Image description

দূরপাল্লার কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের একটি পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ তদারকি করেছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। একইসঙ্গে দেশটির পারমাণবিক যুদ্ধক্ষমতা “সীমাহীন ও টেকসইভাবে” উন্নয়নের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানায়, যখন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কোরীয় উপদ্বীপের পশ্চিমে সমুদ্রের ওপর নির্ধারিত পথে উড়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে তখন কিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) উৎক্ষেপণটি অনুষ্ঠিত হয়।

এই পরীক্ষা এমন এক সময়ে করা হলো, যখন ২০২৬ সালের শুরুতে অনুষ্ঠেয় গুরুত্বপূর্ণ দলীয় কংগ্রেসের আগে দেশটির সামরিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরতে কিম একের পর এক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। ওই কংগ্রেসে আগামী পাঁচ বছরের জন্য উত্তর কোরিয়ার উন্নয়ন পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।

কিম বলেন, ‘আমাদের পারমাণবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপাদানগুলোর নির্ভরযোগ্যতা ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া নিয়মিত যাচাই করা একটি দায়িত্বশীল অনুশীলন। কারণ কোরিয়া বিভিন্ন নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি। কেসিএনএ আরও জানায়, পিয়ংইয়ং রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক যুদ্ধক্ষমতার সীমাহীন ও ধারাবাহিক উন্নয়নে সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে কিম পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

কেসিএনএ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সুনির্দিষ্ট এলাকা উল্লেখ না করলেও, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ সোমবার জানায়, দেশটির সামরিক বাহিনী রোববার সকালে পিয়ংইয়ংয়ের কাছে সুনান এলাকা থেকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শনাক্ত করেছে। তারা সতর্ক করেছে যে বছরের শেষ দিকে উত্তর কোরিয়া আরও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে।

এদিকে, কেসিএনএ বৃহস্পতিবার জানায়, নির্মাণাধীন ৮ হাজার ৭০০ টন ওজনের একটি পারমাণবিকচালিত কৌশলগত গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন পরিদর্শন করেছেন কিম এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন নির্মাণ পরিকল্পনাকে উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘এটি মোকাবিলা করা হবে।’

মার্চের পর এই প্রথম উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সাবমেরিনটির ছবি প্রকাশ করেছে; সে সময় ছবিগুলোতে মূলত জাহাজটির নিচের অংশই দেখা গিয়েছিল। বৃহস্পতিবারের ওই কর্মসূচিতে কিমের সঙ্গে তার কন্যাও ছিলেন, যাকে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে, এবং তিনি দূরপাল্লার ভূমি-থেকে-আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক নিক্ষেপও তদারকি করেন।

গত এক মাসে কিম একাধিক কারখানা ও হোটেলের উদ্বোধনসহ নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন, কারণ ২০২৬ সালের শুরুতে শাসক ওয়ার্কার্স পার্টি অব কোরিয়ার নবম কংগ্রেস আহ্বানের আগে দেশটি বর্তমান পাঁচ বছর মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে।

গত নভেম্বরেও উত্তর কোরিয়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এশিয়া সফরের এক সপ্তাহের একটু বেশি সময় পর চালানো হয় পরীক্ষাটি। সফরে ট্রাম্প কিমের সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, তবে পিয়ংইয়ং সে প্রস্তাবে সাড়া দেননি। সে সময়ই ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন নির্মাণ পরিকল্পনার অনুমোদন দেন।