সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় এক রিকশাচালককে চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে থানায় আটক রেখে নির্যাতন এবং ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মাইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
ভুক্তভোগী রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন (৩৮)। সলঙ্গা থানার দেওভোগ গ্রামের মৃত জিহাদ হোসেনের ছেলে। তিনি জানান, গত ১০ জুলাই রাতে এসআই মাইনুল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ধুবিল কাটারমহল গ্রামে একটি চুরির মামলায় তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। থানায় নিয়ে রাতভর হাজতে আটকে রাখা হয়। পরদিন সকালে দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে মারধর করা হয় এবং চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়।
আনোয়ার আরও জানান, স্বীকার না করায় তাকে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানায় জুলাই আন্দোলন-সংক্রান্ত হামলা ও অস্ত্র লুটের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। পরে ২০ হাজার টাকা দাবি করলেও ১৬ হাজার টাকা নিয়ে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ছেড়ে দেওয়ার আগে ‘পুলিশ কোনো নির্যাতন বা ঘুষ নেয়নি’—এমন স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ করেন এসআই মাইনুল। ভয়ে প্রায় সাড়ে চার মাস চুপ থাকার পর গত ১১ নভেম্বর আনোয়ার হোসেন সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ধরে নিয়ে মারধর করেছে। ১৬ হাজার টাকা না দিলে ছেড়ে দিত না। আমি ন্যায়বিচার চাই।’
অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই মাইনুল হোসেন বলেন, ‘একটি চুরির মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে আনোয়ার হোসেনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তার কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি, নির্যাতনও করা হয়নি।’
রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এসপি মহোদয় আমাকে এ অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।’
আমাদের সময়