Image description

আজ ২২ ডিসেম্বর বছরের ছোট দিন। গতকাল রবিবার রাত ছিল চলতি বছরের দীর্ঘতম রাত। ২১ ডিসেম্বর সূর্য মকরক্রান্তি রেখার ওপর অবস্থান করায় এবং উত্তর মেরু সূর্য থেকে কিছুটা দূরে হেলে থাকায় উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম রাত ও ক্ষুদ্রতম দিন হয়ে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থা দেখা যায়।

উত্তর গোলার্ধে রোববার সন্ধ্যা নেমেছে তুলনামূলক দ্রুত, আর রাত শেষ হতে লেগেছে বছরের সবচেয়ে বেশি সময়। সৌরজগতের নিয়ম অনুযায়ী পৃথিবী সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করে এবং এই পরিক্রমণের সময় পৃথিবী তার অক্ষের ওপর কিছুটা হেলে থাকে। এই হেলনের কারণে কখনো উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকে পড়ে, আবার কখনো দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি হেলে যায়।

 

২১ জুন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে। ফলে সূর্যের কিরণ দীর্ঘ সময় ধরে উত্তর গোলার্ধে পড়ে এবং ওই দিনটি হয় বছরের দীর্ঘতম দিন। এদিন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উত্তর গোলার্ধে সূর্যালোকের পরিমাণ বেশি থাকায় এ সময় সেখানে গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে, যা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘সামার সলসটিস’ বা উত্তরায়ণ নামে পরিচিত।

 

এরপর ধীরে ধীরে দিন ছোট হতে শুরু করে। ডিসেম্বর মাস থেকে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি হেলে যায় এবং উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে তুলনামূলক দূরে সরে যায়। ফলে উত্তর গোলার্ধে সূর্যের আলো কম পড়ে এবং শীতকাল শুরু হয়, অন্যদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল দেখা দেয়।

২১ ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরত্বে অবস্থান করে। এ কারণে সূর্যের আলো কম সময় পড়ে, দিন দ্রুত শেষ হয়ে যায় এবং রাত দীর্ঘ হয়। এ ঘটনাকে বলা হয় ‘উইন্টার সলসটিস’ বা সূর্যের দক্ষিণ অয়নান্ত। একই সময়ে দক্ষিণ গোলার্ধে ঘটে উল্টো ঘটনা—সেখানে দিন হয় বছরের সবচেয়ে বড় এবং রাত সবচেয়ে ছোট।

দীর্ঘতম রাত অথবা হ্রস্বতম দিনকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে-২১ জুন তারিখে উত্তর গোলার্ধে আমরা পাই দীর্ঘতম দিন আর হ্রস্বতম রজনী।

সূর্য এ সময় কর্কটক্রান্তি বৃত্তে অবস্থান করে। ক্রান্তি বৃত্তে সূর্যের এই প্রান্তিক অবস্থান বিন্দুকে বলা হয় উত্তর অয়নায়ন। দক্ষিণ গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থা।

এরপর থেকে দিন ছোট হতে থাকে আর রাত বড় হতে থাকে। অবশেষে ২৩ সেপ্টেম্বর সূর্য আবার অবস্থান নেয় বিষুব বৃত্তের বিন্দুতে, যেখানে ক্রান্তি বৃত্ত ও বিষুব বৃত্ত পরস্পরকে ছেদ করেছে। একে বলা হয় জলবিষুব বিন্দু।

এই দিন পুনরায় পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান হয়ে থাকে। আবার এর পর থেকেই উত্তর গোলার্ধে ক্রমশ রাত বড় হতে হতে সূর্য পৌঁছে যায় ক্রান্তি বৃত্তের দক্ষিণ অয়নায়ন বিন্দুতে।

আজকের পর থেকে উত্তর গোলার্ধে ধীরে ধীরে দিন বড় হতে শুরু করবে, আর রাত ছোট হতে থাকবে।

ঢাকাটাইমস