Image description
 

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রকাশ্যে ফখরুল ইসলাম মঞ্জু ওরফে বলি (২৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে-কুপিয়ে হত্যা করেছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। পুলিশ বলছে, নিহত বলি একাধিক মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে নাটক করতে পারেনি।

 
 

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের মান্দার বাড়ির দরজায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

 

নিহত বলি বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের খালাসী বাড়ির বদিউজ্জামানের ছেলে।

 

নিহতের বোন শাহনাজ আক্তার টুম্পা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোর ৬টার দিকে বলি তার বড় বোন শাহনাজ আক্তার টুম্পার অসুস্থ মেয়েকে দেখতে তাদের বাড়িতে যায়। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুনরায় নিজের বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মান্দার বাড়ির দরজায় পৌঁছলে, স্থানীয় মোতালে ও তার ছেলে মিজানের নেতৃত্বে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ১৫/২০জন কিশোর গ্যাং সদস্য তাকে সিএনজিতে কোপ দেয়। পরে সে সিএনজি থেকে পড়ে গেলে তারা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতের বোন টুম্পা দাবি করেন তার ভাই বলিকে সন্ত্রাসীরা এলোভাতারি ভিডিও ও কুপিয়ে গুরুতর যখন করার পর সে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ভাইকে জীবিত পায়। টুম্পার দাবি তার ভাই বলি তাকে বলছে, হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার জন্য। এ সময় টুম্পা তার ভাইকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলে তাকেও এলোপা তাড়ি পিটিয়ে জখম করে। নিহতের পরিবার ও স্বজনদের দাবি পূর্ব শক্রতার জেরে বলিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।

 

চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মোতালেব সাংবাদিকদের নিকট দাবি করেন, সোমবার সকালে তার ছেলে মিজানুর রহমান ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে চৌমুহনী বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়। যাত্রা পথে উপজেলার মনতাজ স্যারের বাড়ির সামনে পৌঁছলে বলি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আমার ছেলেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা থেকে নামিয়ে মারধর করে টাকা গুলো ছিনিয়ে নেয়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন সেখানে গিয়ে বলিকে গণপিটুনি দিলে সে মারা যায়। তাৎক্ষণিক বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং নিহত বলির আড্ডা খানায় হামলা চালায়।

 

এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ বারী দুপুর সোয়া দুইটার সময় আমার দেশকে বলেন, অস্ত্র, বিস্ফোরকসহ নিহত বলির বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দুটি ওয়ারেন্ট রয়েছে। এলাকায় তার বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জন-অসন্তোষে তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতের পরিবার মামলা দিলে তা নেওয়া হবে।

 

এ ঘটনায় নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন দুপুর আড়াইটার সময় আমার দেশকে জানান এই ঘটনা জানার পর আমাদের সার্কেল এসপি (বেগমগঞ্জ) ও থানা পুলিশকে ঘটস্থলে পাঠাই। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মরগে পাঠানো হয়েছে। যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।