Image description
বগুড়ায় অরক্ষিত * বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনের সতর্ক অবস্থান

পিরোজপুর ও সাতক্ষীরায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দিয়েছে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা। পটুয়াখালীতে আগুন দেওয়ার পর সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভসহ আশপাশের এলাকা। বগুড়ায় অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ। এ ছাড়া টাঙ্গাইল, গাইবান্ধা ও চুয়াডাঙ্গায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

পিরোজপুর : শুক্রবার গভীর রাতে জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকালে স্থানীয়রা স্মৃতিস্তম্ভের নিচের অংশে আগুন দেওয়ার চিহ্ন ও কালো দাগ দেখতে পান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। পিরোজপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বাতেন বলেন, ‘শহীদদের প্রতি অবমাননাকর এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ আবু নাসের বলেন, এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা পৌর সদরে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মো. শামিনুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগুন লাগার যে খবরটি ছড়িয়েছে, তা সঠিক নয়। এ ধরনের কোনো আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি, এটি উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য একটা গুজব। আমরা স্থাপনা চত্বরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালীতে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দেওয়ার ঘটনা যুগান্তরে প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন স্মৃতিস্তম্ভসহ আশপাশের এলাকা সিসিটিভির আওতায় এনেছে। পটুয়াখালী সদর থানার ওসি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বগুড়া : শহরের সাতমাথায় নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। এটি রক্ষায় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তরা বলছেন, স্মৃতিস্তম্ভটি রক্ষায় কোনো পাহারা নেই। কোনো সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি। তাই যে কোনো সময় সেখানে হামলা করা হতে পারে। বগুড়া জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী রাফিয়া সুলতানা রাফি বলেন, ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ রক্ষায় সেখানে সিসি ক্যামেরা ও প্রহরা নিয়োগ করা প্রয়োজন। বগুড়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. ফারজানা সনি বলেন, দেশের অন্য স্মৃতিস্তম্ভে বেষ্টনী না থাকলেও বগুড়ারটিতে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তিনি এ ব্যাপারে বগুড়ার জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বগুড়ার বিদায়ি জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বলেন, জুলাই স্মৃতিস্তম্ভটি শহরের জনবহুল সাতমাথায় অবস্থিত; এটি রক্ষায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রয়েছে।

টাঙ্গাইল : শহরের শামছুল হক তোরণের সামনে নির্মিত জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের সামনে সন্ধ্যার পর সার্বক্ষণিক দায়িত্বে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতেও নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ রক্ষায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে যে কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গাইবান্ধা : জেলা পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। গাইবান্ধার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ও জুলাই স্মৃতিস্তম্ভসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো রক্ষায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরিফ আল রাজিব বলেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে কেউ যাতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে সেজন্য পুলিশ সাদা পোশাকে ওইসব এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা : বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বড় বাজার এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক স্মৃতিস্তম্ভ এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।