Image description
উদ্বেগ পরিবহন বিশেষজ্ঞদের

ফিটনেস নেই, মেয়াদোত্তীর্ণ, রুট পারমিটবিহীন বাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। এ কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। সম্প্রতি বিআরটিএর অভিযান শুরু হতেই পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘটের হুমকি দেয়। সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮, ১০৫ ও ১১৭ ধারা সংশোধন, পরিবহনের আয়ুকাল বৃদ্ধি, আমদানি করা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি পাঁচ বছর থেকে মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ বছর করা, সহজ শর্ত ও স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়াসহ ১০টি বিষয়ে দাবি বাস্তবায়নের তাগিদ দেয় তারা। চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করে সরকার।

১০ আগস্ট পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দেওয়া আট দফা দাবি পর্যালোচনা সভা করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ আন্তমন্ত্রণালয়। ওই সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা নিজেদের স্বার্থে সব কাজ করতে পারে। পেশি শক্তি দিয়ে পরিবহন অচল করে দিতে পারে। এদের পেছনের কারিগর বিআরটিএ।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, পরিবহন ব্যবস্থা এতটাই বিশৃঙ্খল যে, আমরা নেতাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। ২০০৫ সাল থেকেই কোম্পানি ভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থা চালুর কথা থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি। হাতিরঝিল বাস, গুলশান চাকা বাস্তবায়ন হয়েছে। তাহলে অন্যান্য রুটে হচ্ছে না কেন? বিআরটিএর কারণে পরিবহন মালিকরা সড়কে দানব তৈরি করেছে। তিনি বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ পরিবহন অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব পরিবহনে দুর্ঘটনা বেশি হয়। রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও অনেক লক্কড়ঝক্কড় পরিবহন রয়েছে। এর জন্য বিআরটিএ দায়ী। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা তো লাভের জন্য অনৈতিক আবদার করবেই। এই আবদার পরিবহনে আরও নৈরাজ্য তৈরি করবে। ওই সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম বলেন, সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮, ১০৫ ও ১১৭ ধারার সংশোধনের পাশাপাশি অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড সংশোধন প্রয়োজন। তার এই বক্তব্য ধরে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, যত দ্রুত সম্ভব বিআরটিএ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধন প্রস্তাব মহাসড়ক বিভাগে পাঠাবে। সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে ধারাসমূ হ সংশোধনের খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হবে। যদিও সড়ক পরিবহন আইনের এসব ধারায় বেপরোয়া চালকদের কারণে নিহত ও আহত এবং আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে সাজার বিষয় রয়েছে। একই সঙ্গে জামিনের বিষয় রয়েছে।