Image description
 

চট্টগ্রামে পুলিশের গাফিলতিতে তিনদিন বন্দী থাকার পর মুক্তি পেয়েছে সাত বছরের এক শিশু। সোমবার গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর আগে শুক্রবার নগরের ষোলশহর এলাকা থেকে একটি অপহরণ মামলায় মায়ের সঙ্গে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। 

শিশু আইন অনুযায়ী, নয় বছরের নিচের কোনো শিশুকে কোনো অবস্থাতেই গ্রেপ্তার কিংবা আটক রাখা যাবে না। এমনকি বয়স্কদের সঙ্গে মামলা নেওয়ারও সুযোগ নেই। মামলার বিষয়টি জানাজানির পর রোববার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত বিচারক মো. হাসানুল ইসলাম শিশুটিকে মুক্তির আদেশ দেন।

 
 

পুলিশ সূত্র জানায়, ১৩ এপ্রিল ঘটনার সূত্রপাত হয় । অসুস্থ বড় ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান মা আনোয়ারা বেগম। তার পাশ থেকে হারিয়ে যায় চার বছরের শিশু রামিম। বহু খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সাত মাস পর শুক্রবার পাঁচলাইশ থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলায় আসামি করা হয় সাত বছরের শিশু ও তার মাকে। অভিযোগ, হাসপাতালের বারান্দা থেকে ওই দুজন রামিমকে খেলার কথা বলে নিয়ে গেছে। অভিযোগের দিনই পাঁচলাইশ থানার এসআই এনামুল হক শিশুটি ও তার মাকে ষোলশহর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। 

শুক্রবার আদালতে পাঠানো হলেও শিশুটিকে এজলাসে হাজির করা হয়নি। অবকাশকালীন কার্যক্রম চলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে শিশুটিকে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে রোববার চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শিশুটির জামিন আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে শিশুটিকে মুক্তির আদেশ দেন।

 

গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ইমরান খান বলেন, ‘আদালতের আদেশ পাওয়ার পর শিশুটিকে একজন সমাজকর্মীর তত্ত্বাবধানে তার অভিভাবকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।’ 

শিশুটির বাবা বিদেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা পণ্যবাহী জাহাজে শ্রমিকের কাজ করেন। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘পুলিশ কোনো তদন্ত, সাক্ষ্য ও প্রমাণ ছাড়া আমার শিশু সন্তান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে। আবার গ্রেপ্তারও করেছে। আমার ছেলেকে ছেড়ে দিলেও তার মা এখনও কারাগারে। আমার সাড়ে তিন বছর বয়সী আরেকটি শিশু রয়েছে। সে এখন তার খালার কাছে রয়েছে। যারা বিনাকারণে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে গ্রেপ্তার করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি আইনী ব্যবস্থা নেব।’ 

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’