
চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা ও নওগাঁয় পৃথক ঘটনায় চারজন খুন হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে স্বামীর হাতে স্ত্রী, সাতক্ষীরায় মায়ের হাতে সন্তান, গাইবান্ধায় ছুরিকাঘাতে পত্রিকা বিক্রেতা এবং নওগাঁয় ছুরিকাঘাতে এক ব্যবসায়ী খুন হয়েছেন। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
স্ত্রীকে খুন করে স্বামী লাপাত্তা : চট্টগ্রামে স্ত্রীকে খুন করে লাপাত্তা হয়ে গেছেন স্বামী। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নগরের স্টিলমিল খালপাড় এলাকার বাসা থেকে স্ত্রী তানজিনা বেগমের (২৩) মরদেহ উদ্ধারের পর এমনটাই ধারণা করছে পুলিশ। মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পতেঙ্গা থানা সূত্র জানায়, নিহত নারীর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার নান্দাইল উপজেলায়। স্বামী ও ভাইকে নিয়ে ওই এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তানজিনা। স্বামী-স্ত্রী দুজনই গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। পারিবারিক কলহের জেরে তানজিনাকে খুন করে তার স্বামী পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা পুলিশের।
পতেঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই নারীর গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। নিহতের ভাই মামলা করেছেন।
কলারোয়ায় মেয়েকে জবাই করে হত্যা করেছে মা : সাতক্ষীরার কলারোয়ায় পাষ- মা তার দেড় বছর বয়সী শিশুকন্যাকে বঁটি দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে। কলারোয়া থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের বাটরা গ্রামে শিশুর নানার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর নাম খাদিজা খাতুন। সে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কুশোডাঙ্গা গ্রামের মো. তহিদুর রহমানের মেয়ে। ঘাতক মায়ের নাম তানিয়া খাতুন ওরফে আসমা (৩০)। আসমা বাটরা মিলপাড়া এলাকার আবদুল মাজেদের মেয়ে।
ওসি আসাদুজ্জামান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশু মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া নিজ সন্তানকে হত্যা করার অভিযোগে আসমাকে আটক করা হয়েছে।
দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে পত্রিকা বিক্রেতা নিহত : জেলা শহরের দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আনিস মিয়া (৩৭) নামে এক পত্রিকা বিক্রেতা মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে গাইবান্ধা জেলা স্টেডিয়াম সড়কের নেসকো-১ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আনিস মিয়ার বাড়ি সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কিশামত ফলিয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, আনিস প্রায় ২০ বছর ধরে জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পত্রিকা বিক্রি করেন। তিনি রাতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন আর দিনে পত্রিকা বিক্রি করতেন। প্রতিদিনের মতো আনিস দিনের বেলায় পত্রিকা বিক্রি শেষ করেন। রাতে অটোরিকশা নিয়ে বের হন। রাত দেড়টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত সাধারণ যাত্রী হিসেবে অটোরিকশা ভাড়া করে। রেলগেট মাত্র ৫০ গজ দূরে স্টেডিয়াম সড়ক হয়ে নেসকো-১ এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা আনিসকে আহত করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। ভোরে এক পথচারী আনিসকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখে বাড়িতে খবর দেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে প্রথমে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৯টার দিকে আনিস মারা যান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহীনুল হক তালুকদার। তিনি জানান, দুর্বৃত্তের আঘাতে নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।
নওগাঁয় ব্যবসায়ী খুন : নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় উজ্জ্বল হোসেন (৩৪) নামে এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের শিমুলতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত উজ্জ্বল ধামইরহাট উপজেলার বংশীবাটি গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের বড়থা বাজার থেকে নিজ বাড়ী বংশীবাটি যাওয়ার পথে শিমুলতলী এলাকায় উজ্জ্বলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পতœীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ধামইরহাট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রহিম জানান, রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আর নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সকালে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ব্যবসায়ী উজ্জ্বল নিহতের ঘটনায় শুক্রবার সকালে সন্দেহভাজন আরিফ হোসেন ও সাগর নামে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।