Image description
 

ভারতের সঙ্গে চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চলমান উন্নতি ও স্থিতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সুপরিকল্পিতভাবে বেইজিংয়ের প্রতিরক্ষা নীতিকে বিকৃত করছে বলে অভিযোগ তুলেছে চীন। 

২৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) বেইজিংয়ে আয়োজিত এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এই অভিযোগ উত্থাপন করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে, সীমান্ত সমস্যাটি একান্তই চীন ও ভারতের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এতে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ বা অযাচিত মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই। লিন জিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, কোনো তৃতীয় দেশ এই স্পর্শকাতর সমস্যা নিয়ে নিজেদের মতো করে রায় বা মূল্যায়ন দিলে চীন তাতে তীব্র আপত্তি জানাবে।

 

সম্প্রতি পেন্টাগনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে লিন জিয়ানকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি চীনের অবস্থান পরিষ্কার করেন। পেন্টাগনের ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে, চীন সম্ভবত ভারতের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা হ্রাসের বিষয়টিকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে চাইছে।

পেন্টাগনের মতে, বেইজিংয়ের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলায় বাধা দেওয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ওয়াশিংটনের প্রভাব কমিয়ে আনা। পেন্টাগনের এমন পর্যবেক্ষণকে ভিত্তিহীন ও উসকানিমূলক হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

 

মুখপাত্র লিন জিয়ান জোর দিয়ে বলেন যে, চীন ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও মিত্রতাকে কেবল সাময়িক কোনো স্বার্থের জায়গা থেকে নয়, বরং একটি সুদূরপ্রসারী কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদী পরিপ্রেক্ষিত থেকে মূল্যায়ন করে। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি জানান, বেইজিং ও নয়াদিল্লির মধ্যকার সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার যে চেষ্টা ওয়াশিংটন চালাচ্ছে, তা মূলত আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখার একটি অপপ্রয়াস মাত্র।

 

বিরোধপূর্ণ সীমান্ত এলাকা নিয়ে গত কয়েক বছরে ভারত ও চীনের মধ্যে যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল, তা সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। দুই দেশই সীমান্তে শান্তি ফেরাতে এবং বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। 

এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ পাওয়ায় চীন বিষয়টিকে তাদের সার্বভৌম অধিকার ও স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতির ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। 

বেইজিং মনে করে, ভারত ও চীন নিজেরাই তাদের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানে সক্ষম এবং সেখানে তৃতীয় কোনো পক্ষের উসকানি সম্পর্কের উন্নয়নকে ব্যাহত করতে পারে। সূত্র: রয়টার্স