
স্ক্যাইপি কেলেঙ্কারিতে জড়িত বিতর্কিত বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) নিজামুল হক নাসিম আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর কমিটিতে নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রেস কাউন্সিলে চেয়ারম্যান থাকাকালীন তিনি সাংবাদিক বিরোধী একাধিক উদ্যোগ ও বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন।
মঙ্গলবার আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৯ মে অনুষ্ঠিত আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর সাধারণ সভায় নতুন নির্বাহী পরিষদ গঠিত হয়েছে। সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ারপারসন হিসেবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফাতেমা রশীদ হাসান ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন ব্যারিস্টার নাজিয়া কবির। নির্বাচিত নির্বাহী পরিষদ সদস্যরা হলেন, বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) নিজামুল হক নাসিম, অ্যাডভোকেট তাহমিনা রহমান, ব্যারিস্টার হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রওশন জাহান পারভীন, মানবাধিকার কর্মী সানজিদা ইসলাম ও মাবরুক মোহাম্মদ।
বাংলাদেশের মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্কাইপি কেলেঙ্কারি ফাঁস করে দৈনিক আমার দেশ। তখন মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ছিলেন মোহাম্মদ নিজামুল হক নাসিম। ওই সময় নাসিম এবং ব্রাসেলসে অবস্থিত তার বন্ধু আহমেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যে স্কাইপ কথোপকথন বিচারের নামের অবিচারের নীলনকশা উঠে আসে। এতে পুরো ট্রাইবুন্যালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠে। নিজামুল হক ও জিয়াউদ্দিনের মধ্যে কথোপকথনের সময় নিজামুল হক সরকারকে উল্লেখ করে বলেন, গভর্নমেন্ট রায়ের জন্য পাগল হইয়া গেছে। সাঈদীরটা হলে ডিসেম্বরের মধ্যে রায় দেতে পারবো। গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া। তারা একটা রায় চায়। ‘গভর্নমেন্ট গেছে পাগল হইয়া। তারা একটা রায় চায়।’ এই শিরোনামে আমার দেশ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
নিজামুল হক স্কাইপিতে তার বন্ধুকে আরো বলেন, কীভাবে সরকারের একজন সদস্য এই সন্ধ্যায় আমার সাথে দেখা করতে এসেছিলেন। তিনি আমাকে এই রায় দ্রুত পাস করতে বলেছিলেন। আমি তাকে বলেছিলাম, 'আমি কীভাবে এটি করতে পারি?".. তিনি বলেছিলেন,' দ্রুত চেষ্টা করুন আপনি যেমনি পারেন। তার এই অবৈধ কর্মকান্ড নিয়ে দেশী ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হলে নাসিম ২০১২ সালের ১১ই ডিসেম্বর নিজামুল হক তার ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করে আইসিটি-১ এর চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ওই সময়ের দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালের প্রধান ফজলে কবিরকে ট্রাইব্যুনাল-১ এর নতুন চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়।