অবশ্য তাঁকে লেখার শুরুতে উল্লিখিত গল্পটি মাথায় রেখেই করতে হবে!

লেখক: কলামিস্ট