নিবন্ধন আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার ওপরে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জিনাত আরা বলেছেন, মনে হয় পৃথিবীর আর কোনো দেশে জমি রেজিস্ট্রেশনে এত বেশি খরচ হয় না।
একই অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী বলেন, রেজিস্ট্রেশনের কাজ পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করা হলে হয়রানির মাত্রা কমবে।
শনিবার (২২ নভেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি জিনাত আরা।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে জমির অনেক রেজিস্ট্রেশন হয়, এ সময়ে জমির প্রকৃতি ও শ্রেণির পরিবর্তন হয়। বাস্তবে জমির শ্রেণি একরকম থাকলেও কাগজে অনেক সময় অন্যরকম দেখানো হয়। দলিলে জমির শ্রেণির প্রতারণা করে পরিবর্তন করার ফলে যারা কর ফাঁকি দেয়, তাদের আইনের আওতায় আনার বিধান নেই।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরও বলেন, আমাদের দেশে জমি রেজিস্ট্রেশনে অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্সসহ এত বেশি টাকা দিতে হয় যে আমার মনে হয়, পৃথিবীর আর কোনো দেশে জমি রেজিস্ট্রেশনে এত বেশি খরচ হয় না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. নাইম আহমেদ বলেন, এই সংশোধনীটার একটা ঐতিহাসিক দিক হবে ডিজিটালাইজেশন। অর্থাৎ আমরা বিধিমালা প্রণয়নের আগে আধুনিকায়নের মাধ্যমে আইনের একটা ভ্যালিডেশন নিয়ে নিচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা পানিশমেন্ট দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারবো না। আমাদের পদ্ধতিটাকে উন্নত করতে হবে। জমি রেজিস্ট্রেশনে আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় আমরা সাব-রেজিস্ট্রারদের শাস্তির আওতায় আনছি, এগুলাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছি। কিছুদিন পর আইনজীবীদেরও নিয়ে আসা হবে, আমি নিশ্চিত। রেজিস্ট্রেশনের কাজটি পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করা হলে হয়রানির মাত্রা কমবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আইন সচিব লিয়াকত আলী মোল্লা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক কাজী আবদুল হান্নান, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব রুহুল আমীন এবং এম এ আউয়াল, দ্যা ল’ মেন্টর লিমিটেডের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এহসান হক এবং এমডি অ্যাডভোকেট নাশিত রহমান, সলিসিটর মো. মঞ্জুরুল হোসেন, বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার খন্দকার জামিলুর রহমান, সাব রেজিস্ট্রার মো. শাহজাহান প্রমুখ।