বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে নির্বাসন অনেক সময় শেষ অধ্যায় নয়, বরং কখনো কখনো তা হয়ে ওঠে নতুন উত্থানের প্রস্তুতি মঞ্চ। বিশ শতকের বিপ্লব, উপনিবেশ-উত্তর রাষ্ট্র গঠন ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনের পথে যেমন বহু নেতা বিদেশের মাটিতে দীর্ঘ বছর কাটিয়ে দেশে ফিরে রাজনৈতিক পরিসর বদলে দিয়েছেন, তেমনি আধুনিক সময়েও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, স্বৈরতান্ত্রিক চাপ ও নির্বাসন-পরবর্তী প্রত্যাবর্তনের ঘটনাগুলো বিভিন্ন দেশে রাজনীতির ক্ষমতার সমীকরণ বদলে দিয়েছে। এ ধারার সবচেয়ে আলোচিত কয়েকটি নাম নির্বাসনকে পরিণত করেছিলেন রাজনৈতিক শক্তির নতুন উৎসে। রুশ বিপ্লবের নেতা ভ্লাদিমির লেনিন থেকে শুরু করে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি, আর্জেন্টিনার হুয়ান পেরোন কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার নওয়াজ শরিফ—নির্বাসন থেকে ফিরে তারা কেউ রাজনীতিতে, কেউ বিপ্লব ও রাষ্ট্র গঠনে কেন্দ্রীয় শক্তিতে উঠে এসেছেন। এ ধারার নেতাদের জীবনে নির্বাসন তাই কোনো সমাপ্তি নয়; বরং তা হয়ে উঠেছিল ফিরে এসে রাজনীতির কেন্দ্রস্থলে নতুন করে শক্তি সঞ্চার, প্রভাব বিস্তারের প্রস্তুতিপর্ব।
রুশ বিপ্লবের স্থপতি ভ্লাদিমির লেনিন এ ধারার প্রথম দিকের ঐতিহাসিক প্রতীক। জার শাসনের চোখে বিপজ্জনক ‘বিপ্লবী কর্মী’ হিসেবে তাকে সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত করা হয়েছিল। ১৮৯৭ সালে তাকে গ্রেফতার করে তিন বছরের জন্য সাইবেরিয়ায় পাঠানো হয়। ১৯০০ সালে ওই নির্বাসন শেষ হয়। এরপর তিনি ১৯০০-১৯১৭ পর্যন্ত মূলত নির্বাসনে ছিলেন। মিউনিখ, লন্ডন, জেনেভা ও জুরিখে বসে লেখালেখি, পত্রিকা সম্পাদনা ও সংগঠনের মাধ্যমে বিপ্লবী রাজনীতির তাত্ত্বিক ভিত্তি গড়ে তোলেন। ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর তিনি ১৬ এপ্রিল ১৯১৭ (রাশিয়ান ক্যালেন্ডারে ৩ এপ্রিল) জুরিখ থেকে ‘সিল্ড ট্রেন’-এ জার্মানির মধ্য দিয়ে পেত্রোগ্রাদে ফিরে আসেন। কয়েক মাসের মধ্যেই অক্টোবর বিপ্লবে বলশেভিকরা ক্ষমতা দখল করে। লেনিন নতুন সোভিয়েত সরকারের প্রধান হন।
আরেক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে দাঁড়ানো আরেক প্রত্যাবর্তনের নাম আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি। ৪ নভেম্বর ১৯৬৪ তাকে গোপনে তেহরান থেকে তুলে নিয়ে প্রথমে আঙ্কারা, পরে বুরসায় পাঠানো হয়। এখানেই শুরু তার আনুষ্ঠানিক নির্বাসন। প্রায় ১১ মাস তুরস্কে থাকার পর ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি চলে যান ইরাকের নাজাফে, যেখানে টানা ১৩ বছর ধরে ফিকহের ক্লাস, রাজনৈতিক ঘোষণা ও ‘ভেলায়াতে ফকিহ’ ধারণার ওপর বক্তৃতার মাধ্যমে ইরানি রাজনীতিকে দূর থেকেও প্রভাবিত করতে থাকেন। ১৯৭৮ সালে সাদ্দাম হোসেনের চাপে নাজাফ ছাড়তে বাধ্য হলে তিনি আশ্রয় নেন ফ্রান্সের নিউফল-লে-শাতোতে। সেখান থেকে ক্যাসেট বার্তা ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে ইরানি আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠেন। শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি ১৬ জানুয়ারি ১৯৭৯ দেশ থেকে পালিয়ে গেলে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ খোমেনি প্যারিস থেকে বিমানে তেহরানে ফিরে আসেন। প্রায় ১৫ বছরের নির্বাসনের পর তাকে স্বাগত জানায় লাখো-কোটি মানুষের জনসমুদ্র। পরবর্তী সংবিধানে সৃষ্ট নতুন পদ ‘সর্বোচ্চ নেতা’ হিসেবে খোমেনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব লাভ করেন।
ল্যাটিন আমেরিকায় নির্বাসন-পরবর্তী রাজনীতির নাটকীয় প্রত্যাবর্তনের সবচেয়ে আলোচিত উদাহরণ আজেন্টিনার হুয়ান পেরোন। ১৯৫৫ সালের সেপ্টেম্বরে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। প্রথমে তিনি প্যারাগুয়ে, পরে পানামা ও নিকারাগুয়ায় আশ্রয় নেন। শেষ পর্যন্ত স্পেনের মাদ্রিদ হয়ে ওঠে তার দীর্ঘ নির্বাসন জীবনের কেন্দ্র। প্রায় ১৮ বছর (১৯৫৫-১৯৭৩) তিনি নির্বাসনে ছিলেন। ১৯৭২ সালের নভেম্বরে তিনি স্বল্পসময় দেশে ফিরলেও সামরিক শাসনের উত্তেজনায় আবার স্পেনে ফিরে যান। অবশেষে ২০ জুন ১৯৭৩ তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বুয়েন্স আয়ার্সে প্রত্যাবর্তন করেন। তার ফেরা ঘিরে জনতার ঢল এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা দেশকে এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড় করায়। সে বছরই নির্বাচনে পেরোন বিপুল সমর্থনে জয়ী হন এবং অক্টোবর ১৯৭৩ সালে তৃতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন।
দক্ষিণ এশিয়ায় নওয়াজ শরিফের গল্পও একই ধারার প্রতিধ্বনি। ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর জেনারেল পারভেজ মোশাররফের সামরিক অভ্যুত্থানের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহসহ একাধিক মামলায় দণ্ড দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে ২০০০ সালের ডিসেম্বরে নওয়াজ শরিফ ও তার পরিবারকে সৌদি আরবের জেদ্দায় পাঠানো হয়। যেখানে তিনি প্রায় সাত বছর (২০০০-২০০৭) রাজনৈতিক নির্বাসনে কাটান। এ সময়ে তিনি পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতৃত্ব প্রবাস থেকেই বজায় রাখেন। পাকিস্তানে বিচার বিভাগীয় আন্দোলন, গণমাধ্যমের চাপ ও নির্বাচনী উত্তাপের প্রেক্ষাপটে ২৫ নভেম্বর ২০০৭ তিনি দেশে ফেরেন। প্রত্যাবর্তনের পর ধীরে ধীরে তার রাজনৈতিক প্রভাব পুনরুদ্ধার হয়। ২০০৮-২০১২ সময়কালে বিরোধী রাজনীতির কেন্দ্রীয় শক্তি হয়ে ওঠেন। অবশেষে ২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে তার দল জয়লাভ করে এবং তিনি তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে থাকসিন সিনাওয়াত্রার নির্বাসন ও প্রত্যাবর্তন এক অনন্য অধ্যায়। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসা এ বিলিয়নেয়ার নেতা ২০০৬ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর দুর্নীতির মামলার মুখে ২০০৮ সালে দেশ ছাড়েন তিনি। দীর্ঘ ১৫ বছর দুবাইতে নির্বাসিত থাকলেও থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে তার প্রভাব ছিল অটুট। তিনি নিজে দেশে না থেকেও তার ‘ফিউ থাই’ দলের মাধ্যমে প্রতিটি নির্বাচনে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখেন। তার অনুপস্থিতিতে প্রথমে তার বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিবারের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনেন। যদিও ইংলাককেও পরে নির্বাসনে যেতে হয়, কিন্তু থাকসিনের ছায়া নেতৃত্ব কমেনি। ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট দীর্ঘ ১৫ বছরের প্রবাস জীবনের ইতি ঘটিয়ে নাটকীয়ভাবে ব্যাংককে ফিরে আসেন থাকসিন। তার এ ফেরা থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন আনে। পরে তার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাও দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাসন থেকে ফিরে তিনি নিজের প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠা না করলেও পর্দার আড়ালে থেকে নিজের পরিবারের প্রভাব অক্ষুণ্ন রেখেছেন।
পূর্ব এশিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে কিম দে-জুং নির্বাসন থেকে ফিরে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার অনন্য উদাহরণ। সামরিক শাসক পার্ক চুং-হি এবং পরবর্তী জান্তা সরকারের বিরোধিতার কারণে তিনি কারাবাস, গৃহবন্দিত্ব ও হত্যাচেষ্টার মুখে পড়েন। ১৯৭৩ সালে টোকিও থেকে অপহরণের ঘটনায় আন্তর্জাতিক চাপের পর তিনি বেঁচে ফেরেন। ক্রমাগত দমন-পীড়নের প্রেক্ষাপটে ১৯৮২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। এ সময়টিকে গবেষকরা তার রাজনৈতিক জীবনের নির্বাসনপর্ব হিসেবে চিহ্নিত করেন। পরিস্থিতির পরিবর্তন ও জনমতের চাপের মধ্য দিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ তিনি দেশে ফেরেন। প্রত্যাবর্তনের পর কিম দে-জুং গণতন্ত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতায় পরিণত হন। ১৯৮৭ সালের গণ-আন্দোলন সামরিক শাসনের অবসান ঘটায় এবং বহুদলীয় নির্বাচনের পথ খুলে দেয়। দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই ও সমঝোতার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের নির্বাচনে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। এটি ছিল দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথম ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর’ যেখানে বিরোধী পক্ষ থেকে একজন প্রেসিডেন্ট হন। তার শাসনামলে গড়ে ওঠে ‘সানশাইন পলিসি’ এবং আন্তঃকোরীয় সংলাপের নতুন অধ্যায়। এ অবদানের জন্য তিনি ২০০০ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
মারিও সোয়ারেস ছিলেন পর্তুগালের স্বৈরতন্ত্র-পরবর্তী গণতান্ত্রিক রূপান্তরের অন্যতম প্রধান মুখ। তার গল্পও জড়িয়ে আছে নির্বাসন ও প্রত্যাবর্তনের নাটকীয় ধারাবাহিকতার সঙ্গে। আন্তোনিও সালাজার ও মার্সেলো কায়েতানোর অধীনে ‘এস্তাদু নোভু’ শাসনের বিরোধিতা করায় তাকে একাধিকবার গ্রেফতার ও নির্বাসনের শিকার হতে হয়। প্রথমে তাকে পর্তুগিজ উপনিবেশ সাও টোমে দ্বীপে প্রশাসনিক নির্বাসনে পাঠানো হয়। পরে ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়নের প্রেক্ষাপটে তিনি ১৯৭০ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে রাজনৈতিক নির্বাসনে চলে যান। সেখানে থেকে তিনি পর্তুগিজ সমাজতান্ত্রিক পার্টির আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সংগঠিত করেন। ২৫ এপ্রিল ১৯৭৪ কার্নেশন বিপ্লবের মাধ্যমে ‘এস্তাদু নোভু’ শাসনের পতন ঘটলে সোয়ারেস দেশে ফিরে আসেন। ১৯৭৬-১৯৭৮ ও ১৯৮৩-১৯৮৫—এ দুই দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৬-১৯৯৬ সময় তিনি পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। নির্বাসন-পরবর্তী রাজনৈতিক সাফল্যের বিশ্ব ইতিহাসে তাই মারিও সোয়ারেস একটি উজ্জ্বল ও স্বীকৃত উদাহরণ।
দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাকব জুমার ক্ষেত্রেও দেখা যায় আপারথেইডবিরোধী সংগ্রামের সময় দীর্ঘ প্রবাসভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনের অভিজ্ঞতা। ১৯৬৩ সালে আপারথেইড সরকারের হাতে গ্রেফতার হয়ে তিনি রবেন দ্বীপে ১০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করেন। মুক্তির পরও নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি ও রাজনৈতিক দমনের কারণে দেশে সংগঠনমূলক কর্মকাণ্ড চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তিনি ১৯৭৫ সালে সোয়াজিল্যান্ড হয়ে মোজাম্বিক ও জাম্বিয়ায় চলে যান। নির্বাসনে থেকেই তিনি আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) সামরিক শাখা ‘উমখন্তো ওয়ে সিজওয়ে’-এর সংগঠক হিসেবে ভূমিকা রাখেন। ১৯৯০ সালে এএনসির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে জুমা দেশে ফিরে আসেন। ১৯৯৯ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট, আর ২০০৯-২০১৮ পর্যন্ত তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
চীনের আধুনিক জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ইতিহাসে সান ইয়াত-সেনের দীর্ঘ প্রবাসপর্বও একই বৃত্তান্তের অংশ। ১৮৯৫ সালে ব্যর্থ গুয়াংজু অভ্যুত্থানের পর চিং রাজতান্ত্রিক শাসনের নজরদারি ও দমন-পীড়নের কারণে তিনি চীন ছাড়তে বাধ্য হন। পরবর্তী প্রায় দেড় দশক তিনি জাপান, হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ইউরোপে থেকে রাজনৈতিক সমর্থন ও অর্থায়নের নেটওয়ার্ক সংগঠিত করেন। ১৯১১ সালের সিনহাই বিপ্লব সফলতার দিকে এগোতে শুরু করলে তিনি দেশে ফেরেন। দেশে ফিরেই তিনি নানকিংয়ে স্থাপিত অস্থায়ী প্রজাতন্ত্র সরকারের নেতৃত্বে সামনে আসেন এবং ১৯১২ সালে চীনের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। যদিও পরবর্তী ক্ষমতা-সমঝোতার জটিলতায় তিনি সরে দাঁড়ান, কিন্তু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রধান প্রতীক ও মতাদর্শিক নেতৃত্ব হিসেবে তার অবস্থান সুদৃঢ় হয়।
এসব উদাহরণ দেখায়, ভিন্ন সময় ও প্রেক্ষাপটে নির্বাসনে পাঠানো বেশ কয়েকজন নেতা পরে নিজ দেশে আবারো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ফিরে এসেছেন। লেনিন, আয়াতুল্লাহ খোমেনি, হুয়ান পেরোন, নওয়াজ শরিফ, কিম দে-জুং, মারিও সোয়ারেস, জ্যাকব জুমা ও সান ইয়াত-সেন—নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আবার সক্রিয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। কেউ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছেন, কেউ নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করেছেন; আর কেউ স্বৈরশাসন-পরবর্তী সময়ে দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায়।