Image description
♦ ঢাকা ছাড়ছে কোটি মানুষ ♦ সরকারি-বেসরকারি ছুটি একই সঙ্গে শুরু ♦ ঈদের আগে ছুটি কম থাকায় জনস্রোত থাকবে সড়কে ♦ সড়কের পাশে পশুর হাট নিয়ে উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্টরা

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র পাঁচ দিন। এরই মধ্যে সড়ক, রেলপথ ও নৌপথে শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। আর সরকারি-বেসরকারি ছুটি শুরু হবে বৃহস্পতিবার থেকে। মূলত ওই দিনেই ঢাকা ছাড়বেন বেশির ভাগ চাকরিজীবী। এতেই চাপ পড়বে সড়কে। আর ঈদের আগে ছুটি কম থাকায় সড়ক ও পরিবহনে চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেট সড়কসহ ১৫৯ স্থানে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। এতেই যানজট ও ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে।

সড়কে খানাখন্দ ও অটোরিকশার দৌরাত্ম্য : কোরবানি ঈদ কেন্দ্র করে ঢাকার আশুলিয়ায় চলমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ, খানাখন্দ ও অটোরিকশার দৌরাত্ম্যে প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কে ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে। এর ওপর যোগ হয়েছে পশুবাহী ট্রাক ও ঘরমুখো মানুষের বাড়তি চাপ। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানির ঈদ বর্ষা মৌসুমে হওয়ায় আশুলিয়া থেকে বাইপাইল পর্যন্ত সড়কটিতে খানাখন্দ আর জলাবদ্ধতার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় পরিবহনগুলোকে। ফলে ঈদের দুই থেকে তিন দিন আগে একদিকে পশুবাহী ট্রাক ও অন্যদিকে শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত যাত্রীদের নিয়ে সাধারণ পরিবহনগুলোকে পড়তে হবে তীব্র যানজটে।

এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রশস্ত করার প্রকল্প চলছে। এ কারণে সড়কে বেশি খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়েছে। যার কারণে মূল সড়কের খুব কম অংশই যান চলাচলের উপযোগী রয়েছে। ঈদের মৌসুমে এমনিতেই বাসের চাপ বেশি। তার ওপর সড়কে ছোটখাটো যানবাহনের অভাব নেই। এর মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে গেছে। সব মিলিয়ে যানবাহনের গতি ধীর হতে পারে। এ ছাড়া সড়ক ও মহাসড়কে ১৫৯টি স্পট চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ। এসব পয়েন্টে বাড়তি নজরদারি নিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে মহাসড়কে অটোরিকশার দৌরাত্ম্যে যানজট ও দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। হানিফ এন্টারপ্রাইজের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন বলেন, ঈদের আগে সড়কের কিছু অংশে ব্যাপক যানজটের আশঙ্কা আছে। কল্যাণপুরে রাস্তার কাজ চলছে। এ কারণে গাবতলী থেকে কল্যাণপুরে গাড়ি আসতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। এ ছাড়া এবার ঈদের ছুটি বৃহস্পতিবার শুরু হলেও বুধবার বিকাল থেকে বেশি চাপ পড়বে। এমনিতেই যানজট হচ্ছে। আর ওই সময়ে আরও বেশি হবে। এদিকে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, ঈদুল আজহার সময় দেশের মহাসড়কের পাশে প্রায় ২১৭টি স্থানে অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট বসছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হাট বসে চট্টগ্রাম জেলায়। এসব হাটের কারণে সড়কে যানবাহনের গতি কমে যায় এবং সৃষ্টি হয় যানজট। ফলে ভোগান্তিতে পড়বে ঘরমুখো মানুষ।

এদিকে ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব খন্দকার মোজাম্মেল হক বলেন, সরকার আগামী ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ১০ দিনের ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছে। তবে ঈদের আগে ছুটি কম থাকায় ঢাকা থেকে একদিনে দেড় কোটি মানুষকে গ্রামের বাড়ি পাঠানো অসম্ভব। এতে ভয়াবহ যানজট, ভাড়া নৈরাজ্য ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। তাই ৩ ও ৪ তারিখ ছুটি ঘোষণার আহ্বান জানান তিনি। যদিও রমজানের ঈদে ছুটি বেশি থাকায় মানুষ ধাপে ধাপে বাড়ি যেতে পেরেছে। এজন্য যানজট ও ভোগান্তি হয়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঈদের পর এত দিন ছুটির প্রয়োজন নেই। মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে হলে ঈদের পরের ছুটি থেকে দুই দিন কেটে আগে নিয়ে আসা জরুরি। তাহলে মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে।