ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে অর্থায়নের অভিযোগ অস্বীকার করে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি ঘোষণা করেছেন যে, তাঁর দেশ ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হওয়া গাজা পুনর্গঠনে এককভাবে অর্থ দেবে না। তবে তিনি জানিয়েছেন যে, কাতার ফিলিস্তিনি জনগণকে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
স্থানীয় সময় রোববার (৭ ডিসেম্বর) দোহায় মার্কিন ভাষ্যকার টাকার কার্লসনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মধ্যস্থতা ও যুদ্ধবিরতির পথ তৈরি করতে ওয়াশিংটনের অনুরোধে হামাসের সঙ্গে কাতারের যোগাযোগ শুরু হয়েছিল এক দশকেরও বেশি আগে।
তিনি বলেন, হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সূচনা হয়েছিল ১০ বছরেরও বেশি সময় আগে। আর এটা শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে। দোহায় হামাসের অফিস শুধুমাত্র যুদ্ধবিরতির আলোচনা সহজ করা এবং গাজায় সহায়তা পাঠানোর কাজেই ব্যবহার হত।
হামাসকে অর্থ সহায়তা দেয়ার অভিযোগক ভিত্তিহীন দাবি করে কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ অভিযোগ করা হচ্ছে যে কাতার হামাসকে অর্থ দিচ্ছে, এর কথার কোনো ভিত্তি নেই। আমরা যেসব সহায়তা দিয়েছি সেগুলো শুধু গাজায় গেছে, জনগণের কাছে গেছে এবং একটি অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গেছে, যার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ অবগত।
তিনি আরও বলেন, ইসরাইল সরকার ও তাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো গাজায় সহায়তা পাঠানোর অনুমোদন ও সমন্বয় করেছে। বহু বছর ধরে কাতার সম্পর্কে ভুল তথ্য, মিথ্যা ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র-কাতার সম্পর্ক নষ্ট করার প্রচেষ্টা চলেছে বলে অভিযোগ করেন আল থানি।
ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তা দেয়া অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও, ইসরাইলি সামরিক অভিযানে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, সেগুলো পুনর্গঠনে কাতার অর্থ খরচ করবে না বলে জানান আল থানি।
তিনি বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনি জনগণকে সহায়তা অব্যাহত রাখবো। তাদের দুর্দশা লাঘবে যা করা দরকার তা করব। কিন্তু অন্যরা যা ধ্বংস করেছে, সেগুলো পুনর্নির্মাণ আমরা অর্থ ব্যয় করব না।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটাই আমাদের অবস্থান। তবে আমরা ফিলিস্তিনিদের অবহেলিত হতে দেব না, তারা যেন সহায়তাবঞ্চিত না হয়, সেটাও আমরা নিশ্চিত করব।
উল্লখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত প্রস্তাবে তুরস্ক, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা এই যুদ্ধে ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এসময় আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার মানুষ।
শীর্ষনিউজ